রেস
২০০৮ সালের সুপারহিট কমার্শিয়াল ছবি রেস্ (Race)। একদিক দিয়ে দেখতে গেলে সইফ আলি খানের (Saif Ali Khan) কামব্যাক ছবি এটি। রাফ অ্যান্ড টাফ পুরুষালী ভূমিকায় এই ছবিতেই প্রথম দেখা যায় তাঁকে। সঙ্গে অপ্রত্যাশিত চরিত্রে দেখা গিয়েছিল অক্ষয় খান্নাকে (Akshaye Khanna)। ছবির টানটান গল্প, স্টাইল, পরিচালনা, মিউজিক সব মিলিয়ে দর্শক পছন্দ করেছিল ছবি। এর পর ছবির দ্বিতীয় সিক্যুয়েল তৈরি হয়। বাদ যান অক্ষয় (প্রথম ছবিতে চাঁর চরিত্রের মৃত্যু হয়)। তার বদলে আসেন জন আব্রাহাম। নায়িকাদের মধ্যেও পরিবর্তন হয়। প্রথম রেসের তুলনায় দ্বিতীয় রেস বেশ খারাপ ছবি। গল্প, পরিচালনা সবেতেই গা ছাড়া ভাব স্পষ্ট। এর পর আসে রেসের তিন নম্বর সিক্যুয়েল। আগের দুটি ছবির সঙ্গে এই ছবির কোনও সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক শুধু নামে। গল্পের কোনও যোগাযোগ নেই। আসলে তিন নম্বর রেসের কোনও গল্পই নেই। ছবি দেখতে দেখতে সুকুমার রায়ের কাতুকুতু বুড়োর কথা মনে পড়ে যাবে। "না আছে তার মুণ্ডু মাথা না আছে তার মানে, তবুও ছবি দেখতে হবে তাকিয়ে সলমন খানের পানে"। বলিউডের সেরা খারাপ ছবিগুলির মধ্যে নিঃসন্দেহে রেস 3 প্রথম সারিতে থাকবে। এই ছবির আর কোনও সিক্যুয়েল দর্শক চান না।
ধুম
রেসের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ধুম (Dhoom)। ধুম সিরিজের প্রথম ছবি সেই সময় বলিউডের স্টাইল আইকন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অভিষেক বচ্চন এবং জন আব্রাহামের চোর-পুলিশের কেমিস্ট্রি তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছিলেন দর্শক। দ্বিতীয় ছবিটিও বক্স অফিসে ভালো ফল করে। হলিউডি ছবির নকল হলেও হৃত্বিক রোশনের (Hrithik Roshan) উপস্থিতিতে ছবি উতরে যায়। সর্বনাশ হয় তৃতীয় ছবির ক্ষেত্রে। তৃতীয় ছবির দায়িত্ব নেন আমির খান (Aamir Khan)। অসাধারণ কিছু করার উদ্দেশ্য নিয়েই হয়তো কাজে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু কার্যত তা বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। ছবির গল্পের গরু যেমন বারবার গাছের মগডালে উঠেছে তেমনই সিনেমা দেখতে গিয়ে সার্কাস আর ড্যান্সড্রামা দেখে দর্শক বিরক্ত হয়েছে। তাই রেসের মতো ধূমের সিক্যুয়েলও তাঁরা চান না।
হাউসফুল
হাউসফুল ফ্র্যাঞ্চাইজের প্রথম ছবিটি বেশ জনপ্রিয় হয়। বিদেশি লোকেশনে বিগবাজেটের আদ্যোপান্ত কমেডি ছবি মনোরঞ্জনের জন্য বেশ ভালো। ফলে প্রযোজক পরিচালকের প্রত্যাশা বাড়তে থাকে। শুরু হয় ছবির সিক্যুয়েল তৈরি। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ সিক্যুয়েল পর্যন্ত হয়ে যায়। প্রতিবারই দর্শক ভাবেন যে এবার বুঝি ভালো কিছু পাওয়া যাবে। কিন্তু পর্বতের মুষিক প্রসবের মতো হাউসফুলের সিক্যুয়েল দিনদিন খারাপ হতে থাকে। কমার্শিয়াল সিনেমাপ্রেমীরা বাধ্য হয়ে ছবির সিক্যুয়েল আর না বানানোর আর্জি জানান।
ওয়েলকাম
অক্ষয়কুমার, পরেশ রাওয়াল, নানা পাটেকর, অনিল কাপুর অভিনীত অনিস বাজমির ছবি ওয়েলকাম (Welcome) দেখে হাসতে হাসতে চোখে জল এসে পড়েনি এমন দর্শক মেলা ভার। কিন্তু তার সিক্যুয়েল ওয়েলকাম টু দেখে যে এতটা চোখে জল আসবে তা পরিচালকমশাইও বুঝতে পারেননি। ওয়েলকাম টু একটি তৃতীয় শ্রেণির ছবি। নিজেদের অভিনীত ছবিটি দেখে অভিনেতারাও একথা বলতে বাধ্য হয়েছিলেন। রান্নার মশলা বেশি হয়ে গেলে যেমন বিস্বাদ হয়ে যায় ওয়েলকাম টু অনেকটা সেই ধরনের ছবি। এই ছবির সিক্যুয়েলও দর্শক আর চান না।
গোলমাল
রোহিত শেট্টির ছবির গোলমালের (Golmaal) পাঁচ নম্বর সিক্যুয়েলের কাজ চলছে। কিন্তু চার নম্বর ছবির পারফর্ম্যান্সের পর পাঁচ নম্বর ছবি নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ আছে। গোলমাল ফান আনলিমিটেড গোলমাল সিরিজের সেরা ছবি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সিক্যুয়েলের মান ক্রমশ নামতে থাকে। কিন্তু চতুর্থ ছবিটি ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আলো অভিনেতা অভিনেত্রী থাকা সত্ত্বেও ছবির পুরোনো আকর্ষণ একেবারেই গায়েব ছিল। তার উপর অভিনেতাদের বাড়তে থাকা বয়স ছবিতে স্পষ্ট। সেটিও ছবির একটি মাইনাস পয়েন্ট। তাই অনেকেরই রোহিত শেট্টির কাছে দাবি প্রিয় ছবিটি নিয়ে আর এগোবেন না। সে কটা গোলমাল আছে তা নিয়ে আপাতত দর্শককে স্বস্তিতে থাকতে দিন।