দেবশ্রী রায়
পথ কুকুরের দায়িত্ব নিলেই শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে কফি ডেটের সুযোগ! অবশেষে মৃত্যুর কোলে সারমেয়। কারও ছেলেমানুষির মাশুল গুনতে হল একটি শিশুকে। ঘটনাটি কাকতালীয় হলেও অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা কোনও পারফিউম নয় বা কোনও শাড়ি নয় যে কফি খেতে গিয়ে উপহার হিসেবে দেওয়া যায়। জোর করে কফি খাওয়ার বা ছবি তোলার লোভ দেখিয়ে কাউকে পশুপ্রেমী করে তোলা যায় না। তার জন্য কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজন হয়। সব কিছুরই একটা পদ্ধতি আছে। ঠিক সেভাবেই কুকুর দত্তক নেওয়ারও একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। আমার ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি কোনও কুকুরছানাকে বা যে কোনও বাচ্চাকে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হয়ে, কিছু শর্ত থাকে। প্রথমত, লিখিতভাবে বাচ্চাটার সারা জীবনের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া। দ্বিতীয়ত, যে বাড়িতে কুকুরছানাটি যাচ্ছে সেই বাড়ির পরিবেশে সে সঠিক যত্ন পাবে কি না সে বিষয় খতিয়ে দেখা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুদিন ছাড়া ছাড়া বাড়ি গিয়ে বাচ্চাটির ওপর নজর রাখা।
অন্তত যতদিন না সে নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে পারছে ততদিন। একটা কুকুরকে দেখলেই বোঝা যায় যে তার সঠিক যত্ন হচ্ছে কি না। পরিস্থিতি বুঝে ফেরতও নেওয়া যায় বাচ্চাকে।
একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি, শান্তিনিকেতনে একটা বয়স্ক কুকুরকে নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছিলাম। কুকুরটার দায়িত্ব নেওয়ার মতো কাউকে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে কুকুরের খরচ বাবদ মাসিক কিছু টাকা দেওয়ার শর্তে একজন রাজি হল। দিন দুয়েকের মধ্যে জানতে পারলাম শুধু টাকার লোভেই রাজি হয়েছিল সে, কুকুরের যত্ন নেওয়ার বেলায় অষ্টরম্ভা। দু'দিনের মধ্যেই ফিরিয়ে আনি কুকুরটিকে। এক্ষেত্রেও যদি সত্যিই যত্নের অভাবে ঘটনাটা ঘটে থাকে তাহলে আগে ভাগেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত সঠিক পদ্ধতিতে কাজ হলে। কফি ডেটে গিয়ে কুকুর দেওয়া আর তারপর ফোনে ফোনে মনিটরিংটা সঠিক নয়।
আমাদের দেশে পশু সুরক্ষার আইন থাকলেও সেগুলো এতই শিথিল যে প্রয়োগের ক্ষেত্রে ধোপে টেকে না।তাই কখনও কখনও আবেগের বশবর্তী হয়ে আইন হাতে তুলে নেন পশুপ্রেমীরা। এমনটাই ঘটেছে শশাঙ্কর ক্ষেত্রেও। কাউকে মারধর বা হেনস্থা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তো ছিলাম না, ঠিক কী ঘটেছে জানি না। তাই শশাঙ্ক সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা আমার উচিত নয়। শুধু এইটুকুই বলব, যে দায়িত্ব তিনি নিয়েছিলেন সেটা পালন করাও তাঁর উচিত ছিল, আর না পারলে বাচ্চাটাকে ফেরত দিয়ে আসাও তাঁরই কর্তব্য। সেটাই বরং সততার পরিচয় হত। শেষে শুধু এইটুকুই বলব কফি খেয়ে, প্রলোভন দিয়ে কাউকে পশুপ্রেমে উৎসাহী করা যায় না। এই ঘটনার থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
লেখিকা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তথা পশুপ্রেমী।
(এই প্রবন্ধে প্রকাশিত মতামত সম্পূর্ণ ভাবে লেখকের ব্যক্তিগত। এই সময় ডিজিটাল কোনও ভাবেই লেখার দায়ভার বহন করে না।)
পথ কুকুরের দায়িত্ব নিলেই শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে কফি ডেটের সুযোগ! অবশেষে মৃত্যুর কোলে সারমেয়। কারও ছেলেমানুষির মাশুল গুনতে হল একটি শিশুকে। ঘটনাটি কাকতালীয় হলেও অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা কোনও পারফিউম নয় বা কোনও শাড়ি নয় যে কফি খেতে গিয়ে উপহার হিসেবে দেওয়া যায়। জোর করে কফি খাওয়ার বা ছবি তোলার লোভ দেখিয়ে কাউকে পশুপ্রেমী করে তোলা যায় না। তার জন্য কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজন হয়। সব কিছুরই একটা পদ্ধতি আছে। ঠিক সেভাবেই কুকুর দত্তক নেওয়ারও একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে।
অন্তত যতদিন না সে নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে পারছে ততদিন। একটা কুকুরকে দেখলেই বোঝা যায় যে তার সঠিক যত্ন হচ্ছে কি না। পরিস্থিতি বুঝে ফেরতও নেওয়া যায় বাচ্চাকে।
একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি, শান্তিনিকেতনে একটা বয়স্ক কুকুরকে নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছিলাম। কুকুরটার দায়িত্ব নেওয়ার মতো কাউকে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে কুকুরের খরচ বাবদ মাসিক কিছু টাকা দেওয়ার শর্তে একজন রাজি হল। দিন দুয়েকের মধ্যে জানতে পারলাম শুধু টাকার লোভেই রাজি হয়েছিল সে, কুকুরের যত্ন নেওয়ার বেলায় অষ্টরম্ভা। দু'দিনের মধ্যেই ফিরিয়ে আনি কুকুরটিকে। এক্ষেত্রেও যদি সত্যিই যত্নের অভাবে ঘটনাটা ঘটে থাকে তাহলে আগে ভাগেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত সঠিক পদ্ধতিতে কাজ হলে। কফি ডেটে গিয়ে কুকুর দেওয়া আর তারপর ফোনে ফোনে মনিটরিংটা সঠিক নয়।
আমাদের দেশে পশু সুরক্ষার আইন থাকলেও সেগুলো এতই শিথিল যে প্রয়োগের ক্ষেত্রে ধোপে টেকে না।তাই কখনও কখনও আবেগের বশবর্তী হয়ে আইন হাতে তুলে নেন পশুপ্রেমীরা। এমনটাই ঘটেছে শশাঙ্কর ক্ষেত্রেও। কাউকে মারধর বা হেনস্থা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তো ছিলাম না, ঠিক কী ঘটেছে জানি না। তাই শশাঙ্ক সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা আমার উচিত নয়। শুধু এইটুকুই বলব, যে দায়িত্ব তিনি নিয়েছিলেন সেটা পালন করাও তাঁর উচিত ছিল, আর না পারলে বাচ্চাটাকে ফেরত দিয়ে আসাও তাঁরই কর্তব্য। সেটাই বরং সততার পরিচয় হত। শেষে শুধু এইটুকুই বলব কফি খেয়ে, প্রলোভন দিয়ে কাউকে পশুপ্রেমে উৎসাহী করা যায় না। এই ঘটনার থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
লেখিকা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তথা পশুপ্রেমী।
(এই প্রবন্ধে প্রকাশিত মতামত সম্পূর্ণ ভাবে লেখকের ব্যক্তিগত। এই সময় ডিজিটাল কোনও ভাবেই লেখার দায়ভার বহন করে না।)