অ্যাপশহর

কেরালার এই মন্দিরে শকুনি মামারও পুজো হয়, কিন্তু কেন তৈরি হয়েছিল তা জানেন কি?

কথায় আছে, ভারতে নাকি ৩৩ কোটি দেবদেবীর পুজো করা হয়। সত্যিই তো, এ দেশে দেবদেবীর সংখ্যা তো আর নেহাত কম নয়। এখানে দেবতা থেকে অসুর… পুজো করা হয় অনেকেরই। কারণ, দেবতা বা অসুর হয়ে ওঠা আসলে পরিস্থিতির দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি হয়। ভারতে যেমন রামকে পুজো করা হয়, তেমনই আবার শ্রীলঙ্কায় রাবণকে পুজো করার কথা নিশ্চয়ই অনেকেই শুনেছেন। রাম আর রাবণের পুজো তো হল।

Produced byDebnil Saha | Lipi 8 Aug 2022, 11:29 am
কথায় আছে, ভারতে নাকি ৩৩ কোটি দেবদেবীর পুজো করা হয়। সত্যিই তো, এ দেশে দেবদেবীর সংখ্যা তো আর নেহাত কম নয়। এখানে দেবতা থেকে অসুর… পুজো করা হয় অনেকেরই। কারণ, দেবতা বা অসুর হয়ে ওঠা আসলে পরিস্থিতির দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি হয়। ভারতে যেমন রামকে পুজো করা হয়, তেমনই আবার শ্রীলঙ্কায় রাবণকে পুজো করার কথা নিশ্চয়ই অনেকেই শুনেছেন। রাম আর রাবণের পুজো তো হল। কিন্তু কেউ কি শকুনি মামার মন্দিরের কথা জানেন? হ্যাঁ, মহাভারতের দিকে এক বার চোখ ফেরান। মনে পড়ে যাবে এই মহা যুদ্ধের সৃষ্টিকারী দুর্যোধনের মামা শকুনির কথা। ভারতে কিন্তু শকুনিকেও পুজো করা হয়। শকুনি মামার এই মন্দিরটি দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কোথায় রয়েছে এই মন্দির? এই মন্দিরের বিশেষত্বই বা কী?
EiSamay.Com how much you know about shakuni mama temple in kerala
কেরালার এই মন্দিরে শকুনি মামারও পুজো হয়, কিন্তু কেন তৈরি হয়েছিল তা জানেন কি?


​শকুনি মামাকে ঘটা করে পুজো করা হয় এই খানে

দক্ষিণ ভারতের কেরালার কোল্লামে বর্তমান এই শকুনি মামার মন্দির অবস্থিত। এখানে সম্পূর্ণ আচার অনুষ্ঠান-সহ শকুনির পুজো করা হয়। এমনকি এখানকার স্থানীয়দের মধ্যে বিশ্বাস যে, শকুনি মামার আরাধনা করলে নাকি যত না পাওয়া, মনের ইচ্ছা সব পূরণ হয়। কেরালার এই শকুনি মামার মন্দিরটি মায়ামকোট্টু মালাঞ্চরুভু মালানাদ মন্দির নামেও বিখ্যাত।

​জেনে নিন মন্দির নির্মাণের নেপথ্যের কাহিনি

কথিত আছে, যখন মহাভারত যুদ্ধ শেষ হয়েছিল, তখন শকুনি মামা নাকি খুব দুঃখ পেয়েছিলেন। যুদ্ধের ফলে যা যা হয়েছিল, তা দেখে তাঁর নাকি ভীষণ মন খারাপ হয়। মহাভারতের যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ মারা যায় এবং বহু সাম্রাজ্যও বিপুল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপরই শকুনি যুদ্ধের পরিণতি নিজের চোখের সামনে দেখতে পেয়ে অনুশোচনা বোধ করেন। অনুতপ্ত হয়ে শকুনি মামা শিবের পুজো শুরু করেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এমনিতেই শিব সকলের অধীশ্বর। মন দিয়ে তাঁকে ডাকলে তিনি দেখা দেন। ফলে শকুনি মামার এক মনোযোগে করা তপস্যায় খুশি হয়ে ভগবান শিব তাঁর কাছে আবির্ভূত হন। শিব সেই সময়ে শকুনি মামাকে আশীর্বাদ করেন। শকুনি মামা যে স্থানে তপস্যা করেছিলেন, সেখানেই তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি যে পাথরের উপর বসে শকুনি মামা তপস্যা করেছিলেন, সেই পাথরটিই আজ পবিত্রস্বরম নামে স্বীকৃত হয়েছে। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ কেরালার এই মন্দিরে আসেন শকুনি মামার পুজো করতে। এই মন্দিরটি কেরালার কোল্লামে অবস্থিত।

