অ্যাপশহর

আপনি কি জানেন এই হ্রদের জলের রং বদলায় নিজে থেকেই? এই পরিবর্তনই ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে বলে বিশ্বাস স্থানীয়দের

উত্তরাখণ্ডের বাজপুর কালাদগুঙ্গি রোডে অবস্থিত এটি অত্যন্ত সুন্দর হ্রদ রয়েছে। এই হ্রদের নাম হল খুরপা তাল হ্রদ। বলা হয়ে থাকে যে, এই হ্রদের জলের রং না কি আপনা আপনিই বদলে যায়। জলের রং পরিবর্তনের কারণে এই হ্রদটি বেশ জনপ্রিয়। একে আবার রহস্যময় লেকও বলা হয়। তার নেপথ্যের কারণ অবশ্যই জলের রং পরিবর্তন। আর তা থেকেই না কি বোঝা যায় ভবিষ্যতে ভাল হবে না কি খারাপ… তা হলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই হ্রদের জলের রং পরিবর্তনের আসল রহস্যটা কী।

Produced byDebnil Saha | Lipi 8 Aug 2022, 12:08 pm
ভারত উপমহাদেশ এবং ফলে বিপুল বৈচিত্র্যের দেশ… এ কথা বললে মোটেও ভুল বলা হবে না। ভারতে তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই অনেক হ্রদও রয়েছে। এমনকি এখানকার কিছু শহরকে তো হ্রদের শহরও বলা হয়। নৈনিতাল তার মধ্যেই একটি। উত্তরাখণ্ডের বাজপুর কালাদগুঙ্গি রোডে অবস্থিত এটি অত্যন্ত সুন্দর হ্রদ রয়েছে। যদিও ভীম তাল, সাত তাল, নৌকুচিয়া তাল, কমল তাল, গরুড় তালের মতো আরও অনেক হ্রদ রয়েছে। তবে এখান থেকে ১২ কি মি দূরে রয়েছে এমন একটি হ্রদ, যা দেখে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। এই হ্রদের নাম হল খুরপা তাল হ্রদ। বলা হয়ে থাকে যে, এই হ্রদের জলের রং না কি আপনা আপনিই বদলে যায়। জলের রং পরিবর্তনের কারণে এই হ্রদটি বেশ জনপ্রিয়। একে আবার রহস্যময় লেকও বলা হয়। তার নেপথ্যের কারণ অবশ্যই জলের রং পরিবর্তন। আর তা থেকেই না কি বোঝা যায় ভবিষ্যতে ভাল হবে না কি খারাপ… তা হলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই হ্রদের জলের রং পরিবর্তনের আসল রহস্যটা কী।
EiSamay.Com know about mystery of khurpatal lake where lake change its colour
আপনি কি জানেন এই হ্রদের জলের রং বদলায় নিজে থেকেই? এই পরিবর্তনই ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে বলে বিশ্বাস স্থানীয়দের



​খুরপাতাল হ্রদ এক অনন্য পর্যটন স্থান

খুরপা তাল হ্রদ নৈনিতালের কাছে সবচেয়ে সুন্দর হ্রদ গুলির মধ্যে একটি। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৬৩৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত খুরপা তাল লেকও একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। এই খুরপা তাল হ্রদটি পাহাড় এবং ঘন দেবদারু গাছে ঘেরা। এ ছাড়া লম্বা পাইন গাছ খুরপা তালের সৌন্দর্যকে আরও লোভনীয় করে তোলে। তবে আবহাওয়া তেমন পরিষ্কার না থাকলে খুরপা তালের সৌন্দর্য কিন্তু সে ভাবে উপভোগ করা যায় না।

​এই হ্রদটি তার স্ফটিক স্বচ্ছ জলের জন্য বিখ্যাত

এই রহস্যময় খুরপা তাল হ্রদটি তার মনোরম জলবায়ু এবং স্ফটিক স্বচ্ছ জলের জন্য পরিচিত। যাঁরা নৈনিতাল বেড়াতে যেতে চান, অথচ সেখানকার শহুরে কোলাহল থেকে দূরে থাকতে এবং প্রকৃতির মাঝে কিছু শান্ত মুহূর্ত কাটাতে চান, তাঁদের জন্য খুরপা তাল হ্রদটি সেরা পর্যটন গন্তব্য হতে পারে।

