তেল মালিশ করার ফলে চুলের গোড়ায় এবং স্ক্যাল্পে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মেটে। জেল্লাও হয় দেখার মতো। কোন কোন তেল মালিশ করলে চুলের বৃদ্ধি হয় তাড়াতাড়ি, জেনে নিন বিস্তারিত…(ছবি-istock)
নারকেল তেল
এমন কোনও বাঙালি পরিবার হয়তো নেই, যারা নারকেল তেল ব্যবহার করেন না। ঘরোয়া রূপটানে বছরের পর বছর ধরে নারকেল তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এটি।
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নারকেল তেল চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মেটায়। চুলের জেল্লাও হয় দেখার মতো। চুলের বৃদ্ধিও খুব সুন্দর হয়।
নারকেল তেলের অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট গুণেই চুলের হাজার সমস্যা সমাধান হয়। ‘ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন’জার্নালে প্রকাশিত ২০১৮ সালের গবেষণায় নারকেল তেলের এই গুণের উল্লেখ পাওয়া যায়।
আমন্ড অয়েল
আমন্ড অয়েল চুলের জন্যে উপকারী ভূমিকা পালন করে। আমন্ড অয়েলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই-এর সন্ধান পাওয়া যায়। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসেবে ভিটামিন ই-এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই উপাদানটি স্ক্যাল্পের প্রদাহও কমায়।
স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও রাখতেও ভিটামিন ই-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়। স্বাভাবিক ভাবেই চুলের বৃদ্ধিও হয় দেখার মতোই। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা পত্রে আমন্ড অয়েলের এই গুণের উল্লেখ পাওয়া যায়।
আর্গন অয়েল
এই তেলের এতটাই গুণ যে, একে তরল সোনাও বলা হয়। আর্গন অয়েলের গুণে চুলের বৃদ্ধি হয় দেখার মতোই। চুলের জেল্লাও উপচে পড়ে। আর্গন গাছের ফলে বাদামজাতীয় দানা পাওয়া যায়। ফলের শক্ত খোলসের ভিতরেই এই দানা মেলে। এর শাঁসের নির্যাস থেকে তৈরি হয় আর্গন অয়েল।
আর্গন অয়েলে আছে উপকারী ভিটামিন ই, এ এবং সি। অ্য়ান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডে ঠাসা তেল চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। চুলের গোড়ায় পুষ্টির জোগান দেয়। চুলের অক্সিডেটিভ ড্যামেজও আটকায়। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা পত্রে আর্গন অয়েলের এই গুণের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল রুক্ষ, শুষ্ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। ফলে, চুলের জেল্লা বাড়ে। চুলের বৃদ্ধি দেখেও সবাই মুগ্ধ হয়। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়।
তাই অলিভ অয়েল মাসাজে চুলের নানা সমস্যা মুহূর্তেই সমাধান হয়।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল - এই দুই তেল আপনি আলাদা আলাদা ভাবে চুলে মালিশ করতে পারেন। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো তেল নিয়ে তা সামান্য পরিমাণে গরম করে নিন। আপনার স্ক্যাল্পে তুলোর সাহায্যে লাগিয়ে নিন। তারপর হাতের আঙুল দিয়ে ধীরে ধীরে মালিশ করুন। এতে স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। চুলের বৃদ্ধিও হবে দেখার মতোই।
আর্গন অয়েল - পরিমাণ মতো আর্গন অয়েল নিন। তা আঙুল দিয়ে স্ক্যাল্পে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ধীরে ধীরে মাসাজ করুন।
অলিভ অয়েল - অলিভ অয়েলের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম পালন করুন। স্ক্যাল্পে অলিভ অয়েল ধীরে ধীরে মালিশ করে নিন।
তেল মালিশ করার পরে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন এবং শ্যাম্পু করে ফেলুন।
স্ক্যাল্পের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা থাকলে বা চিকিৎসা চললে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও তেল ব্যবহার করবেন না।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, এটি কোনও ওষুধ বা চিকিৎসার অঙ্গ নয় আরও বিস্তারিত জানতে হলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
আরও পড়ুন: কয়েক সপ্তাহে চুল পড়া বন্ধ হয়ে টাকে নতুন চুল গজাবে, এই ৪ খাবার আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন
আরও পড়ুন: ঘন ঘন শ্যাম্পু বদল করলেই কি চুলের সব সমস্যা মেটে? কী বলছে বিশেষজ্ঞমহল