ইউরিক অ্যাসিড বলতেই অনেকে কেবল ব্যথার কথা ভাবেন। আসলে ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে গিয়ে জমতে পারে। এবার সেই ইউরিক অ্যাসিড জমে গিয়ে সেই জায়গায় ব্যথা হয়। পাশাপাশি জায়গাটা ফুলে যায়, এমনকী লাল হয়ে যেতে পারে। তাই এই অসুখটি নিয়ে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যেতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে ইউরিক অ্যাসিড মানেই কেবল কিন্তু জয়েন্টে ব্যথা (Joint Pain) নয়। ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে তা কিডনি স্টোন (Kidney Stone) হিসাবেও জমতে পারে। এমনকী এর থেকে শরীরে সমস্যা তৈরি হয়। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই নিয়ে সতর্ক হতে হবে।
এই প্রসঙ্গে আমরি হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, কিডনি স্টোন এখন আকছার দেখতে পাওয়া যায়। এবার কিডনি স্টোনের অনেক কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে একটি হল ইউরিক অ্যাসিড।
কী কী সমস্যা হতে পারে?
এই প্রসঙ্গে ডা: পাল জানালেন, কিডনি স্টোন থেকে নানা সমস্যা হওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে ব্যথার সমস্যাই সবথেকে বেশি থাকে। এছাড়া কিছু কিছু সময়ে কিডনি স্টোন ইউরিন বেরনোর রাস্তায় গিয়ে জমতে পারে। তখনই মূল সমস্যা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে কিডনি বিকল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই সতর্ক থাকা দরকার।
কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক পাল জানালেন, এক্ষেত্রে দুটি ক্লাসিক্যাল লক্ষণ (Kidney Stone Symptoms) রয়েছে যেমন-
১. পেটে বা পিঠে ব্যথা
২. ইউরিনে রক্ত
এই দুই লক্ষণ দেখা দিলেই বুঝতে হবে যে সমস্যা হচ্ছে। এবার এই ব্যথা কিন্তু অন্যান্য যন্ত্রণার তুলনায় আলাদা। ব্যথাটা অনেকদিন ধরে হয়। এমনকী ব্যথা থাকেও খুব বেশি। এছাড়া সংক্রমণ থাকলে জ্বর হতে পারে।
কাদের সমস্যা বেশি?
এই সমস্যা যে কোনও বয়সে হতে পারে বলে জানালেন ডা: পাল। এছাড়া কেমোথেরাপি চললে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। এছাড়া বারবার ইউরিন ইনফেকশনে (UTI) আক্রান্ত মানুষেরও হয় এই সমস্যা। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয় নিয়ে সতর্ক হতে হবে।
রোগ নির্ণয় কী ভাবে?
এই রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রথমে রোগীর হিস্ট্রি নিতে হয়। তারপর প্রয়োজন মতো করতে হয় সিটি বা এমআরআই। এই দুই টেস্টেই মোটের উপর ধরা পরে যায় যে কিডনিতে স্টোন রয়েছে কিনা। তবে কিডনিতে কী ধরনের স্টোন রয়েছে, এটা বোঝার জন্য আপনাকে একটু সময় দিতে হবে। কারণ অপারেশন ব্যতিত সাধারণত বোঝা যায় না যে কী ধরনের স্টোন হয়েছে।
চিকিৎসা কী?
এক্ষেত্রে স্টোন আকারে ছোট হলে চিকিৎসা (Uric Acid Stones Treatment) সাধারণ। এক্ষেত্রে সাধারণ কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। বেশি পরিমাণে জলপান করতে বলা হয়। এভাবেই অনেক সময় স্টোন বেরিয়ে যায়। তবে অনেকের স্টোন হয় বড় আকারের। এমনকী একাধিক স্টোন থাকতে পারে। এই অবস্থায় প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তখন অপেক্ষা না করে সার্জারি করে নেওয়াই মঙ্গল। এই সার্জারির পর রোগী খুবই দ্রুত ঠিক হয়ে যান।
বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।