এই সময় জীবনযাপন ডেস্ক: লকডাউন, করোনাভাইরাস, আনলক ১, ২... ঠিক এক বছর হল এই শব্দগুলো যুক্ত হয়েছে আমাদের ডিকশনারিতে। আর এই শব্দ যে শুধু যুক্তই হয়েছে তা নয়, সেই সঙ্গে বদলে দিয়েছে আমাদের জীবন ও মূল্যবোধ। গত বছর এই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসে তাতাই ভাবতেই পারেনি, তার আর এ বছরের মতো দেশে ফেরা হবে না। শেষপর্যন্ত কিঙ্কিনির সঙ্গে নভেম্বরে যে 'সাত পাকে' ঘোরা হচ্ছে না সেটা অবশ্য সে দেশে বসেই বুঝতে পেরেছিল ও। ফটোগ্রাফি, প্রিওয়েডিং, ব্যাচেলার্স পার্টি -এসব নিয়ে অনেক রকম পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু সে আশায় জল ঢেলে দিয়েছে করোনা। তাতাই-কিঙ্কিনির মতো চেনা গল্পের সাক্ষী কিন্তু অনেকেই। এই লকডাউন যেমন নতুন করে সম্পর্কের মানে বুঝিয়েছে, তেমনই আবার কিছু সম্পর্কে এসেছে বিচ্ছেদ। কেউ আবার লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ আর মানতে না পেরে সম্পর্কে পাকাপাকি শিলমোহর দিতে সঙ্গীকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন ছাদনাতলায়। আর তাই লকডাউনের বন্ধ দরজা প্রেমের হাইওয়ের শেষ স্টপেজ কিন্তু বদলাতে পারেনি। একুশে পুরোহিত, কাজীদের ব্যস্ততা ফুরাচ্ছে কই! মুদ্রার উলটো পিঠও অবশ্য রয়েছে। দূরত্ব দূরে ঠেলে দিয়েছে মনের মানুষকে। প্রেমে ধাক্কা খেয়ে আপাতত ডেটিং অ্যাপে ঘোরাঘুরি বেড়েছে একাধিক তরুণ-তরুণীর।
রাতারাতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলে গোটা দেশ। বিশ্ব তখন কাঁপছে করোনা জ্বরে। লকডাউনের আগে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা হয়নি অনেকেরই। বাইরে বেরোনোরও জো ছিল না। ভরসা বলতে শুধু ভার্চুয়াল প্রেম। থমকে যাওয়া পথঘাটে, ভয়, আশঙ্কা কাটিয়ে সচল জনজীবনে কেমন চলছে প্রেম?
আইটি কোম্পানিতে কর্মরতা বছর ২৭-এর একতার কথায়, 'প্রথম প্রথম অফিসের কাজের চাপ কম থাকায় ভার্চুয়াল প্রেমে মন মজেছিল বেশ। কিন্তু দিন ১৫ পরেই ঘোর কাটে। উল্টোডাঙার বাসিন্দা হয়ে বেলগাছিয়ায় থাকা প্রেমিকের মুখ দেড় মাস দেখতে না পাওয়া দুঃস্বপ্ন', জানান তিনি। এদিকে এই দূরত্ব আরও কাছাকাছি এনে দিয়েছে দেবতনু আর শ্রাবন্তীকে। যুগলে জানালেন, মার্চে লকডাউনের সময় বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়েছিল শ্রাবন্তী। এদিকে দেবতনু তখন কলকাতায়। শ্রাবন্তী জানান, 'এর আগে বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ আসলেও নানা আছিলায় বেশ পাশ কাটিয়ে যেতেন। কারণ একে অপরকে কাছে পাওয়া কঠিন ছিল না। কিন্তু লকডাউনের ৬ মাসের বিরহ পর্ব তাঁদের ঠেলে দিয়েছে বিয়ের পিঁড়ির দিকেই' , অকপটে বললেন দুজনেই। বললেন, 'লকডাউন না হলে বিয়ে করতে আরও বছর দুই লেগে যেত। কিন্তু আবার যদি লকডাউন হয়!'