​এই হ্রদের পরিবর্তনশীল জলের রং ভবিষ্যতেরও ইঙ্গিত দেয়

স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায়শই বলেন যে, এই খুরপা তাল হ্রদের জলের রং কখনও লাল, কখনও তা বদলে নীল হয়ে যায়। আবার কখনও জলের রং হয়ে যায় সবুজ! মানুষ বিশ্বাস করে যে, হ্রদের জলের রঙের এই পরিবর্তন নাকি আদতে ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত দেয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যখন খুরপা তালের জলের রং হালকা লাল, তার মানে কোনও বিপর্যয়ের আগমনের লক্ষণই দর্শাচ্ছে তা। আবার একই ভাবে মার্চ মাসে এই খুরপা তালের রঙে সোনালি হলদেটেতে পরিণত হয়, যা কি না সমৃদ্ধির প্রতীক। একই সময়ে পাইনের ফুল মার্চ, এপ্রিল মাস নাগাদ খুরপা তালের জলে পড়ে। যার কারণে হ্রদের জলের রঙে কিছুটা পরিবর্তন হয়। অনেক সময় গাছের ছায়ার কারণেও খুরপা তালের জলের রং সবুজ হয়ে যায়।

​এই খুরপা তালের জলের রং পরিবর্তনের কারণ

এখানে বসবাসকারী স্থানীয় মানুষেরা বিশ্বাস করেন যে, খুরপা তাল হ্রদের অভ্যন্তরে প্রায় ৪০ টিরও বেশি ধরনের শৈবাল প্রজাতি রয়েছে। শৈবালের উপরে সূর্যের রশ্মি পড়ে, তাতেই তৈরি হয় বিভিন্ন রঙের খেলা।

আরও পড়ুন: হরিদ্বারের এই আশ্রমগুলিতে থাকা-খাওয়া একেবারে বিনামূল্যে, মিস করবেন না!

​খুরপা তাল হ্রদ নানা মাছের আবাস স্থল

এই খুরপা তাল হ্রদে বেড়াতে এলে পর্যটকেরা প্রচুর মাছ দেখতে পাবেন। এই হ্রদ অনেক মাছের নানা ধ্রুনের প্রজাতির জন্য প্রাকৃতিক বাসস্থান প্রদান করতে সক্ষম। এমনকি এই জায়গাটি মাছ ধরার জন্যও বেশ উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।

​খুরপা তাল হ্রদ দেখার সেরা সময় কোনটি?

যদিও চাইলেই আপনি বছরের যে কোনও সময়ই খুরপা তাল হ্রদ ঘুরে আসতে পারেন। কিন্তু অক্টোবর থেকে মে মাসের মধ্যে যাওয়া একেবারে আদর্শ সময়। আসলে শীত কালে তুষারপাতের কারণে এখানকার তাপমাত্রা খুব কমে যায় এবং বর্ষার দিনে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এখানে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে বর্ষা কালে খুরপা তাল বেড়াতে না যাওয়াই শ্রেয়।

আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ডের এই হিল স্টেশনটি এক টুকরো অস্ট্রিয়ার স্বাদ দেবে, পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসবেন নাকি?

​এখানে পাণ্ডবরা ধনুর্বিদ্যা শিখেছিল

এই খুরপা তাল হ্রদের সঙ্গে জুড়ে আছে পৌরাণিক গাথাও। শোনা যায়, এই খুরপা তাল থেকে প্রায় ৮ কি মি দূরে দ্রোণ সাগর অবস্থিত। কথিত আছে যে, এই দ্রোণ সাগরেই গুরু দ্রোণাচার্য এসে পাণ্ডবদের ধনুর্বিদ্যার পাঠ শিখিয়েছিলেন এবং তার প্রতীক হিসাবে এখানে গুরু দ্রোণের মূর্তিও স্থাপন করা হয়েছিল।

খুরপা তাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময়তা এবং পৌরাণিক গাথা ঘেরা এমন এক অনন্য সুন্দর জায়গা যার পরতে পরতে জড়িয়ে আছে রহস্য। এখানে ঘুরতে গেলে ফিরবেন অনেকটা ভাল লাগা সঙ্গে নিয়ে।

আরও পড়ুন: কেরালার এই মন্দিরে শকুনি মামারও পুজো হয়, কিন্তু কেন তৈরি হয়েছিল তা জানেন কি?

লেখকের সম্পর্কে জানুন
Debnil Saha
Debnil Saha is working as a Consultant in Eisamay.com, Bengali News website of the Times Internet, a product of the Times of India Group.... আরও পড়ুন

পরের খবর