অ্যাপশহর

তিন নির্বাচনে পরাজয় চিন্তা বাড়িয়েছে মোদীর

তিন রাজ্যে তিন ধরনের নির্বাচনে হারের পরে বিজেপি নেতারা কিছুটা চিন্তিত৷ কারণ , ওই তিনটি নির্বাচনেই ভালো ফল করার জন্য বিজেপির অন্তত চেষ্টার ত্রুটি ছিল না৷

EiSamay.Com 18 Oct 2017, 11:09 am
গৌতম হোড় ■ নয়াদিল্লি
EiSamay.Com after three types of elections in three states bjp leaders are worried
তিন নির্বাচনে পরাজয় চিন্তা বাড়িয়েছে মোদীর

তিন রাজ্যে তিন ধরনের নির্বাচনে হারের পরে বিজেপি নেতারা কিছুটা চিন্তিত৷ কারণ , ওই তিনটি নির্বাচনেই ভালো ফল করার জন্য বিজেপির অন্তত চেষ্টার ত্রুটি ছিল না৷ প্রথম ফলটা এসেছে মহারাষ্ট্রের নানদেড় থেকে৷ সেখানে পুরসভা নির্বাচনে ৮১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭৩টিতে জিতেছে কংগ্রেস৷ বিজেপি জিতেছে মাত্র ছ-টিতে এবং শিবসেনা একটিতে৷ দ্বিতীয় ফলটা হল , গুরদাসপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন , যেখানে বিজেপি প্রার্থী ১ লাখ ৯৩ হাজার ভোটে হেরেছেন৷ তৃতীয়টা এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের ভোট৷ যেখানে এবিভিপিকে হারিয়ে দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি৷ তিন রাজ্যে তিন ধরনের নির্বাচনে দলের এই ফলাফলে বিজেপি নেতারা বেশ হতাশ৷ এটা ঠিক নানদেড় হল রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বনের জায়গা৷

কিন্ত্ত পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস জিতেছিল ৪১টি ওয়ার্ডে৷ এ বার নানদেড়ে কংগ্রেস ৫০ শতাংশ ভোট পেয়েছে৷ অশোক চৌহান তো বটেই , শিবসেনা পর্যন্ত তাদের মুখপত্র ‘সামনায় ’ বলেছে , নানদেড় পুরসভা নির্বাচনে এটা প্রমাণ হয়ে গেল যে , বিজেপিকে হারানো যায়৷ মহারাষ্ট্রে যে বিজেপি বিধানসভায় তো বটেই , লোকসভা , পুরসভা , পঞ্চায়েতের মতো একের পর এক নির্বাচনে ভালো ফল করেছে , সেখানে নানদেড়ে এই অবস্থার কারণ কী ? কংগ্রেসের দাবি , তারা নিজেদের ভোটব্যাঙ্ককে অটুট রাখতে পেরেছে এবং তার সঙ্গে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী ও তরুণদের ভোট পেয়েছেন৷ নোটবন্দি , জিএসটি ও কর্মসংস্থান না হওয়ার ক্ষোভ ভোটের বাক্সে পড়েছে৷ সামনায় বলা হয়েছে , দেবেন্দ্র ফড়নবীস ও তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা বিজেপিকে এখানে জেতানোর জন্য প্রবলভাবে প্রচার করেছিলেন৷ তারপরেও বিহার ও দিল্লির মতো লোকে তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এটা বড় ব্যাপার৷ দেবেন্দ্র ফড়নবিসের ম্যাজিক নানদেড়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ শিবসেনার মতো এনসিপি -ও একইরকম ভাবে বিজেপিকে হারানোর জন্য কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ শিবসেনা ও এনসিপি দুই দলেরই এই নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে৷

তা সত্ত্বেও দুই দলই বিজেপির হারে যারপরনাই খুশি৷
মহারাষ্ট্রে শিবসেনা তো বিজেপির শরিক এবং এনসিপি -ও দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি -র প্রতি নরম মনোভাব নিয়ে চলছিল৷ কংগ্রেসের নেতাদের মতে , এই জয়ে তাঁদের কর্মীদের মনোবল একলাফে অনেকখানি বেড়ে যাবে৷ সবথেকে বড় কথা , কংগ্রেস এই ভোটে জিতেছে একার ক্ষমতায়৷ এনসিপি -র সাহায্যেরও দরকার হয়নি৷ গুরদাসপুরে লোকসভা উপনির্বাচনটা হয়েছিল বিজেপি প্রার্থী বিনোদ খান্নার মৃত্যুতে৷ পাঞ্জাবে কিছুদিন আগে কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে৷ অমরিন্দর সিং সরকারের হানিমুন এখনও শেষ হয়নি৷ এটা যেমন সত্যি , তেমনই পাশাপাশি এটাও সত্যি , এটা ছিল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন৷ বিজেপির জেতা আসন ছিল৷ বিনোদ খান্নার প্রতি সহানুভূতিও থাকার কথা৷ সেখানে যদি বিজেপি কিছুটা লড়াই করত , তা হলেও তাদের পক্ষে কিছু বলার থাকত৷ জেতা আসনে ১ লাখ ৯৩ হাজার ভোটে হারার পর তাদের কাছে কোনও অজুহাত নেই৷ জয়ী প্রার্থী বলরাম জাখরের ছেলে সুনীল জাখর গুরদাসপুরের লোকও নন৷ কিন্ত্ত বহিরাগত সুনীলই গুরদাসপুর কেন্দ্রে রেকর্ড ব্যবধানে জিতেছেন৷ বিনোদ খান্না জিতেছিলেন ১ লাখ ৩৫ হাজারে৷ সেই আসন প্রায় দু লাখ ভোটে বিজেপি হারার পর তো প্রশ্ন উঠবেই৷

বিশেষ করে কংগ্রেসের প্রচারটাই ছিল , মোদী সরকারের কাজের বিরুদ্ধে রায় দিন৷ পাঞ্জাবে এখন কংগ্রেসের হাওয়া রয়েছে মেনে নিয়েও এতটা খারাপ ফলের প্রত্যাশা বিজেপি নেতারাও করেননি৷ এতে যে কেবল লোকসভায় কংগ্রেসের একটা আসন বাড়ল তাই নয় , পাঞ্জাবের ফল রাহুল গান্ধীর দলের আত্মবিশ্বাসের পারদও কিঞ্চিত বাড়িয়েছে৷ তৃতীয় ফলটা এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন নির্বাচনে৷ জেএনইউ , দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়েও এবিভিপি হারল৷ এখানে হারল সমাজবাদী পার্টির ছাত্র সংগঠনের কাছ থেকে৷ পাঞ্জাবে যেমন কংগ্রেসের , উত্তর প্রদেশে তেমনই মধুচন্দ্রিমাপর্ব চলছে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের৷ কিন্ত্ত তা সত্ত্বেও এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ফল হল৷ এই ছাত্র নির্বাচনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই কারণে , অতীতে দিল্লি বা অন্যত্র ছাত্র নির্বাচনের জয়কেও বিজেপি মোদী সরকারের নীতির সাফল্য হিসাবে দেখিয়েছে৷ সে জন্যই লাগাতার তিন নির্বাচনে হার বিজেপি নেতাদের যদি চিন্তা বাড়ায় তা হলে সেটা স্বাভাবিক৷

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল