Cooking Oil: কড়াইতে তেল দেওয়ার পর ধোঁয়া না ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন? রান্নার এই ভুলেই রয়েছে জটিল রোগের মূল...
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোন তেল (Cooking Oil) ব্যবহার করা হচ্ছে, আপনি কতটা রান্না করছেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। সামগ্রিকভাবে, অতিরিক্ত রান্না করা তেল আপনার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক খাবারের জন্য তেলকে কী ভাবে ব্যবহার করা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ থাকতে হলে অনেক সময় আমাদের অনেক কিছুরই যত্ন নিতে হয়। যার মধ্যে তেলের (Cooking Oil) ব্যবহার নিয়ে প্রায়ই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে যেখানে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং মেটাবলিক ডিজঅর্ডারের মতো ঘটনা বাড়ছে, সেখানে কোন তেল (Cooking Oil) বা ঘি বেশি উপকারী বা কোনটা কম ক্ষতিকর তা নিয়ে তর্ক করাও যুক্তিযুক্ত। তবে আজ বিতর্কের বিষয় এই নয় যে কোন তেল বা ঘি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? বরং এটা হল যে তেল বা ঘি আসলে কতটুকু রান্না করা উচিত যাতে ক্ষতিকারক না হয়ে ওঠে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
আপনি প্রায়শই লক্ষ্য করেছেন, আপনি যখনই খাবার রান্না করার জন্য তেল (Cooking Oil) গরম করেন, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়া নির্গত হয় না। বরং কিছুক্ষণ আভেনে রেখে দিলে তা থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। আমাদের ধারণা, গরম কড়াইতে তেল দেওয়ার পর যত ক্ষণ না ধোঁয়া ওঠে ততক্ষণ ফোড়ন বা মাছ–সবজি দিতে নেই৷ তা না হলে রান্নায় কাঁচা তেলের গন্ধ থেকে যায়৷
আসলে এটা ভুল ধারণা! প্রতিটি তেলের নির্দিষ্ট স্মোক পয়েন্ট থাকে। অর্থাৎ, যে তাপমাত্রায় তেল (Cooking Oil) ভেঙে গিয়ে ধোঁয়া ওঠে৷ এই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যায় উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড৷ এ ছাড়া ভাঙে ভিটামিন৷ ফ্রি–র্যাডিক্যাল্স নামের ক্ষতিকর উপাদান শুরু হয়৷ যা হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অ্যালঝাইমার, ক্যানসার-সহ জটিল রোগের মূলে যার নির্ভুল হাত আছে৷ এই স্মোকিং পয়েন্ট সম্পর্কে টাইমস নাউ ডিজিটালের সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে, ফোর্টিস হাসপাতালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান রিঙ্কি কুমারী জানিয়েছেন, তেল একটি অ-মেরু রাসায়নিক উপাদান। যা হাইড্রোকার্বন দ্বারা গঠিত এবং এটি হাইড্রোফোবিক এবং লিপোফিলিক। অর্থাৎ তেল জলে মিশে যায় না।
ঘরের তাপমাত্রা এই সমস্ত তেল অসম্পৃক্ত লিপিড আকারে বা তরল আকারে থাকে। কিন্তু যত তাড়াতাড়ি এরা উত্তপ্ত হয়, সময়ের সঙ্গে খারাপ হতে শুরু করে। এর কারণ সময়ের সঙ্গে পুষ্টি এবং ফাইটোকেমিক্যাল সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হতে শুরু করে। অন্যদিকে, তেল খুব গরম হয়ে গেলে, এটি ফ্রি র্যাডিকেল নির্গত করতে শুরু করে যা থেকে বিষাক্ত গ্যাসের জন্ম নেয়।
অতিরিক্ত তেল (Cooking Oil) গরম হলে বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তেলের অবনতি হলে প্রথমে হাইড্রোপেরক্সাইড তৈরি হয় এবং তারপরে এটি অ্যালডিহাইডকে পরিণত করে। অ্যালডিহাইড একটি বিষাক্ত রাসায়নিক যা কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের চিহ্নিতকারী হিসাবে দেখানো হয়েছে। তা ছাড়া, এটি পরবর্তীতে ডিজেনারেটিভ ডিজঅর্ডারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তেলের ধোঁয়া ওঠার পর রান্না করলে বিপদ৷ কারণ ধোঁয়ার সঙ্গে শরীরে যায় ফ্রি–র্যাডিক্যাল্স৷ তার হাত ধরে খুলে যায় হৃদরোগ থেকে শুরু করে ক্যানসার ও আরও অনেক রোগের দরজা৷ হাঁপানি রোগীরও সমস্যা বাড়ে৷ তাই তেলের ধোঁয়া বেরনোর আগেই, ফোড়ন–সবজি–মাছ, যা দেওয়ার দিয়ে, ঢাকা দিয়ে দিন৷ ক্ষতিকর ধোঁয়ার হাত থেকে শরীর বাঁচবে৷ পুষ্টি ভাঁড়ারও থাকবে অটুট৷ ছাঁকা তেলে ভাজলে খাবারের ভিটামিন ও প্রোটিনের পরিমাণ কমে৷ বাড়ে ক্যালোরি, ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট, ওজন, অপুষ্টি৷ পাল্লা দিয়ে বাড়ে হাইপ্রেশার–কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিজ, হৃদরোগ, স্ট্রোকের আশঙ্কা৷
উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার তেল
উচ্চ তাপমাত্রায় তেল যা ৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি তাপমাত্রায় রান্না করতে হলে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- আভাকাডো তেল
- ক্যানোলা তেল
- ভূট্টার তেল
- চিনাবাদাম তেল
এগুলি নিম্ন তাপমাত্রায় রান্না করার তেল (Cooking Oil)
এই তেল যা শুধুমাত্র ২২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার নিচে রান্না করা উচিত।
- শণবীজ তেল
- কুমড়াবীজ তেল
- আখরোট তেল
রান্নার জন্য এই তেলগুলির কোনওভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন না। বরং এগুলোকে সালাদের পাশাপাশি গার্নিশিং-এর জন্যও ব্যবহার করতে পারেন।