আরও পড়ুন: যদি আপনি গরম একেবারে সহ্য করতে না পারেন, তা হলে এই জায়গাগুলো যাওয়ার কথা ভুলেও ভাববেন না!

​মালাক্কুদা মহালাসভম উত্সব প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়

তবে শুধু শকুনি মামার মন্দির স্থাপিত হওয়া বা রোজ তাঁর পুজো করাতেই এটা আটকে নেই। মানুষ ধর্মের সঙ্গে মিলিয়ে দেয় উৎসব আর উদযাপনকেও। ফলে আরও নানা লোকাচার, উৎসব যোগ হয় কোনও মন্দিরকে ঘিরে। এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। আজ কেরালার যেখানে মন্দিরটি রয়েছে, সেই স্থানে প্রতি বছর মালাক্কুদা মহালাসভম নামে একটি জমকালো উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে যোগ দিতে আসেন। মন্দিরে শকুনি মামা ছাড়াও দেবী মাতা, নাগরাজ এবং কিরাত মূর্তিরও পূজা করা হয়।

​কী ভাবে আপনি কোত্তারাক্কারা পৌঁছবেন

মন্দির সম্পর্কে তো জানা গেল। তা পুজো দিতে হোক বা নেহাতই কৌতূহলের কারণে, আপনি যদি কেরালার এই মন্দির দেখতে যেতে চান, কী ভাবে পৌঁছবেন, তা জানেন কি? কোত্তারাক্কারা তিরুবনন্তপুরম থেকে প্রায় ৬৫ কি মি দূরে অবস্থিত। আর সেই পাথর, যার উপরে শকুনি মামা বসে সেই কঠোর তপস্যা করেছিলেন, সেই পবিত্রস্বরমে পৌঁছনোর জন্য কোত্তারাক্কারা তালুক থেকে প্রায় ১৬ কি মি দূরে যেতে হবে আপনাকে। তা হলে জেনে নেওয়া যাক সেখানে পৌঁছবেন কী ভাবে।

বাসে: বাসে পৌঁছতে পারেন সহজে। কেরালার প্রধান শহর থেকে কোত্তারাক্কারা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বাস রয়েছে। সেখান থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা করলে মন্দির ও পবিত্রস্বরমে পৌঁছনো সহজ হবে।

ট্রেনে: ট্রেনে চেপে কোত্তারাকারা পৌঁছানোর জন্য নিকটতম মুনরোথুরত্তু রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছনো যায়। এই দুই স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ৩০ কি মি।

আকাশ পথে: কেরালার এই মন্দিরে যেতে গেলে প্লেনে করে তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে পৌঁছন। তার পর সেখান থেকে গাড়ি, বাস অথবা ট্রেনে চেপে পৌঁছতে পারেন শকুনি মামার মন্দিরে।

এর পরের বার তা হলে কেরালায় ছুটি কাটাতে গেলে একটু অন্য ধরনের এই মন্দির ঘুরে দেখে আসবেন না কি !

আরও পড়ুন: কেরালার এই মন্দিরে জিন্স-স্কার্ট সব নিষিদ্ধ, মন্দিরে প্রবেশের জন্য পরতে হবে এই পোশাক

লেখকের সম্পর্কে জানুন
Debnil Saha
Debnil Saha is working as a Consultant in Eisamay.com, Bengali News website of the Times Internet, a product of the Times of India Group.... আরও পড়ুন

পরের খবর