অ্যাপশহর

ভারতের এই পাঁচ মন্দিরে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ!

শবরিমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের দাবিতে মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মন্দিরে প্রবেশের অধিকার চান মহিলারা। আদালতের নির্দেশে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে এখন মহিলারাও প্রবেশ করতে পারেন। কিন্তু এরকমই দেশে বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে যেখানে পুরুষদের প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ।

Produced byDebnil Saha | Lipi 3 Jun 2022, 2:46 pm
গোটা বিশ্বের হিন্দুদের কাছে ভারতবর্ষ অনেকটা তীর্থস্থান স্বরূপ। দেশের অলিতে গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ছোটো বড় মাঝারি আকারের বহু মন্দির। হিন্দু ধর্মের তেত্রিশ কোটি দেবতার প্রত্যেকেরই নাকি নিজস্ব মন্দির আছে। তবে দেশজুড়ে মন্দিরের সংখ্যা ঠিক কটা তার হিসেব রাখা বেশ মুশকিল। জাগ্রত দেবতাদের মন্দিরের বেশি। আর এই সব মন্দিরের নিয়ম নীতি, আদব কায়দা ভিন্ন রকম। কোথাও পুজো দিতে হয় ভোর বেলা, কোথাও পুজো হয় গভীর রাতে। কোথাও পুজো করার জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরতে হয়। কোথাও আবার দেবতার উদ্দেশ্যে চড়ানো হয় বলি। কোনও মন্দিরে মহিলারা প্রবেশ করতে পারেন না। আবার কোনও মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ পুরুষদের। শুনতে অবাক লাগলে কথাটা সত্যি। আমাদের দেশে এমন অনেক মন্দির রয়েছে যেখানে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ।
EiSamay.Com temples in india where men are not allowed
ভারতের এই পাঁচ মন্দিরে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ!

শবরিমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের দাবিতে মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মন্দিরে প্রবেশের অধিকার চান মহিলারা। আদালতের নির্দেশে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে এখন মহিলারাও প্রবেশ করতে পারেন। কিন্তু এরকমই দেশে বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে যেখানে পুরুষদের প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ।


​কামাখ্যা মন্দির, অসম

৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম অসমের কামাখ্যা মন্দির। কথিত আছে, সতীর দেহত্যাগের পর বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রে তাঁর যোনি ছিন্ন হয়ে এখানেই পড়েছিল। সেকারণেই দেবী কামাখ্যাকে ঊর্ব্বরতার দেবী বা "রক্তক্ষরণকারী দেবী" বলা হয়। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত অম্বুবাচী মেলার আয়োজন করা হয় মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী আষাঢ় মাসে মৃগ শিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়।

এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়। আর এই উপলক্ষে বিশাল এক মেলার আয়োজন করা হয় সেখানে। অম্বুবাচীর সময় তিনদিন মন্দির বন্ধ থাকে। সেই তিনদিন কোনও মাঙ্গলিক কাজ এবং দেবী দর্শন নিষিদ্ধ থাকে। চতুর্থ দিন দেবীর স্নান এবং পূজা সম্পূর্ণ হওয়ার পর মন্দিরে দেবী মূর্তি দর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়। তাছাড়া এই চারদিন মন্দিরে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। আর মহিলারা রজঃস্বলা হলেও মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারেন। সেই সময় মন্দিরে প্রবেশ করেন শুধুমাত্র মহিলা যাজক এবং সন্ন্যাসীরা। (Photo credit : TOI.com)

আরও পড়ুন: এই ৬ দেশে ভারতীয় টাকার মূল্য সবচেয়ে বেশি, তাই এইবেলা সস্তায় হানিমুনের প্ল্যান করে ফেলতে পারেন

​আট্টুকাল মন্দির, কেরল

কেরলের আট্টুকাল মন্দির প্রবেশের অনুমতি রয়েছে শুধুমাত্র মহিলাদের। পুরুষরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না। প্রতি বছর পোঙ্গলের সময় এই মন্দিরে ৩০ লক্ষ মহিলা ভক্ত মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। এত বড় নারী সম্মেলন বিশ্বে আর কোথাও হয় না। এই কারণেই গিনিস ওয়ার্ল্ড অফ বুকে জায়গা করে নিয়েছে এই মন্দির। আর সেই সময় এই মন্দিরে কোনও পুরুষরা প্রবেশ করতে পারেন না। (Photo credit : Toi.com)

আরও পড়ুন: জুন মাসে দক্ষিণ ভারতের এই অপূর্ব সুন্দর স্থানগুলি ঘুরতে চাইলে এখনই প্ল্যান করে ফেলুন

​দেবী কন্যাকুমারী, কন্যাকুমারী

কন্যাকুমারীর দেবী মন্দিরে ভগবতীকে কন্যা রূপে পূজা করা হয়। এই মন্দির চত্বরে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। যদিও কিন্তু পুরুষ সন্ন্যাসীরা মন্দিরের প্রধান দ্বার পর্যন্ত যেতে পারেন। এটিও শক্তিপীঠের একটি। পুরাণ অনুসারে, কন্যাকুমারী মন্দিরে সতীর মৃতদেহের ডান কাঁধ এবং মেরুদণ্ডের অংশটি পড়েছিল। আরেকটি কিংবদন্তি অনুসারে, দেবী পার্বতীকে বিবাহের দিন এই স্থানে মহাদেব কোনও অসম্মানজনক আচরণ করেন। সেই কারণে আজ পর্যন্ত এখানে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। (Photo credit : indiatimes.com)

​মাতা মন্দির, মুজফ্ফরনগর

অসমের কামাখ্যার মতো বিহারের মুজফ্ফরনগরের মাতা মন্দির একটি শক্তি পীঠ। নির্দিষ্ট লসময়ে দেবীর ঢতুস্রাব হয় এবং তখন মন্দিরে পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। সেই সময় মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন মহিলারা। পুরোহিত, ভক্ত সকলেই মহিলা হন। এই নিয়ম এতটাই কঠোরভাবে পালিত হয় যে পুরুষ পুরোহিতও মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশের অনুমতি পান না। (photo credit : TOI.com)

​ব্রহ্মা মন্দির, রাজস্থান

ভারত তথা বিশ্বের একমাত্র ব্রহ্মা মন্দিরটি রয়েছে রাজস্থানের পুষ্করে। প্রজাপতি ব্রহ্মার এই মন্দিরে কিন্তু বিবাহিত পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। পুরাণ অনুযায়ী, এই স্থানে স্ত্রী সরস্বতী দেবীকে নিয়ে যজ্ঞে বসার কথা ছিল প্রজাপতির। কিন্তু যজ্ঞানুষ্ঠানে পৌঁছোতে দেরী করেন দেবী সরস্বতী। সেই সময় যজ্ঞানুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য দেবী গায়ত্রীকে বিয়ে করেন ব্রহ্মা। এবং যজ্ঞে বসেন। এই ঘটনায় দেবী সরস্বতী ক্রদ্ধ হন এবং অভিশাপ দেন যে, কোনও বিবাহিত প্রবেশ ব্রহ্মা মন্দিরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না। যদি কেউ প্রবেশ করেন তাহলে তাঁর দাম্পত্য জীবন অসুখী হবে। সেই থেকে পুষ্করের ব্রহ্মা মন্দিরে পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

লেখকের সম্পর্কে জানুন
Debnil Saha
Debnil Saha is working as a Consultant in Eisamay.com, Bengali News website of the Times Internet, a product of the Times of India Group.... আরও পড়ুন

পরের খবর