হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন থানকুনি পাতার (Gotu Kola) কথা বলা হচ্ছে। এর উপকারিতার কথা আমাদের দেশের সকলেই জানেন। তাছাড়াও খ্রিষ্টপূর্ব সেই ১৭ শতক থেকে আফ্রিকা, জাভা, সুমাত্রা, ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা এবং ফিলিপিন্সে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে থানকুনি পাতা। একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো জটিল ত্বকের রোগ সারিয়ে তুলতে যেমন এই প্রাকৃতিক উপাদানটির জুড়ি মেলা ভার। এই গুল্মটিতে উপস্থিত একাধিক উপকারী খনিজ এবং ভিটামিন মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়।
প্রাচীন আর্য়ুবেদ শাস্ত্রে এই পাতার গুণাগুণ বর্ণিত রয়েছে। শরীরকে নানা দিক দিয়ে সুস্থ রাখতে এই পাতার জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিন এই পাতার রস খেতে পারলে অন্যরকম কোনও চিন্তা থাকবেই না। দেখে নিন (Gotu Kola) থানকুনি পাতার উপকারিতা।
থ্রম্বোসিসের সমস্যায় সমাধান
অনেকের থ্রম্বোসিসের সমস্যা থাকে। থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত শুদ্ধ থাকে। অনেকের নানা শারীরিক সমস্যার কারণে রক্তপ্রবাহে সমস্যা হয়। এই ভেষজ শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়। ফলে অনেক সমস্যার উপশম হয়। হাত ফুলে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া এসব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেওয়া একদম উচিত নয়। কারণ এর ফলে হার্ট, কিডনি ও মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। অন্য অঙ্গও কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই এই বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল করে রাখবেন। থানকুনি পাতার মধ্যে থাকে নানা রকম খনিজ উপাদান, যা তাড়াতাড়ি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। যে কারণে অনেক জটিল রোগ থেকে খুব দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
শরীরের ভেতরের জ্বালা কমায়
কোনও কারণে শরীরের ভেতরে কোনও ক্ষত হলে নানা রকম সমস্যা হয়। জ্বর, ক্লান্তি এসব আসতেই পারে। এর সঙ্গে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এমনকী খিদে কমে যাওয়া, পেশির ব্যথা এগুলোও থাকে। থানকুনি পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি উপাদান। যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি জ্বালা, যন্ত্রণা কমে যায়। এছাড়াও ক্লান্তি ভাব দূর হয়। সেই সঙ্গে অনেক রকম ইনফেকশন থেকেও দূরে রাখে। পেটের যে কোনও রোগে থানকুনি পাতা খুব ভালো। আমাশয় থেকে আলসার সেরে যায় এই পাতার গুণেই। আর নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। ক্রনিক আমাশয়ের ক্ষেত্রে খুবই ভালো থানকুনি পাতা।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে
নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস নামের একটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে ব্রেনসেল ভালোভাবে কাজ করতে পারে। স্মৃতিশক্তির উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়ে চোখে পড়ার মতো। এই কারণেই তো ছোট বাচ্চাদের থানকুনি পাতার রস খাওয়ানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকী অ্যালঝাইমার্সের ওষুধও তৈরি হয় এই পাতার রস থেকেই। যাঁরা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের জন্য খুব ভালো থানকুনি পাতার রস। থানকুনি স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে মানসিক চাপ আর অস্থিরতা দুই কমে। এর ফলে অ্যাংজাইটির আশঙ্কাও কমে যায়।
ঘুমের সমস্যা
ঘুম হয় না? রাতের পর রাত জেগে কাটান? তাহলে প্রতিদিন সকালে উঠে থানকুনি পাতা ভেজানো জল খান। স্নায়ু শিথিল হবে। ঘুম আসবেই।
ডিটক্সিফিকেশন
গাজর কিংবা পাতিলেবুর রস শরীরের ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। কিন্তু থানকুনি পাতা যে খুব ভালো ডিটক্সিফিকেশন করে তা কি জানতেন? প্রতিদিন থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু, মিশিয়ে খান। যাবতীয় টক্সিন বেরিয়ে যাবে। শরীর থাকবে ফুরফুরে।