এই একবছরে একে অপরকে ঠিকমতো সময় দিতে না পেরে প্রেম ভেঙে গিয়েছে এমন উদাহরণ আছে। অজান্তেই দুজনের মধ্যে একজন ঝুঁকে পড়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারপর ইতি টেনেছেন সম্পর্কে।
গত একবছরে সকলেই ভিডিয়ো কল, ভিডিয়ো মিটিং-এর সঙ্গে অনেক বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবুও এর থেকে অনেক বেশি আরামদায়ক যে পাশাপাশি বসে আড্ডা দেওয়া তা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন সকলেই। গত বছর লকডাউনের জেরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পড়েছিল বিপাকে। তারপরের কাহিনি তো সবারই জানা। কিন্তু সেই স্কুল পেরনো সদ্য যৌবনে পাওয়া দেওয়া তরুণীর দাবি- 'ভিডিয়ো করে কি আর কলেজের অনুভূতি টের পাওয়া যায়। ক্যান্টিন নেই, আড্ডা নেই, প্রেম নেই'... ঘুরে ফিরে সকলেরই দুঃখ কিন্তু সেই এক জায়গায়।
আবার লকডাউনে একটানা কয়েক মাস স্বামীর সঙ্গে কাটিয়ে বছর ৩৪ বছরের দেবস্মিতার মনে হয়েছে এইভাবে একসঙ্গে থাকা মুশকিল। কোনও ভাবেই তাঁরা একে অপরকে মানিয়ে নিতে পারছেন না। নিত্যদিনের আশান্তি, সাংসারিক ঝামেলায় বিপর্যস্ত জীবন। সেখান থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন একা থাকার। আর তাই আনলক পর্বে তিনি ফিরি গিয়েছেন তাঁর কলেজ জীবনের দিনগুলিতে। বন্ধুদের সঙ্গে নন্দন চত্বরে আসছেন আড্ডা দিতে, নিজের মতো করে শাড়ির ব্যবসা শুরু করেছেন, একসঙ্গে হইহই করে চা-কফি খাওয়া চলছে, কখনও পুরনো 'ক্রাশে'র সঙ্গে দেখা....সব মিলিয়ে তিনি দারুণ ভাবে উপভোগ করছেন নতুন এই অধ্যায়। তা স্বামী যদি নিজের ভুল শুধরে ফিরে আসেন? উত্তরে তিনি বললেন- 'তখন ভাবা যাবে'। আপাতত নিজের জীবন আর নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়াতেই তাঁর আনন্দ। লকডাউন শেষে তিনি পেয়েছেন মুক্তির স্বাদ। 'ভাগ্যিস করোনা এভাবে হামলা করেছিল'... বলেই বন্ধুদের সঙ্গে একুশের তরুণীদের মতোই হাসি ঠাট্টায় মাতলেন দেবস্মিতা।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
রাতারাতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলে গোটা দেশ। বিশ্ব তখন কাঁপছে করোনা জ্বরে। লকডাউনের আগে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা হয়নি অনেকেরই। বাইরে বেরোনোরও জো ছিল না। ভরসা বলতে শুধু ভার্চুয়াল প্রেম। থমকে যাওয়া পথঘাটে, ভয়, আশঙ্কা কাটিয়ে সচল জনজীবনে কেমন চলছে প্রেম?
আইটি কোম্পানিতে কর্মরতা বছর ২৭-এর একতার কথায়, 'প্রথম প্রথম অফিসের কাজের চাপ কম থাকায় ভার্চুয়াল প্রেমে মন মজেছিল বেশ। কিন্তু দিন ১৫ পরেই ঘোর কাটে। উল্টোডাঙার বাসিন্দা হয়ে বেলগাছিয়ায় থাকা প্রেমিকের মুখ দেড় মাস দেখতে না পাওয়া দুঃস্বপ্ন', জানান তিনি। এদিকে এই দূরত্ব আরও কাছাকাছি এনে দিয়েছে দেবতনু আর শ্রাবন্তীকে। যুগলে জানালেন, মার্চে লকডাউনের সময় বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়েছিল শ্রাবন্তী। এদিকে দেবতনু তখন কলকাতায়। শ্রাবন্তী জানান, 'এর আগে বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ আসলেও নানা আছিলায় বেশ পাশ কাটিয়ে যেতেন। কারণ একে অপরকে কাছে পাওয়া কঠিন ছিল না। কিন্তু লকডাউনের ৬ মাসের বিরহ পর্ব তাঁদের ঠেলে দিয়েছে বিয়ের পিঁড়ির দিকেই' , অকপটে বললেন দুজনেই। বললেন, 'লকডাউন না হলে বিয়ে করতে আরও বছর দুই লেগে যেত। কিন্তু আবার যদি লকডাউন হয়!'
এই একবছরে একে অপরকে ঠিকমতো সময় দিতে না পেরে প্রেম ভেঙে গিয়েছে এমন উদাহরণ আছে। অজান্তেই দুজনের মধ্যে একজন ঝুঁকে পড়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারপর ইতি টেনেছেন সম্পর্কে।
গত একবছরে সকলেই ভিডিয়ো কল, ভিডিয়ো মিটিং-এর সঙ্গে অনেক বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবুও এর থেকে অনেক বেশি আরামদায়ক যে পাশাপাশি বসে আড্ডা দেওয়া তা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন সকলেই। গত বছর লকডাউনের জেরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পড়েছিল বিপাকে। তারপরের কাহিনি তো সবারই জানা। কিন্তু সেই স্কুল পেরনো সদ্য যৌবনে পাওয়া দেওয়া তরুণীর দাবি- 'ভিডিয়ো করে কি আর কলেজের অনুভূতি টের পাওয়া যায়। ক্যান্টিন নেই, আড্ডা নেই, প্রেম নেই'... ঘুরে ফিরে সকলেরই দুঃখ কিন্তু সেই এক জায়গায়।
আবার লকডাউনে একটানা কয়েক মাস স্বামীর সঙ্গে কাটিয়ে বছর ৩৪ বছরের দেবস্মিতার মনে হয়েছে এইভাবে একসঙ্গে থাকা মুশকিল। কোনও ভাবেই তাঁরা একে অপরকে মানিয়ে নিতে পারছেন না। নিত্যদিনের আশান্তি, সাংসারিক ঝামেলায় বিপর্যস্ত জীবন। সেখান থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন একা থাকার। আর তাই আনলক পর্বে তিনি ফিরি গিয়েছেন তাঁর কলেজ জীবনের দিনগুলিতে। বন্ধুদের সঙ্গে নন্দন চত্বরে আসছেন আড্ডা দিতে, নিজের মতো করে শাড়ির ব্যবসা শুরু করেছেন, একসঙ্গে হইহই করে চা-কফি খাওয়া চলছে, কখনও পুরনো 'ক্রাশে'র সঙ্গে দেখা....সব মিলিয়ে তিনি দারুণ ভাবে উপভোগ করছেন নতুন এই অধ্যায়। তা স্বামী যদি নিজের ভুল শুধরে ফিরে আসেন? উত্তরে তিনি বললেন- 'তখন ভাবা যাবে'। আপাতত নিজের জীবন আর নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়াতেই তাঁর আনন্দ। লকডাউন শেষে তিনি পেয়েছেন মুক্তির স্বাদ। 'ভাগ্যিস করোনা এভাবে হামলা করেছিল'... বলেই বন্ধুদের সঙ্গে একুশের তরুণীদের মতোই হাসি ঠাট্টায় মাতলেন দেবস্মিতা।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।