অ্যাপশহর

গয়না বন্ধক রেখে ১২০টি শৌচালয় নির্মাণ ছত্তিসগড়ের বাঙালি গৃহবধূর

গয়না বন্ধক দিয়ে ছত্তিশগড়ের সন্না পঞ্চায়েত এলাকায় ১২০টি শৌচালয় বানিয়েছেন বাঙালি এই গৃহবধূ৷

EiSamay.Com 11 Mar 2017, 8:44 am
অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় ■ রায়পুর
EiSamay.Com bengali house wife from chattisgarh deposited jewellery to make toilet
গয়না বন্ধক রেখে ১২০টি শৌচালয় নির্মাণ ছত্তিসগড়ের বাঙালি গৃহবধূর


বাড়িতে কারও বিয়ে বা ছেলেমেয়ের পড়াশোনা অথবা চিকিত্সার প্রয়োজনে গয়না বন্ধক অনেকেই রাখেন৷ তা বলে গ্রামে শৌচালয় নির্মানে গয়না বন্ধক রাখছেন ছা -পোষা পরিবারের এক বউ ? অবাস্তব শোনালেও ঠিক সেই কাজটাই করেছেন ছত্তিসগড়ের কাজল রায়৷ গয়না বন্ধক দিয়ে ছত্তিশগড়ের সন্না পঞ্চায়েত এলাকায় ১২০টি শৌচালয় বানিয়েছেন বাঙালি এই গৃহবধূ৷

শুধু তাই নয় শৌচালয় বানাতে নিজের টাকায় একটি ইঁটভাটাও বানিয়েছেন কাজল৷ বছর কুড়ি আগে অমল রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় কাজলের৷ বিয়ের পর ছত্তিসগড়ের যশপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সন্নায় সংসার বাঁধেন৷ শুরু থেকেই দেখে আসছেন গ্রামে নেই কোনও শৌচালয়৷ তখন থেকেই গ্রামে শৌচালয় বানাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত উপায় কী ? স্বামী অমল বিমা সংস্থার এজেন্ট৷ টাকা পাবেন কোথায় ?বছর সাতেক আগে বিজেপির টিকিটে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন কাজল৷ তখনও হাত গুটিয়েই বসেছিলেন৷ এরপর প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প চালু করলে শৌচালয় নির্মানের স্বপ্ন নতুন করে দেখতে শুরু করেন কাজল৷ কাজলকে উত্সাহ দেন যশপুর জেলার মহিলা কালেক্টর প্রিয়াঙ্কা শুক্লা৷ প্রিয়াঙ্কার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামের সকলের জন্য শৌচালয় বানাতে নেমে পড়েন কাজল৷

কিন্ত্ত সরকারি প্রকল্পের টাকা পেতে কালঘাম ছোটার জোগাড়৷ শেষে সরকারি সাহায্যের ভরসায় না -থেকে নিজের গয়না বন্ধক রাখার সিদ্ধান্ত নেন কাজল৷ টেলিফোনে ঝরঝরে বাংলায় কাজল বলেন ‘প্রথমে ভেবেছিলাম গ্রাম পঞ্চায়েতে যে সরকারি অনুদান আসে সেই টাকায় শৌচালয় তৈরি করব৷ কিন্ত্ত দেখলাম অনেক সময় লাগবে৷ একটা শৌচালয় বানানোর খরচ বাবদ সরকার বারো হাজার টাকা দেয়৷ কিন্ত্ত ওই টাকা আসতে কয়েক বছর লেগে যায়৷ তাই সরকারের ভরসায় না -থেকে নিজের সমস্ত গয়না বন্ধক রেখে শৌচালয় বানাতে নেমে পড়ি৷ কোথায় কম খরচে ইঁট পাওয়া যায় সেই খে াঁজও নিই৷ শেষে বন্ধক দেওয়া গয়নার টাকা থেকেই ছোটখাটো একটা ইঁটভাটা বানিয়ে ফেলি৷ ফলে সস্তায় ইঁটের জোগান নিয়ে আর কোনও চিন্তা ছিল না৷ এ ভাবে মাত্র দশ মাসে ১২০টি শৌচালয় তৈরি করেছি৷ আরও করার ইচ্ছে রয়েছে৷ ’ কিন্ত্ত গয়না বন্ধক দেওয়া নিয়ে বাড়ি থেকে আপত্তি আসেনি ? ‘বাড়ির কেউ কিছু বলেনি৷ স্বামী শুধু বলেছিলেন যা করবে বুঝে করো৷ ’ জানালেন তিন সন্তানের জননী কাজল৷ তারপর কাজল বলেন ‘গ্রামের লোক শুরুতে বিষয়টি সহজ ভাবে নেয়নি৷ অনেকেই কূ-মতলবের গন্ধ পাচ্ছিল৷ আমার স্বামীর কানে দিনরাত বাজে কথা বলার কম চেষ্টাও করেনি৷ পরে তারাই আবার পাল্টে যায়৷ কারণ তাঁদের বাড়ির মহিলারাই তো আমার সমর্থনে এগিয়ে আসে৷ ’

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল