সিকিমের ইচ্ছা পূরণ হ্রদ থেকে মিজোরামের দোকানদার ছাড়া দোকান, উত্তর পূর্বের এই জায়গাগুলি বেশ আকর্ষণীয়
উত্তর-পূর্ব ভারত। প্রকৃতি দেবী যেন নিজের সমস্ত আশীর্বাদ উজার করে দিয়েছেন এই অংশে। আর এখানকার বাসিন্দারা নিজের মতো করেই জীবন যাপন করেন। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য যেমন ভাষায় প্রকাশ করা যায় না তেমনই অপূর্ব সুন্দর এখানকার পরিবেশ, চা বাগান, সংস্কৃতি, লোকজন আর দর্শণীয় স্থান।
ইতিহাস বা গল্পকথা শুনতে যারা ভালবাসেন, তাদের জন্য উত্তর-পূর্ব ভারতের এই জায়গাগুলি অবাক করার মতো। দেখে নিন সেই স্থানগুলি কী কী
সিকিমের সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন বাবা হরভজন সিংয়ের ভূত
মৃত্যুর পরেও ছুটিতে বাড়ি ফিরতেন তিনি, আজও নাকি দেশের সীমান্ত পাহারা দেয় হরভজন সিংহের আত্মা। এই গল্পটি আপনাকে হতবাক করে দিতে পারে। তিনি একজন ভারতীয় সেনা সৈনিক, হরভজন সিং নাথুলার নায়ক হিসাবেও পরিচিত। সিকিমের নাথু লা-র কাছে ১৯৬৮ সালে ২২ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরেও নাকি নিজের কর্তব্যে অবিচল হরভজন সিংহ। তিনি নাকি শত্রুপক্ষ থেকে আসা আগাম বিপদের ব্যাপারে আগে থেকেই সতর্ক করেন সেনা জওয়ানদের। এমনকি, কোনও সেনার পোশাক সামান্যও অবিন্যস্ত থাকলে তাঁর গালে নাকি শূন্য থেকে উড়ে এসে পড়ে সপাট থাপ্পড়। ভারতীয় সৈন্যদের তার প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং তারা বলে যে বাবা হরভজনের ভূত তাদের অন্তত তিন দিন আগে হামলার সতর্ক করে দেয়! এমনকি চীনারাও তাকে বিশ্বাস করে এবং সভায় তার সম্মানে একটি চেয়ার আলাদা করে রাখে আজও।
সিকিমের ইচ্ছাপূরণ হ্রদ খেচিপেরি
পেলিং থেকে খেচিপেরি লেকের দূরত্ব ২৬ কিমি। জিপ বা ছোট গাড়ি ভাড়া করে যেতে হয় এই খেচিপেরি লেকে। খেচিপেরি লেক এক রহস্যময়। ৬৫৬১ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, লেপচা সম্প্রদায় এই লেকটিকে পবিত্র হিসাবে মনে করেন। এই হ্রদের সামনে হাত জোড় করে প্রার্থনা করলে ইচ্ছে পূরণ হয়ে যায়। এই পবিত্র হ্রদে ধুমপান, মল-মূত্র ত্যাগ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, চেঁচামিচি করাও বারণ, সব সময় গা ছমছমে ঠান্ডা একটা ভাব। বলা হয় যে হ্রদটি গুরু পদ্মসম্ভব দ্বারা আশীর্বাদ হয়েছিল আর এর ফলেই মানুষের ইচ্ছা পূরণ করার ক্ষমতা রয়েছে।
তালাতাল ঘরের রহস্যময় সুড়ঙ্গ
এটি এমন জায়গা যেখানে কেউ সহজেই হারিয়ে যেতে পারে তাই জায়গাটি জানেন এমন কারোর সঙ্গে থাকা ভাল। আহোম রাজাদের দ্বারা নির্মিত, তালাতাল ঘর ছিল মূলত দুটি গোপন সুড়ঙ্গ সমন্বিত একটি সেনা ঘাঁটি। মাটির নীচে তিনটি তলা রয়েছে যা রাজারা প্রস্থান গেট হিসাবে ব্যবহার করতেন। কথিত আছে যে যারা ভিতরে গেছে তারা আর ফিরে আসে না!
মিজোরামে দোকানদার ছাড়া দোকান
দু’পাশে বেশ জঙ্গল। মাঝখান দিয়ে রাস্তা। সেই রাস্তায় দেখা যায় সুন্দর ভাবে সাজানো ছোট ছোট দোকান। কোনও দোকানে ফল, সবজি তো কোনওটায় ফুল-সহ নানা দ্রব্য। এই দোকানগুলোতে না আছে কোনও দরজা, না পাবেন সারাদিনে কোনও দোকানদারের দেখা। নিজেই পছন্দমতো বাজার করুন আর দাম দিয়ে ফিরতে হয়। ভাবতে অবাক লাগলেও, ঠিক এমনটাই হয়।
আরও পড়ুন: দেশের এই ৫টি জায়গা দেখতে বিদেশের মতো, লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ না করে একবার ঘুরে আসুন না!
অম্বুবাচী মেলা
অসমের রাজধানী গুয়াহাটির পশ্চিমাংশে অবস্থিত নীলাচল পাহাড়ে রয়েছে এই মন্দির। এটি হিন্দু বিশেষ করে তান্ত্রিকদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র তীর্থ। কামাক্ষ্যার এই মন্দিরটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির। দেবী মহামায়া এই মন্দিরে কামাক্ষ্যারূপে বিরাজমান। এই তীর্থক্ষেত্র একটি শক্তিপীঠ ও তন্ত্র সাধনার ক্ষেত্র। এটি ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম। কথিত আছে, এখানে সতীর দেহত্যাগের পর বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রে যোনি ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।