Face Blindness: আক্রান্ত হলিউড-বলিউডের তারকারাও, চেনা মুশকিল পরিচিতকেও! বিরল এই রোগ সম্পর্কে কী জানাচ্ছেন চিকিৎসক
Face Blindness Symptoms: মানুষের মুখ চিনে ফেলতে বেশিরভাগ মানুষের কোনও অসুবিধে হয় না। তবে অনেকে ভোগেন বিরল Face Blindness or Prosopagnosia রোগটিতে। এই রোগে আক্রান্ত স্বয়ং হলিউড অভিনেতা Brad Pitt ও অভিনেত্রী Shenaz Treasury. এই রোগটির নানা দিক সম্পর্কে জানাচ্ছেন চিকিৎসক।
বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিট ও ইসক ভিসক ছবির অভিনেত্রী শেহনাজ ট্রেজারি ভুগছেন একই রোগে। এক্ষেত্রে তাঁদের দুজনেরই রয়েছে ফেস ব্লাইন্ডনেস রোগটি। আর এই দুই তারকার কথা সামনে আসার পর থেকেই মানুষ এই অসুখটি সম্পর্কে জানতে চাইছেন। আজ সেই উত্তরই দেওয়া হবে।
আসলে এই রোগটির নাম হল Face Blindness. এক্ষেত্রে নামেই রোগটি সম্পর্কে অনেকটাই বলে দেওয়া রয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা অন্যদের মুখ চিনতে ভুল করেন। তবে ফেস ব্লাউন্ডনেস রোগটির একটি ডাক্তারি নাম রয়েছে। এই রোগটির বিজ্ঞানসম্মত নাম হল Prosopagnosia. এক্ষেত্রে একদম ছোট বয়স থেকেই রোগটি হতে পারে। আর বাকি জীবন রোগী এই অসুখটি নিয়েই বড় হতে থাকেন। এই রোগের কারণে মানুষের দৈনন্দিন জীবনও খারাপ হয়ে যেতে পারে।
এই রোগে আক্রান্ত রোগী অনেকসময় নিজের পরিবারের মানুষজনকেও চিনতে পারেন না। এমনকী অনেক ক্ষেত্রে তো স্ত্রী, স্বামী, সন্তানদেরও চেনা সম্ভব হয় না। এই কারণে মানুষগুলি সামজিক নানা অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলেন। এমনকী এই কারণে তাঁদের মধ্যে উৎকণ্ঠাও দেখা দিতে পারে। এমনকী তাঁরা নিজেদের মতো করে সম্পর্কও তৈরি করেন না। কাজ করার সময়ও তাঁদের মধ্যে অনেক অনীহা দেখা যায়। এই মানুষগুলি মুখের অভিব্যক্তি বুঝে উঠতে পারেন না। এমনকী অনেকসময় তো নিজের মুখ আয়নায় দেখে বা ছবিতে দেখে চিনতে পারেন না এই ব্যক্তিরা। (ছবি সৌজন্যে: ইনস্টাগ্রাম)
এই সমস্যার বিভিন্ন ধরন
এই রোগের কয়েকটি ধরন রয়েছে-
১. ডেভেলমেন্টাল- এক্ষেত্রে একটি মানুষের মস্তিষ্কে কোনও ড্যামেজ না থাকা সত্ত্বেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই তাঁরা মুখ চিনতে পারেন না। এর পিছনে অনেক সময়ই জিনের কারসাজি থাকতে পারে।
২. অ্যাকোয়ার্ড- এটাও অনেকসময় হয়। অনেক ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণে মস্তিষ্কে আঘাত, স্ট্রোক থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও এই ঘটনা বিরল। বেশিরভাগ সময়ই খুব কম মানুষের এই সমস্যা হয়।
কী কী হতে পারে?
এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই মানুষ মুখ চিনতে পারেন না। এবার কেউ এসে হয়তো দরজায় আপনার বেল টিপল। আপনি বেরিয়ে এসে মানুষটিকে না চিনতেও পারেন। কিন্তু সে আপনার খুব পরিচিত হতে পারেন। এক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় যে মানুষগুলি ফিল্ম বা গল্পের চরিত্র মনে করতে পারছেন না। এমনকী নিজেকে চিনতে পারছেন না আয়নাতে বা ছবিতে। এবার এমন কোনও লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এমনকী চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসা কী?
এই রোগের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এক্ষেত্রে কয়েকটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম রয়েছে যার মাধ্যমে রোগটির চিকিৎসা (Treatment) করা সম্ভব। এক্ষেত্রে মানুষ এই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে একটু একটু করে চিনতে পারেন মানুষের মুখ। এক্ষেত্রে আরও একটি কৌশল রয়েছে। এই অবস্থায় রোগীকে বলা হয় যে আপনি মানুষের গলার আওয়াজ চেনার চেষ্টা করুন। এমনকী তাঁদের হাঁটার স্টাইল, জামাকাপড় পরার বিষয়টিও মাথায় রাখতে পারেন।
কী ভাবে বোঝা যাবে কোনও শিশুর এই সমস্যা রয়েছে?
এই কয়েকটি উপায়ে বোঝা সম্ভব-
১. হঠাৎ করে কোনও পরিচিত মানুষকে চিনতে পারছে না বাচ্চা।
২. অনেক মানুষের মধ্যে নির্দিষ্ট করে কিছু মানুষকে চিনতে পারছে না।
৩. পাবলিক প্লেসে বেশিরভাগ সময়ই তাঁকে আপনাকে খুঁজে নিতে হয়।
৪. বন্ধুদের থেকে দূরে থাকে এই বাচ্চারা
৫. তাঁরা কোনও গল্প বা সিনেমার স্টোরিলাইন চিনতে পারে না।
এবার এই ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে আনুন তাকে। তবেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।