অ্যাপশহর

শ্যাডো বক্সিং, পিছন থেকে ছুরি, বিস্ফোরক মধুর ভান্ডারকর

স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে কঙ্গনা রানাওয়াতের আন্দোলন নিয়ে মধুরের কী মত? ‘কঙ্গনা সারাজীবন মনে যা ভাবে, সেটাই বলে’, বলেন পরিচালক। আর কী কী বললেন পরিচালক? জেনে নিন...

Ei Samay 26 Jun 2020, 9:48 am
বলিউডের অন্ধকার দিক নিয়ে তাঁর অনেক ছবি বিখ্যাত। তিনিও মুম্বইয়ে আউটসাইডার। সেই মধুর ভান্ডারকর বিস্ফোরক। সাক্ষাৎকারে ভাস্বতী ঘোষ
EiSamay.Com director madhur bhandarkar talks abot nepotism in bollywood
মধুর ভন্ডরকর


ভারতের জরুরি অবস্থা নিয়ে বছর তিনেক আগে ছবি বানিয়েছিলেন এক পরিচালক। তাঁর পকেটে তখন পদ্মশ্রী পুরস্কার, জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু ছবির মুক্তিতে বাধা দিলেন অনেকে। আদালত পর্যন্ত দৌড়তে হল পরিচালককে। মুম্বই থেকে ফোনে তাঁর গলায় ক্ষোভ, ‘একটি পাঁচতারা হোটেলে আমার ওপর শারীরিক আক্রমণ হল। পরদিন থেকে সঙ্গে জুড়ে গেল দেহরক্ষী। কোথাও বেরোনো বন্ধ হয়ে গেল! এ ভাবেই ডিপ্রেশনে ভোগা শুরু। নিজেকে টেনে বের করেছি সেখান থেকে’।

ভদ্রলোকের নাম মধুর ভান্ডারকর।

বলিউডে নেপোটিজম বা তিন ক্যাম্পের লবি বাজির চেহারাটা কীরকম? মধুরের সাফ জবাব, ‘বলিউডে নেপোটিজম, ক্যাম্পের দাদাগিরি, লবিবাজি তিনটেই প্রবল। ক্যাম্পগুলোর কথায় সায় না দিলে তারা আপনার কাজকে ছোট করবে। এখানে শত্রু অনেক। কেউ-কেউ সারাক্ষণ শ্যাডো বক্সিং করছে। সামনে ভালো কথা বলে গিয়ে পিছন থেকে ছুরি মারছে!’

‘ফ্যাশন’, ‘হিরোইন’ বা ‘পেজ থ্রি’ ছবিতে বলিউডের নোংরামির দিকে আঙুল তুলেছিলেন মধুর। তাঁর গলায় উত্তেজনা, ‘আমি কোনও ক্যাম্পে ওঠাবসা করিনি কোনওদিন। যখন ‘হিরোইন’ করি, বলিউডের লোকেরা বলে, এই সত্যিগুলো দেখানোর কী দরকার ছিল? তাদের কথা উড়িয়ে দিই। হিন্দি ছবির জগতে নায়িকাদের ডিপ্রেশন থেকে শুরু করে সেক্স টেপের ঘটনা, বিশেষ কারণে নায়িকার রোল ছোট হয়ে যাওয়া থেকে তাঁর বিরুদ্ধে দল পাকানো, এ গুলো চরম সত্যি। সত্যি কতদিন চাপা থাকে?’

বলিউডে আউটসাইডার হিসাবে প্রবেশ পরিচালকের। কিছুটা পরিচিত হওয়ার পর বলিউডের পার্টিতে ডাক পেতে শুরু করেন। মধুর ফাঁস করলেন, ‘গিয়ে দেখি কতটা সুপারফিশিয়াল পার্টিগুলো। ফ্রড লোকজন ঘুরছে। তাই একজন সাংবাদিকের প্রেক্ষিত থেকে ‘পেজ থ্রি’ বানাই। ছবিটায় সত্যিগুলো উঠে আসার পর সোশ্যালাইটরা তীব্র আক্রমণ করে। যদিও অনেক সাংবাদিক বলেছিলেন, এই ছবিটা তাঁদের বাইবেল। বলিউডের আসল চেহারাটা যে সেখানে ধরা আছে, এখন অনুভব করছে লোকে’।

বলিউডে নতুনদের কী পরামর্শ দেবেন? মধুরের উত্তর, ‘প্রথমে বুঝতে হবে নেপোটিজম শুধু বলিউডে নেই। সব পেশায় আছে। কিন্তু বলিউড শো-বিজ বলে সকলের চোখের সামনে আসছে। আমার প্রতিবেশীর ব্যবসা ডুবে গেলে জানতে পারি না। এ দিকে সে দেখা হলেই জিজ্ঞেস করছে, ‘দাদা, নতুন ছবি নেই কেন?’ তাই এ রকম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে হলে, চামড়া মোটা হতে হবে। ট্রোলদের পাত্তা দিলে চলবে না।’ পরে যোগ করলেন, ‘কোনও লবির ধার না ধারলে, নিজের ঢাকও নিজেকে পেটাতে হবে। মন শক্ত করে আর গ্র্যাজুয়েশন করে আসুন। যাতে মানিয়ে নিতে না পারলে, অন্য পথেও হাঁটতে পারেন’। বলিউডের চূড়ান্ত নেতিবাচক আবহাওয়ার মধ্যে মধুর ইতিবাচক থাকেন কী করে? মধুরের উত্তরটা চমকপ্রদ, ‘লতাদিদির সঙ্গে কথা বলে। দু’ সপ্তাহে একবার ফোন করি। উনি এ সব ঘুরপথ না নিয়ে, সৎ পথে চলতে উৎসাহ দেন’।

পরের খবর