অ্যাপশহর

থানকুনি পাতার রস খালি পেটে রোজ, এক সপ্তাহ খেয়ে দেখুন! উপকার পাবেন...

থানকুনি আমাদের অতিপরিচিত পাতা। পুকুরপাড় বা জলাশয়ে হামেশাই দেখা মেলে। কথায় বলে, পেট ভালো থাকলে মনও ফুরফুরে থাকে। চিকিত্‍সকরাই বলছেন, থানকুনি পাতার এমন ভেষজ গুণ রয়েছে, মিয়মিত খেতে পারলে, পেটের অসুখে কোনও দিনও ভুগতে হবে না।

EiSamay.Com 11 Jan 2021, 8:39 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চটজলদি রোগ নিরাময়ের জন্য আমরা অনেকেই অ্যালোপ্যাথির দ্বারস্থ হয়ে যাই। কষ্ট লাঘবে তখন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টা মাথায় থাকে না। বিশেষ করে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরার মতো পেটের রোগে অ্যান্টিবায়োটিকও চলে আকছার। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওই সব ওষুধগুলির দামও অনেক সময় নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে হয়ে যায়। অথচ আমাদের হাতের কাছেই কিছু ভেষজ গাছ রয়েছে, যেগুলি অত্যন্ত অল্প দামে বা একটু খুঁজলে বিনামূল্যেও পাওয়া যায়, আমরা জানি না। অনেক সময় জেনেও, বিশ্বাস হয় না। তেমনই একটি ভেষজ উদ্ভিদ হল থানকুনি।
EiSamay.Com what is gotu kola information about gotu kola plants
থানকুনি পাতার রস খালি পেটে রোজ, এক সপ্তাহ খেয়ে দেখুন! উপকার পাবেন...


থানকুনি আমাদের অতিপরিচিত পাতা। পুকুরপাড় বা জলাশয়ে হামেশাই দেখা মেলে। কথায় বলে, পেট ভালো থাকলে মনও ফুরফুরে থাকে। চিকিত্‍সকরাই বলছেন, থানকুনি পাতার এমন ভেষজ গুণ রয়েছে, মিয়মিত খেতে পারলে, পেটের অসুখে কোনও দিনও ভুগতে হবে না। শরীর-স্বাস্থ্য তো সতেজ থাকেই, ছোট থেকে খাওয়াতে পারলে বুদ্ধিরও বিকাশ হয়। দেখে নেওয়া যাক, থানকুনি পাতার ভেষজ গুণগুলি।

যে কোনও পেটের রোগ থেকে মুক্তি

পেটের রোগ নির্মূল করতে থানকুনির বিকল্প নেই। নিয়মিত খেলে যে কোনও পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পেট নিয়ে কোনও দিনও সমস্যায় ভুগতে হয় না। Asiaticoside নামে একটি উপাদান রয়েছে থানকুনি পাতায়, যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে স্টমাক আলসারের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, পেট খারাপ বা ডায়রিয়ার চিকিৎসাতেও (Benefits of Thankuni Leaves) অনেক সময় এই পাতাটিকে কাজে লাগানো হয়ে যাকে কোথাও কেটে গেলে সেখানে যদি অল্প করে থানকুনি পাতা (Thankuni Leaf) থেঁতো করে লাগানো যায়, তা হলে দারুণ উপকার পাবেন। এই পাতায় রয়েছে Saponins নামে একটি উপাদান, যা ক্ষতস্থানে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়, যে কারণে ক্ষত শুকিয়ে যেতে সময় লাগে না। ক্ষতস্থানে কোনও ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

ত্বকের সতেজতা বৃদ্ধি পায়

শুধু পেটই নয়, আলসার, এগজিমা, হাঁপানি-সহ নানা চর্মরোগ সেরে যায় থানকুনি পাতা খেলে। ত্বকেও জেল্লা বাড়ে। ত্বকের ওজ্জ্বল্য বাড়ায় থানকুনি পাতা ৷ প্রতিদিন থানকুনি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে বড় বড় রোগের থেকে জয় পাওয়া সম্ভব ৷ অ্যাংজাইটি এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমায়। এমন ধরনের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাদের নিয়মিত করে খেতে হবে থানকুনি পাতার রস, তা হলেই মিলবে উপকার। কারণ, এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা Serotonin হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যে কারণে Cortisol, মানে স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে অ্যাংজাইটি এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এমনকী, স্ট্রেস লেভেলও যেমন কমে, তেমনই বারে-বারে অ্যাংজাইটি অ্যাটাকের কবলে পড়ার আশঙ্কাও কমে। মৃতকোষের ফলে চামড়ায় অনেক সময়ই শুষ্ক ছাল ওঠে। রুক্ষ হয়ে যায়। থানকুনি পাতার রস মৃতকোষগুলিকে পুনর্গঠন করে ত্বক মসৃণ করে দেয়।

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে

থানকুনি পাতায় থাকে Bacoside A ও B। Bacoside B মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে ও রক্ত চলাচল বাড়ায়। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং Pentacyclic Triterpenes নামক একটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে ব্রেন সেলের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে স্মৃতিশক্তির উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়ে চোখে পড়ার মতো। এই কারণেই তো ছোট বাচ্চাদের থানকুনি পাতার রস (Centella Asiatica) খাওয়ানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বয়স্ক মানুষরাও যদি নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খান, তা হলে শেষ বয়সে অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতেও সাহায্য করে।

অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়

রাতে কি ঠিক মতো ঘুম হয় না? তা হলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন থানকুনি পাতা। দেখবেন, উপকার (মিলবে একেবারে হাতে-নাতে। কারণ, এতে রয়েছে একাধিক অ্যান্টিঅক্সিডান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা স্ট্রেস লেভেল কমায়। সঙ্গে নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত রাখে। ফলে অনিদ্রার মতো সমস্যা দূরে পালাতে সময় লাগে না। বয়স বাড়লেও, যৌবন ধরে রেখে দেয় থানকুনি পাতার রস। প্রতিদিন একগ্লাস দুধে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে, চেহারায় লাবণ্য চলে আসে। আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়। সকাল-সকাল খালি পেটে থানকুনি পাতার রস খেলে যেমন উপকার মেলে, তেমনই কাঁচা থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলেও সমান উপকার পাওয়া যায়। ইচ্ছে হলে খেতে পারেন থানকুনি পাতার পেস্ট অথবা বড়াও। আবার এই পাতা দিয়ে তৈরি পানীয় খেলেও একই উপকার মেলে।

শরীরকে বিষমুক্ত করে

নানা ভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করা টক্সিক উপাদানদের যদি সময় থাকতে-থাকতে বের করে দেওয়া না যায়, তা হলে কিন্তু চিন্তার বিষয়। কারণ, সেক্ষেত্রে এই সব ক্ষতিকর উপাদানগুলির কারণে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এখন প্রশ্ন হল, টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বের করবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন, থানকুনি পাতার উপরে (Thankuni Pata)। প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠা মাত্র ২ চামচ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে যদি ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে রক্তে মিশে থাকা টক্সিক উপাদানগুলি প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।

পরের খবর

Lifestyleসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল