অ্যাপশহর

ব্যবসা তলানিতে, নতুন সিনেমা মুক্তির মুখ চেয়ে বন্ধ হচ্ছে কলকাতার জনপ্রিয় ৭টি সিনেমাহল!

সিনেমা হল খোলার অনুমতি মিলেছে। কিন্তু মানুষ কি হলমুখী হচ্ছেন? ব্যবসায় লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে শুক্রবার থেকেই কলকাতার বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিনেমাহল বন্ধ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে হলমালিকরা কী বললেন, অভিনেতা ও অভিনেত্রীরাই বা কী বললেন? জেনে নিন এখানে...

EiSamay.Com 20 Nov 2020, 5:52 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: দিওয়ালি শেষ হতে না হতেই ফের বন্ধ হতে চলেছে কলকাতার বেশ কয়েকটি সিনেমা হল। শুক্রবার থেকে দরজা বন্ধ করে দিল প্রিয়া, মেনকা, অজন্তা, অশোকা, প্রাচী, জয়া ও রূপসী। তবে প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে সিনেমা হলে দেখানো হবে তাঁর অভিনীত সেরা সিনেমাগুলি। বেলাশেষে, সাঁঝবাতি, প্রাক্তন ও পোস্তো- এই সিনেমাগুলি দেখানো হলে কলকাতার সিনেমাহলগুলিতে।
EiSamay.Com priya cinema hall
প্রিয়া সিনেমা হল। গুগল থেকে নেওয়া ছবি।


করোনা আবহে সিনেমাহল খোলার অনুমতি মিললেও সেই হারে কোনও লাভের মুখ দেখছেন না হল মালিকরা। তাঁরা চাইছেন, কোনও হিন্দি সিনেমা মুক্তি পেলে তবেই আবার সিনেমা হল খোলা হবে। প্রিয়া হলের মালিক অরিজিত দত্ত জানিয়েছেন, লকডাউনের পর সিনেমা হল খোলার পর থেকে তেমন লাভ হচ্ছে না। এমন অবস্থা হয়েছে যে বন্ধ রাখার থেকে খোলার পর আরও বেশি খরচ হচ্ছে। অন্যদিকে মেনকা-র মালিক প্রণব কুমার রায় জানিয়েছেন, ব্যবসা হচ্ছে কোথায়? হল চালিয়ে যাওয়াই এখন সমস্যা তৈরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অজন্তা সিনেমা হলের সহ-মালিক শতদীপ সাহা জানিয়েছেন, এখনই মানুষ সিনেমা হলে এসে সিনেমা দেখার অবস্থায় আসেননি।

এই সপ্তাহেই ফের সিনেমা হলে দেখানো হচ্ছে ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিত অভিনীত প্রাক্তন সিনেমা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে ফের এই সিনেমাটি বেশ কয়েকটি সিনেমা হলে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। 'ছয় যুগের বেশি সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে অক্লান্তভাবে অভিনয় করে গিয়েছেন। তাঁর অভিনীত প্রাক্তন ও বেলাশেষ সারা বাংলায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল। যখন তাঁর সিনেমাগুলি আবার প্রকাশ হচ্ছে তখন সিনেমাগুলি দর্শকদের দেখার জন্য প্রদর্শনকারীদের কি একটু ধৈর্য থাকতে পারে না? তবে পরিস্থিতিটা সত্যিই নজিরবিহীন। তবুও আমরা সকলেই এর প্রভাব থেকে বাদ পড়িনি। তাই বলে বন্ধ করে দেওয়া কোনও সমস্যার সমাধান নয়' বলে মনে করেন বাংলা সিনেমার অন্যতম অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

তবে এখানেই উঠে আসছে অন্য প্রশ্ন। তার মানে হিন্দি সিনেমা মুক্তি না পেলে সিনেমা হল চলে না?বাংলা সিনেমাগুলি বড় হিন্দি সিনেমা মুক্তি না পেলে কলকে পায় না? আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলা সিনেমা বানানোর জন্য টাকাও ঢালা হয়। কিন্তু হিন্দি ও বাংলা একে অপরের পরিপূরক। একে অপরকে সমর্থন না করলে আমাদের চলবে না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে স্বনির্ভর করতে তাই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। লকডাউনের পর সিনেমা হলের জন্য একত্র হয়েছিলেন থিয়েটার জগতের শিল্পীরা। হলগুলি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরাও। বলা ভালো সবাই-ই চাইছিলেন যে সিনেমাহলগুলি খুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এখন তাঁরা কি একটু ধৈর্য্য দেখাতে পারেন না? ব্যবসায় লাভের জন্য একটু অপেক্ষা কি করা যায় না? হলমালিকদের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী।

সিনেমাহলে ফের মুক্তি পেয়েছে সৌমিত্র-দেব অভিনীত সাঁজবাজি। দেবের কথায়, 'এই পরিস্থিতিতে আমি বুধবার সুইত্‍জারল্যান্ড দেখতে গিয়েছিলাম। এটা সত্যিই দারুণ একটা সিনেমা। কিন্তু সেখানে দেখলাম হাতে গোনা কয়েকজন দর্শক এসেছেন। এই অবস্থায় কিভাবে ব্যবসা চালাবেন মালিকরা? আমার হাতে বড় বাজেটের সিনেমা রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে মুক্তি পাওয়ার কোনও সুযোগই নেই। মাত্র পঞ্চাশ শতাংশ দর্শক সিনেমা হলে যেতে পারবেন, এমনই সরকারি নির্দেশ রয়েছে। এমনকি পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখতে গেলেও সকলের থেকে আলাদা করে দেখতে হচ্ছে। আর এই সব কারণেই হলে দর্শকসংখ্যা কম হচ্ছে। ব্যবসাও তলানির দিকে যাচ্ছে।'

খবরটি ইংরেজিতে পড়ুন এখানে...

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন-

পরের খবর