তুহিনা মণ্ডল| এই সময় ডিজিটাল এক্সক্লুসিভ
ক্লাস ফাইভের ছাত্র, মেধাবী। দাদু-দিদার নয়নের মণি। যত্ন, আত্তি, ভালোবাসায় লেপ্টেই বেড়ে উঠছে ছোট্ট অভিজ্ঞান। কিন্তু, মাঝের মধ্যেই ঘুম ভেঙে ওঠে একরত্তির। মেজাজও হারিয়ে ফেলে সে। আসলে মা যখন 'হার না মানার লড়াই' লড়ছিলেন, তখন অনেকটাই জ্ঞান হয়েছিল অভিজ্ঞানের। আর সেই ক্ষত আজও পুরোটা শুকোয়নি। তখন ২০১১ সাল--
নরওয়েতে সংসার পেতেছিলেন অনুরূপ এবং সাগরিকা ভট্টাচার্য। তাঁদের কোল আলো করে এসেছিল অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্য। কিন্তু, বাঙালি মায়ের চামচের বদলে হাত দিয়ে খাওয়ানো, সন্তানকে নিয়ে এক বিছানায় ঘুম পাড়ানো! আপাত স্বাভাবিক পরিচর্যাই চক্ষুশূল হয়েছিল নরওয়ে সরকারের।
সে বছর ১১ মে সাগরিকার দুই সন্তানকে 'ছিনিয়ে নিয়েছিল' নরওয়ের শিশু সুরক্ষা সংস্থা। এরপর দীর্ঘ লড়াই। সন্তানদের ফিরে পেতে এক মায়ের আপ্রাণ চেষ্টা। ভারতীয় দূতাবাস থেকে শুরু করে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
সাগরিকার এই হার না মানার কাহিনি দুনিয়ার কাছে তুলে ধরতে চলেছেন পরিচালক অসীমা ছিব্বর। রানি মুখোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য অভিনীত 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-র ট্রেলার রীতিমতো ঝড় তুলেছে নেটপাড়ায়। অবাক করা এই কাহিনির বাস্তব চমকে দিয়েছে দেশবাসীকে।
‘পর্দায় রানিকে দেখা গেলেও…এ লড়াই তো আমাদের খুকির, আমাদের সাগরিকার…’, ১৩ বছর আগের সেই রক্তাক্ত দিনের স্মৃতি দেখে চোখে জল কলকাতার প্রবীণের। সন্তানদের বাড়ি ফেরাতে মেয়েকে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ দিতে হয়েছিল, তা ভোলেননি সাগরিকার বাবা মনোতোষ চক্রবর্তী এবং মা শিখা চক্রবর্তী। 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-র ট্রেলার তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে সেই দুর্বিসহ দিনে। তাঁরাও মেয়ের পাশে দাঁড়াতে একসময় ছুটে গিয়েছিলেন নরওয়েতে।
অনুরূপ-সাগরিকার সম্পর্ক আইনত না ভাঙলেও এক ছাদের নীচে থাকেন না তাঁরা। কিন্তু, যাঁদের জন্য এত লড়াই সেই অভিজ্ঞান-ঐশ্বর্য এখন কোথায়? সাগরিকার বাবা মনোতোষ চক্রবর্তী এই প্রতিবেদককে জানালেন, অভিজ্ঞান ক্লাস ফাইভে পড়ে, ঐশ্বর্য ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। কলকাতাতেই স্থায়ী ঠিকানা মা ও দুই সন্তানের। তাঁর কথায়, 'তখন ঐশ্বর্য অনেকটা ছোট হলেও অভিজ্ঞান অনেক কিছুই বুঝত।'
মা-বাবার থেকে নরওয়ে প্রশাসনের ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশে ফিরেও তাঁদের থেকে দূরে থাকা, দীর্ঘ লড়াইয়ের ফুলকি দগ্ধ করেছিল ছোট্ট অভিজ্ঞানের মন। যা আজও ভুলতে পারেনি সে।
সাগরিকার মা শিখা চক্রবর্তী বলেন, “কলকাতা হাইকোর্টে একবার গিয়েছিল অভিজ্ঞান-ঐশ্বর্য। এই মামলায় বিচারপতি ছিলেন দীপঙ্কর দত্ত। তিনি ওদের হাতে একটা করে চকোলেট তুলে দিয়েছিলেন। ঐশ্বর্য জাপটে ধরেছিল ওর মাকে। কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না। সেই সময় বিচারপতি বলেছিলেন, বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।” শিখা চক্রবর্তী বিচারপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তাঁর কথায়, “অভিজ্ঞানের মনে এই ঘটনার তীব্র প্রভাব পড়েছিল। ও আর পাঁচটা শিশুর মতোই স্কুলে যায়, পড়াশোনা করে। কিন্তু, মাঝে মধ্যে খুব রেগে যায়, কম কথা বলে। আমাদের ওকে বুঝতে হবে।” স্বাভাবিক ভাবেই নাতি-নাতনি মনতোষ এবং শিখার নয়নের মণি। এদিকে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই, দেশে ফিরে সন্তানদের কাছে পাওয়ার আইনি জটিলটা, এই সবের মাঝে জং ধরেছে অনুরূপ এবং সাগরিকার সম্পর্কেও। আলাদা থাকেন তাঁরা। দেশে ফিরে নতুন করে কেরিয়ার শুরু করেছেন তিনি। আপাতত তিনি ‘ওয়ার্কিং মাদার’।
'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-র ট্রেলার মনোতোষ এবং শিখাকে এক দশক আগের ঘটনার স্মৃতির সরণি বেয়ে নামতে বাধ্য করিয়েছে। রানি সাগরিকার কষ্টটা পর্দায় কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারলেন? প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রীকে ‘১০০-য় ১০০’ দিচ্ছেন তাঁরা।
