অ্যাপশহর

দ্বিচারিতা

সন্ত্রাসবাদ ও মানবাধিকার নিয়ে চিনের দ্বিচারিতার মুখোশ খুলে দিতে অবশেষে ময়দানে উত্তীর্ণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এক দিকে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করার ক্ষেত্রে প্রায় বিশ্বজোড়া যে ঐকমত্য, তার ধারাবাহিক বিরোধিতা করে আসছে চিন।

EiSamay 1 Apr 2019, 4:57 pm
সন্ত্রাসবাদ ও মানবাধিকার নিয়ে চিনের দ্বিচারিতার মুখোশ খুলে দিতে অবশেষে ময়দানে উত্তীর্ণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এক দিকে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করার ক্ষেত্রে প্রায় বিশ্বজোড়া যে ঐকমত্য, তার ধারাবাহিক বিরোধিতা করে আসছে চিন। অন্য দিকে সে দেশে দশ লক্ষাধিক মুসলমান নাগরিকের মানবাধিকারও লঙ্ঘন করে চলেছে। চিনের এই অবস্থানকে ‘লজ্জাকর দ্বিচারিতা’ বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নয়া দিল্লির কাছে সুখবর নিঃসন্দেহে। কিন্তু নয়াদিল্লির নেতৃত্বকে এটিও স্মরণে রাখতে হবে, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে চিনের এই দ্বিচারিতার মাশুল সব থেকে বেশি গুনতে হয়েছে ভারতকেই। পাকিস্তানের মাটি থেকে ক্রমাগত সন্ত্রাসবাদী হামলা চলেছে ভারতের উপর, হতাহত অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ, আক্রান্ত নিরাপত্তা কর্মীরা, নিশানা করা হয়েছে সামরিক শিবিরগুলিকেও। প্রতিবারই পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক স্তরে একঘরে কররার প্রচেষ্টাকে বানচাল করতে সক্রিয় হয়েছে চিন। কাজেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সাম্প্রতিক উদ্যোগকে সমর্থনই শুধু নয়, সময় এসেছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারতীয় চিন-নীতিতে মৌলিক পরিবর্তনের।
EiSamay.Com merlin_131773241_d7f0b46a-18d3-4547-834b-c74a9102d008-articleLarge


১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধের পর থেকেই ভারতীয় নেতৃত্ব চিনের আগ্রাসী সীমান্তনীতি বা সন্ত্রাসবাদের প্রতি এই সমর্থন সত্ত্বেও সে দেশের ক্ষেত্রে এক সম্ভ্রম-মিশ্রিত নরম অবস্থানে বিশ্বাস রেখেছে। সে যুদ্ধের পর অর্ধ শতকেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত। ভারত এখন পারমাণবিক অস্ত্রধারী শক্তি এবং ক্রমবর্ধমান ক্রয়শক্তি সম্পন্ন বিপুল বাজার। প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভারতীয় নীতি থেকে সরে না এসেও আগ্রাসী প্রতিবেশীর মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের অধিকার ভারতের অবশ্যই আছে। নয়াদিল্লির উচিত অবিলম্বে সে অধিকার প্রয়োগকে চিন নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা। তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি, নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের প্রতি কূটনৈতিক সমর্থন ও ভারতীয় বাজারে চিনা পণ্যের আমদানির উপর শুল্ক আরোপ সহ একাধিক বিকল্প ভারতের সামনে রয়েছে। জাতীয় স্বার্থেই অতঃপর সেই বিকল্পগুলির প্রয়োজন মতো ব্যবহার জরুরি।

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল