ত্বকে অ্যাকনে, ব্রেকআউটের সমস্যা না হয়। কিন্তু তাহলেও নানা সময়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় আমাদের। তখন মনে হয়, ত্বকের এত যত্ন নেওয়ার পরেও কেন সমস্যা হতেই থাকে? আসলে ত্বকের যত্ন নিয়ে ভুল ধারণা আমাদের মধ্য়ে প্রচলিত রয়েছে। সেই ভুল ধারণা বা মিথে বিশ্বাস করে থাকি। তা মেনে চলি, তখন আসলে ক্ষতি করি নিজেদের ত্বকের। জেনে নিন সেরকম কয়েকটি মিথ বা প্রচলিত ধারণার কথা…(মূল ছবি- istock)
তৈলাক্ত ত্বকে ময়শ্চারাইজার লাগানোর প্রয়োজন নেই?
ময়শ্চারাইজার সব ত্বকের জন্যেই প্রয়োজন। কারণ স্কিন কেয়ার রুটিনে অবশ্যই ময়শ্চারাইজার যোগ করা প্রয়োজন। প্রতিদিন ফেস ক্লিন আপ করার পরে আপনার ত্বকে টোনার ও ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়া দরকার। ময়শ্চারাইজার আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
এই কথা অনেকেই মনে করেন যে, তৈলাক্ত ত্বকে হয়তো ময়শ্চারাইজার লাগানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তা সত্যি নয়। বরং আপনার তৈলাক্ত ত্বকেরও প্রয়োজন বিশেষ যত্ন। ময়শ্চারাইজার লাগানো প্রয়োজন। কারণ ত্বকের হাইড্রেশন দরকার। ময়শ্চারাইজার আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
তাই ময়শ্চারাইজার লাগানো বন্ধ করলে আসলেই আপনি আপনার ত্বকের ক্ষতি করবেন। ওয়াটার বেসড, অয়েল ফ্রি ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। তাহলেই আপনার ত্বক ভালো থাকবে।
ঘরে থাকলে সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই!
এই কথাটা আমাদের মধ্য়ে প্রচলিত আছে। আর এর থেকে বড় ভুল ধারণা নেই! আমরা অনেকেই মনে করি যে, শুধুমাত্র বাইরে বেরোলেই বোধহয় সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন। মেঘলা দিনেও হয়তো সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই!
এই কথা যদি আপনিও ভেবে থাকেন, তাহলে বলে রাখি, ইতিমধ্যেই ত্বকের ক্ষতি করেছেন, আর করবেন না। আপনি ঘরে থাকুন বা মেঘলা দিনে বাইরে বের হন, সব সময় ত্বকে সানস্ক্রিন লাগানো দরকার। সূর্যরশ্মির খারাপ প্রভাব থেকে ত্বককে বাঁচানোর জন্য ত্বকের সঠিক যত্ন নিন।
ক্লে মাস্ক মুখে শুকনো পর্যন্ত রেখে দিতে হবে?
না! আবারও বলছি, একদম না! এর থেকে বড় ভুল আর কিছু হতে পারে না। আপনার ত্বকের ক্ষতি করার জন্য আপনার এই ভুলটিই যথেষ্ট। তাই এই কাজটি করবেন না। শুধু ক্লে মাস্ক কেন, বরং অন্যান্য যেসব মাস্ক আমরা মুখে ব্যবহার করে থাকি, তার জন্য় একটি নির্দিষ্ট সময় আগে থেকেই নির্ধারিত করা থাকে।
ফেস মাস্ক ব্যবহার করার আগে তার ডেসক্রিপশন দেখে নিন। ঠিক কতটা সময় পর্যন্ত ফেস মাস্ক মুখে রাখা প্রয়োজন, সেখানেই উল্লেখ করা থাকবে। অনেকেই মনে করেন, মুখে মাস্ক না শুকনো পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। কিন্তু এই কাজ করবেন না। ১০-১৫ মিনিটের বেশি কোনও মাস্কই মুখে রাখা উচিত নয়।
গরম জলে মুখ ধোওয়া ত্বকের জন্য ভালো?
না! কখনও না! এই কাজটি ভুলেও করবেন না। তাহলেই বিপদ। সবসময় ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধোওয়ার চেষ্টা করুন। তাই বলে বরফ জলে মুখ ধোওয়ার পরামর্শ আমরা দিচ্ছি না। একইভাবে গরম জলেও মুখ ধোবেন না। বরং, সাধারণ জলে মুখ ধুয়ে নিন।
এখন তো বেশ গরম, তাই দিনে কয়েকবার সাধারণ জলে মুখ ধুতে পারেন। এতে ত্বক ভালো থাকে। গরম জলে মুখ ধুলে তা আপনার ত্বকের ক্ষতি করে। ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে।
তবে গরম জলের ভাপ নেওয়া খুবই ভালো। আপনি ফেস স্টিম নিতে পারেন। এর ফলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়। তাই বলে মুখে সরাসরি গরম জল দিয়ে ধোবেন না।
মুখ না ধুলে ব্রণ হয়
অ্যাকনে হওয়ার পিছনে হাইজিনের ভূমিকা অনেক নয়। তবে তেল উৎপাদন, ব্যাকটেরিয়া, বন্ধ পোরস এবং প্রদাহের কারণে অ্যাকনে হতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি খুব দুশ্তিন্তা করেন ও হরমোনের সমস্যাতেও অ্যাকনে হয়।
সেই পরিস্থিতিতে আপনি যত পরিষ্কার করেই মুখ ধুয়ে নিন না কেন, আপনার মুখে ব্রণ কমে যাবে না। তাই বলে মুখ ধোওয়া বন্ধ করে দেবেন না। প্রতিদিন অন্তত দুবার ক্লিনজিং করুন। তারপর টোনার লাগিয়ে নিন। এবং ময়শ্চারাইজ করে নিন। আপনার ত্বক ভালো থাকবে।
ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধরণ তথ্যের জন্য। এটি কোনও ওষুধ ও চিকিৎসার অঙ্গ নয়। আরও বিস্তারিত জানতে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
আরও পড়ুন: জল খেলেই কি ভালো থাকে ত্বক? চাঞ্চল্যকর সত্যিটা শুনলে অবাক হবেন আপনিও