ক্লাস ফাইভের ছাত্র, মেধাবী। দাদু-দিদার নয়নের মণি। যত্ন, আত্তি, ভালোবাসায় লেপ্টেই বেড়ে উঠছে ছোট্ট অভিজ্ঞান। কিন্তু, মাঝের মধ্যেই ঘুম ভেঙে ওঠে একরত্তির। মেজাজও হারিয়ে ফেলে সে। আসলে মা যখন 'হার না মানার লড়াই' লড়ছিলেন, তখন অনেকটাই জ্ঞান হয়েছিল অভিজ্ঞানের। আর সেই ক্ষত আজও পুরোটা শুকোয়নি।
নরওয়েতে সংসার পেতেছিলেন অনুরূপ এবং সাগরিকা ভট্টাচার্য। তাঁদের কোল আলো করে এসেছিল অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্য। কিন্তু, বাঙালি মায়ের চামচের বদলে হাত দিয়ে খাওয়ানো, সন্তানকে নিয়ে এক বিছানায় ঘুম পাড়ানো! আপাত স্বাভাবিক পরিচর্যাই চক্ষুশূল হয়েছিল নরওয়ে সরকারের।
সে বছর ১১ মে সাগরিকার দুই সন্তানকে 'ছিনিয়ে নিয়েছিল' নরওয়ের শিশু সুরক্ষা সংস্থা। এরপর দীর্ঘ লড়াই। সন্তানদের ফিরে পেতে এক মায়ের আপ্রাণ চেষ্টা। ভারতীয় দূতাবাস থেকে শুরু করে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
সাগরিকার এই হার না মানার কাহিনি দুনিয়ার কাছে তুলে ধরতে চলেছেন পরিচালক অসীমা ছিব্বর। রানি মুখোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য অভিনীত 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-র ট্রেলার রীতিমতো ঝড় তুলেছে নেটপাড়ায়। অবাক করা এই কাহিনির বাস্তব চমকে দিয়েছে দেশবাসীকে।
‘পর্দায় রানিকে দেখা গেলেও…এ লড়াই তো আমাদের খুকির, আমাদের সাগরিকার…’, ১৩ বছর আগের সেই রক্তাক্ত দিনের স্মৃতি দেখে চোখে জল কলকাতার প্রবীণের। সন্তানদের বাড়ি ফেরাতে মেয়েকে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ দিতে হয়েছিল, তা ভোলেননি সাগরিকার বাবা মনোতোষ চক্রবর্তী এবং মা শিখা চক্রবর্তী। 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-র ট্রেলার তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে সেই দুর্বিসহ দিনে। তাঁরাও মেয়ের পাশে দাঁড়াতে একসময় ছুটে গিয়েছিলেন নরওয়েতে।
অনুরূপ-সাগরিকার সম্পর্ক আইনত না ভাঙলেও এক ছাদের নীচে থাকেন না তাঁরা। কিন্তু, যাঁদের জন্য এত লড়াই সেই অভিজ্ঞান-ঐশ্বর্য এখন কোথায়? সাগরিকার বাবা মনোতোষ চক্রবর্তী এই প্রতিবেদককে জানালেন, অভিজ্ঞান ক্লাস ফাইভে পড়ে, ঐশ্বর্য ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। কলকাতাতেই স্থায়ী ঠিকানা মা ও দুই সন্তানের। তাঁর কথায়, 'তখন ঐশ্বর্য অনেকটা ছোট হলেও অভিজ্ঞান অনেক কিছুই বুঝত।'
মা-বাবার থেকে নরওয়ে প্রশাসনের ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশে ফিরেও তাঁদের থেকে দূরে থাকা, দীর্ঘ লড়াইয়ের ফুলকি দগ্ধ করেছিল ছোট্ট অভিজ্ঞানের মন। যা আজও ভুলতে পারেনি সে।
সাগরিকার মা শিখা চক্রবর্তী বলেন, “কলকাতা হাইকোর্টে একবার গিয়েছিল অভিজ্ঞান-ঐশ্বর্য। এই মামলায় বিচারপতি ছিলেন দীপঙ্কর দত্ত। তিনি ওদের হাতে একটা করে চকোলেট তুলে দিয়েছিলেন। ঐশ্বর্য জাপটে ধরেছিল ওর মাকে। কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না। সেই সময় বিচারপতি বলেছিলেন, বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।” শিখা চক্রবর্তী বিচারপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তাঁর কথায়, “অভিজ্ঞানের মনে এই ঘটনার তীব্র প্রভাব পড়েছিল। ও আর পাঁচটা শিশুর মতোই স্কুলে যায়, পড়াশোনা করে। কিন্তু, মাঝে মধ্যে খুব রেগে যায়, কম কথা বলে। আমাদের ওকে বুঝতে হবে।” স্বাভাবিক ভাবেই নাতি-নাতনি মনতোষ এবং শিখার নয়নের মণি। এদিকে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই, দেশে ফিরে সন্তানদের কাছে পাওয়ার আইনি জটিলটা, এই সবের মাঝে জং ধরেছে অনুরূপ এবং সাগরিকার সম্পর্কেও। আলাদা থাকেন তাঁরা। দেশে ফিরে নতুন করে কেরিয়ার শুরু করেছেন তিনি। আপাতত তিনি ‘ওয়ার্কিং মাদার’।
'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-র ট্রেলার মনোতোষ এবং শিখাকে এক দশক আগের ঘটনার স্মৃতির সরণি বেয়ে নামতে বাধ্য করিয়েছে। রানি সাগরিকার কষ্টটা পর্দায় কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারলেন? প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রীকে ‘১০০-য় ১০০’ দিচ্ছেন তাঁরা।