অ্যাপশহর

ডিমেনশিয়া রুখতে সবচেয়ে মূল্যবান সামাজিক সচেতনতা

সিংহভাগ রোগীর ক্ষেত্রে সামান্য লক্ষণগুলিকে সাধারণত অবজ্ঞাই করা হয়। ফলে রোগীর নিজের জীবনযাত্রায় ঘোর অবনতি তো হয়ই, নিকট পরিজনের রোজনামচাও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।

EiSamay 14 Sep 2020, 8:03 am
এই সময়: অসুখটা সারে না ঠিকই। কিন্তু তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে লাগাতার অবনতি হয়ে চলায় অনেকটাই রাশ টানা যায়। কিন্তু মুশকিল হল, সচেতনতার অভাবে স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়া অধিকাংশ বয়স্ক মানুষের যখন ধরা পড়ে, তখন তা আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে।
EiSamay.Com social awareness is the most important for dementia patients
ডিমেনশিয়ায় সামাজিক সচেতনতা


স্মৃতিভ্রংশ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত একটি অনলাইন আলোচনায় উঠে এল এ সব কথাই। বিশেষজ্ঞরা এ জন্য আমজনতা বা সমাজকেই শুধু নয়, চিকিৎসক সমাজের একাংশের সচেতনতাহীনতাকেও দায়ী করছেন। অ্যালঝেইমার্স অ্যান্ড রিলেটেড ডিজিজেস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া ও মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন-কলকাতার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'আনফরগটেন জার্নিজ, কেয়ারিং ফর পার্সনস উইথ ডিমেনশিয়া' শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ অমিতাভ ঘোষ ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রাম।

অসুখটা আদতে কেমন? রোগী না তাঁর পরিচর্যাকারী নিকটাত্মীয়, কার কাছে বেশি যন্ত্রণার? কী ভাবে বয়সকালে ডিমেনশিয়ার শিকারদের একটু ভালো রাখা যায়? সঞ্চালনার শুরুতেই এই সব সাধারণ প্রশ্নমালা সাজিয়ে দেন ডিমেনশিয়া কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের নীলাঞ্জনা মৌলিক। দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বুঝিয়ে বলেন, ভুলে যাওয়া মানেই স্মৃতিভ্রংশ নয়। কিন্তু সেই ভুলে যাওয়ার প্রবণতার মধ্যে যদি অস্বাভাবিকতা থাকে (যেমন আলমারিতে চশমা কিংবা জুতোর র‍্যাকে চাবি বা ফ্রিজে মোবাইল রেখে ভুলে যাওয়া), তখন সন্দেহটা বাড়ে।

অমিতাভ বলেন, 'বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের এমন কিছু কোষ ও নেটওয়ার্ক শুকিয়ে যায় ডিমেনশিয়ায়, যার জেরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্মৃতি ও চিন্তাভাবনা, যা দৈনন্দিন রুটিনকে মারাত্মক ব্যাহত করে। এই ক্ষতি আচমকা হয় না। ২৫, ৩০ বা ৪০ বছর ধরে খুব ধীরে ধীরে এই অসুখ থাবা চওড়া করে। বহিঃপ্রকাশ ঘটে বয়সকালে। এবং ক্রমাগত তা বাড়তেই থাকে আমৃত্যু।' তিনি জানান, ৫০-৭০% স্মৃতিভ্রংশের নেপথ্যেই থাকে অ্যালঝেইমার্স। তবে স্ট্রোক, মাথায় আঘাত এবং অন্য কিছু অসুখেও স্মৃতিভ্রংশ হতে পারে।

এ অসুখে প্রবীণ ব্যক্তিরা অনেক সময়ে স্ত্রী বা স্বামীকে বা ছেলেমেয়েকেও চিনে উঠতে পারেন না। অতি স্বাভাবিক ব্যাপারও গুলিয়ে ফেলেন। জয়রঞ্জন বলেন, 'যাঁরা সুস্থ, প্রিয়জনকে এ ভাবে দেখাটা তাঁদের জন্যও অত্যন্ত যন্ত্রণার। আমার মা যখন ডিমেনশিয়ার কবলে পড়ে আমার জন্মদিন ভুলে গিয়েছিলেন, খুব কষ্ট হয়েছিল।' তাঁর বক্তব্য, পরিচর্যাকারী নিকটাত্মীয়ের কাউন্সেলিং অত্যন্ত জরুরি। তবেই তিনি ভালো ভাবে যত্ন নিতে পারবেন স্মৃতিভ্রংশের শিকার প্রিয়জনের।

পরের খবর

Lifestyleসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল