দিলীপ ঘোষ
চোখে জল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম সেদিন। হাতে ধরা পুষ্পস্তবক। কিন্তু, সুগন্ধ ছড়িয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ নেতার আন্তরিকতা। 'আমি কে?' উত্তর অন্বেষণ করতে গিয়ে পেয়েছিলাম, 'দলের একজন সাধারণ কর্মী।' বছর তিনেক আগের একটা দিন আমাকে আজও মনে করায়,জননেতা হতে গেলে ভালো মনের মানুষ হওয়া প্রয়োজন। দুবছর আগের সেই দিনটা… বিশ্বভারতীতে আসবেন আচার্য। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হাতে পুষ্পস্তবক নিয়ে দাঁড়িয়ে আমি। মাস তিনের আগেই স্পাইনাল কডের অপারেশন হয়েছিল। কিন্তু, সেই যন্ত্রণা আমি ভুলতে বসেছি। প্রতীক্ষার অবসান হল, হেলিকপ্টার থেকে নেমে এলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। দেশের ব্যস্ততম মানুষ, জননেতা, প্রধানমন্ত্রী, দেশের চৌকিদার। পুষ্পস্তবক এগিয়ে দিতে গেলাম। জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত 'যৌতুক'-এ পাব ভাবিনি। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি, যাঁর আদর্শে জীবন সঁপেছি তিনি বলে উঠলেন, 'দিলীপ, শরীর কেমন আছে? অপারেশনের পর ঠিক আছো তো?'
যে ব্যাথা আমার স্মৃতির আগল খুলে ছুট লাগিয়েছে, সেই কষ্টের কথা উনি ভোলেননি! প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষকে নিয়ে তাঁর পরিবার। সত্যিই তো আমি তো তাঁর পরিবারেরই সদস্য। 'ভালো আছি'-মুখে হাসি এনে সাহস সঞ্চয় করে শব্দের আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু, চোখে তখন বারিধারা। হ্যাঁ, আনন্দে চোখে জল এসেছিল দিলীপ ঘোষের, ঠিকই পড়ছেন-আমারও আবেগ বাঁধ ভাঙে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা স্পর্শ করেছিল সেই আবেগের অন্তঃস্থল।
আমি সরাসরি রাজনীতিতে যখন ছিলাম না, তখন নরেন্দ্র মোদীকে আমার দেখা অত্যন্ত সফল একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, দলের একজন সফল নেতা, কার্যকর্তা। রাজনীতিতে আসার পর যখন প্রথমবার নির্বাচনে লড়াই করি, তখন আমার জন্য প্রচারে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তখনই আমার সঙ্গে তাঁর প্রথম আলাপ। তাঁর বড় পরিবারের সদস্য আমি আগেই ছিলাম, দেশের নাগরিক হিসেবে। কিন্তু, সেই প্রথম সান্নিধ্য পাওয়া।
আমার স্মৃতিপট হাতড়ে সুখের শব্দ সাজাতে বসলে দিন কাবার হয়ে যাবে। কিন্তু, সেই দুর্দিনে দেশের, দশের প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রধানের ভূমিকায় পাশে দাঁড়ানোর দিনটি চোখের সামনে থেকে সরাতে পারি না কিছুতেই। আড়াই বছর আগের কথা। মোদীজি আসবেন। মেদিনীপুরে বিরাট মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। এদিকে দুর্যোগের ঘনঘটা। মোদীজির বক্তব্য চলাকালীন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মঞ্চ। আহত বহু মানুষ। খবরটি শুনে ১০ সেকেন্ড বক্তব্য থামিয়েছিলেন মোদীজি। নির্দেশ দিয়েছিলেন, সবাইকে যেন বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। যাতে হুড়োহুড়ি না পড়ে যায়, সেই কথা মাথায় রেখে ফের বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তিনি। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছিলেন মঞ্চের সামনে থাকা প্রতিটি মানুষ। মিটিং শেষ। অন্যান্য সময় উনি পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে যান। কিন্তু সেদিন...
আমি সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর গাড়িতে বসে রওনা দিয়েছিলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। পথে দেখেছি মানুষের জন্য তাঁর আকুলতা। ধীর, স্থির, শান্ত চেহারায় উদ্বেগের ছাপ। আহত পরিবারের সদস্যের কাছে ছুটে যাওয়ার সেই আপ্রাণ ইচ্ছে আজও আমাকে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা দেয়। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে আসবেন কেউ জানতেন না। সবাই যখন জানলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী উঠে গিয়েছেন হাসপাতালের তিনতলায়, আহত মানুষের কাছে। হাসপাতালের সেই বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষজনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বাঁকুড়া থেকে আসা আহত দুই বোনের উদ্দেশে বার্তা, 'তুমলোগ বহত বাহাদুর হো।' প্রধানমন্ত্রীর সেই স্নেহের পরশ রাজনৈতিক দিলীপের সামনে তৈরি হওয়া এক মাইলস্টোন-মন্দির। যেই আত্মত্যাগ, আত্মিকতার সামনে আমি রোজ নতজানু হই।
লোকসভা নির্বাচন। মেদিনীপুর আসনের কথা উঠতেই তৎকালীন আমাদের দলের নেতা মুকুলদা বলে উঠেছিলেন, 'ওখানে দিলীপ ঘোষ ছাড়া কেউ জিতবে না।' মোদীজি শুনে সহাস্যে বলেছিলেন, 'দিলীপদাকোভি লড়বাওগে।' এরপর তাঁর দেখানো পথে আমার হাঁটা, দৌড়ানো, লড়াই,কখনও অল্প বিশ্রাম , আবার হাঁটা।
আমরা ক্লান্ত হই। রাতে ঘুম, অল্প বিশ্রাম, তার পরে কাজে ফেরা। কিন্তু, মোদীজি বিরাম কখন নেন! প্রশাসনের কাজ, দেশের কাজ, ১৩০ কোটির পরিবারের কর্তা দিন রাত জেগে কাজ করে চলেছেন। ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতা না থাকলে কি তা সম্ভব! যিনি দেশের সর্বোচ্চ পদে বসে রয়েছেন, তিনি জোর গলায় বলতে পারেন, 'চৌকিদার বসে আছি, দেশের প্রত্যেকটি মানুষের সুরক্ষা আমার দায়িত্ব।'
হ্যাঁ, আমার দেশের মানুষদের সুরক্ষার আগল মোদী বেষ্টনী। এই সুরক্ষা শিকল অক্ষয় হোক। প্রতি মুহূর্তে আমার প্রেরণার ভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ হোক, যে পথ আপনি দেখিয়েছেন সেই পথে হাঁটতে গিয়ে কোনওদিন যেন প্রাণশক্তি শেষ না হয়...
শুভ জন্মদিন দেশনেতা নরেন্দ্র মোদীজি।
চোখে জল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম সেদিন। হাতে ধরা পুষ্পস্তবক। কিন্তু, সুগন্ধ ছড়িয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ নেতার আন্তরিকতা। 'আমি কে?' উত্তর অন্বেষণ করতে গিয়ে পেয়েছিলাম, 'দলের একজন সাধারণ কর্মী।' বছর তিনেক আগের একটা দিন আমাকে আজও মনে করায়,জননেতা হতে গেলে ভালো মনের মানুষ হওয়া প্রয়োজন। দুবছর আগের সেই দিনটা…
যে ব্যাথা আমার স্মৃতির আগল খুলে ছুট লাগিয়েছে, সেই কষ্টের কথা উনি ভোলেননি! প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষকে নিয়ে তাঁর পরিবার। সত্যিই তো আমি তো তাঁর পরিবারেরই সদস্য। 'ভালো আছি'-মুখে হাসি এনে সাহস সঞ্চয় করে শব্দের আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু, চোখে তখন বারিধারা। হ্যাঁ, আনন্দে চোখে জল এসেছিল দিলীপ ঘোষের, ঠিকই পড়ছেন-আমারও আবেগ বাঁধ ভাঙে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা স্পর্শ করেছিল সেই আবেগের অন্তঃস্থল।
আমি সরাসরি রাজনীতিতে যখন ছিলাম না, তখন নরেন্দ্র মোদীকে আমার দেখা অত্যন্ত সফল একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, দলের একজন সফল নেতা, কার্যকর্তা। রাজনীতিতে আসার পর যখন প্রথমবার নির্বাচনে লড়াই করি, তখন আমার জন্য প্রচারে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তখনই আমার সঙ্গে তাঁর প্রথম আলাপ। তাঁর বড় পরিবারের সদস্য আমি আগেই ছিলাম, দেশের নাগরিক হিসেবে। কিন্তু, সেই প্রথম সান্নিধ্য পাওয়া।
আমার স্মৃতিপট হাতড়ে সুখের শব্দ সাজাতে বসলে দিন কাবার হয়ে যাবে। কিন্তু, সেই দুর্দিনে দেশের, দশের প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রধানের ভূমিকায় পাশে দাঁড়ানোর দিনটি চোখের সামনে থেকে সরাতে পারি না কিছুতেই। আড়াই বছর আগের কথা। মোদীজি আসবেন। মেদিনীপুরে বিরাট মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। এদিকে দুর্যোগের ঘনঘটা। মোদীজির বক্তব্য চলাকালীন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মঞ্চ। আহত বহু মানুষ। খবরটি শুনে ১০ সেকেন্ড বক্তব্য থামিয়েছিলেন মোদীজি। নির্দেশ দিয়েছিলেন, সবাইকে যেন বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। যাতে হুড়োহুড়ি না পড়ে যায়, সেই কথা মাথায় রেখে ফের বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তিনি। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছিলেন মঞ্চের সামনে থাকা প্রতিটি মানুষ। মিটিং শেষ। অন্যান্য সময় উনি পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে যান। কিন্তু সেদিন...
আমি সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর গাড়িতে বসে রওনা দিয়েছিলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। পথে দেখেছি মানুষের জন্য তাঁর আকুলতা। ধীর, স্থির, শান্ত চেহারায় উদ্বেগের ছাপ। আহত পরিবারের সদস্যের কাছে ছুটে যাওয়ার সেই আপ্রাণ ইচ্ছে আজও আমাকে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা দেয়। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে আসবেন কেউ জানতেন না। সবাই যখন জানলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী উঠে গিয়েছেন হাসপাতালের তিনতলায়, আহত মানুষের কাছে। হাসপাতালের সেই বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষজনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বাঁকুড়া থেকে আসা আহত দুই বোনের উদ্দেশে বার্তা, 'তুমলোগ বহত বাহাদুর হো।' প্রধানমন্ত্রীর সেই স্নেহের পরশ রাজনৈতিক দিলীপের সামনে তৈরি হওয়া এক মাইলস্টোন-মন্দির। যেই আত্মত্যাগ, আত্মিকতার সামনে আমি রোজ নতজানু হই।
লোকসভা নির্বাচন। মেদিনীপুর আসনের কথা উঠতেই তৎকালীন আমাদের দলের নেতা মুকুলদা বলে উঠেছিলেন, 'ওখানে দিলীপ ঘোষ ছাড়া কেউ জিতবে না।' মোদীজি শুনে সহাস্যে বলেছিলেন, 'দিলীপদাকোভি লড়বাওগে।' এরপর তাঁর দেখানো পথে আমার হাঁটা, দৌড়ানো, লড়াই,কখনও অল্প বিশ্রাম , আবার হাঁটা।
আমরা ক্লান্ত হই। রাতে ঘুম, অল্প বিশ্রাম, তার পরে কাজে ফেরা। কিন্তু, মোদীজি বিরাম কখন নেন! প্রশাসনের কাজ, দেশের কাজ, ১৩০ কোটির পরিবারের কর্তা দিন রাত জেগে কাজ করে চলেছেন। ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতা না থাকলে কি তা সম্ভব! যিনি দেশের সর্বোচ্চ পদে বসে রয়েছেন, তিনি জোর গলায় বলতে পারেন, 'চৌকিদার বসে আছি, দেশের প্রত্যেকটি মানুষের সুরক্ষা আমার দায়িত্ব।'
হ্যাঁ, আমার দেশের মানুষদের সুরক্ষার আগল মোদী বেষ্টনী। এই সুরক্ষা শিকল অক্ষয় হোক। প্রতি মুহূর্তে আমার প্রেরণার ভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ হোক, যে পথ আপনি দেখিয়েছেন সেই পথে হাঁটতে গিয়ে কোনওদিন যেন প্রাণশক্তি শেষ না হয়...
শুভ জন্মদিন দেশনেতা নরেন্দ্র মোদীজি।