অ্যাপশহর

দূষিত

বন্দি শব্দদানবের সহসা মুক্তির ফলে যে ভয়ঙ্কর শব্দদূষণে শহর -শহরতলি কেঁপে ওঠে সে বিষয়ে সরকারি -অসরকারি -বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা দীর্ঘকাল ধরেই নাগরিকদের সচেতন করে আসছে

EiSamay.Com 3 Nov 2016, 9:02 am
কালীপুজো বা দীপাবলির আনন্দমুখর সন্ধ্যায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন রকমের হাজার হাজার বাজির মধ্যে বন্দি শব্দদানবের সহসা মুক্তির ফলে যে ভয়ঙ্কর শব্দদূষণে শহর -শহরতলি কেঁপে ওঠে সে বিষয়ে সরকারি -অসরকারি -বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা দীর্ঘকাল ধরেই নাগরিকদের সচেতন করে আসছে সঠিক ভাবেই৷ সাধারণ ভাবে এতাবত্ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন জনসচেতনতা বার্তায় সকলকে বাজি ‘ফাটানোর ’ পরিবর্তে বাজি ‘পোড়ানোয় ’ উত্সাহিত করা হয়ে থাকে৷ কিন্ত্ত এ বছরের এই উত্সবসন্ধ্যার সময় কলকাতা ও তার শহরতলি অঞ্চলের বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যে পরিসংখ্যান রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের যন্ত্রে ধরা পড়া পড়েছে তার দরুণ বাজি সংক্রান্ত জনসচেতনতা বার্তাটি ভবিষ্যতে কী হওয়া উচিত তার পুনর্বিচার জরুরি৷ সোমবার রাত্রি দু’টোর সময় বোর্ডের বজবজ কেন্দ্রে যে দূষণ -মাত্রা দেখা গিয়েছে তা গ্রহণযোগ্য দূষণমাত্রার থেকে ১০ গুণ বেশি৷ অনেকে এই যুক্তি দেখিয়ে থাকেন যে , কালীপুজো বা দীপাবলীর উদ্যাপনের ফলে যে বায়ু দূষণ তা অতি স্বল্পমেয়াদি --- মাত্র এক বা দু’রাত্রির ঘটনা৷
EiSamay.Com sound polution for fire crackers explode at diwali night
দূষিত


বাস্তব কিন্ত্ত তা নয়৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে সহসা এই দূষণ -বিস্ফোরণে পরিবেশের যে সাংঘাতিক ক্ষতি হয় তা পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতে প্রায় একমাস লাগে৷ এই দীর্ঘ সময়কাল শ্বাসকষ্ট , উচ্চ রক্তচাপে ও অন্যান্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এই বায়ু দূষণের শিকার হতে থাকেন৷ একের উত্সব অন্যের যাতে অন্যের কাছে বিভীষিকা না হয়ে ওঠে , সেটি সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয় , সমগ্র নাগরিক সমাজের৷ শব্দবাজির প্রকোপ কমানোর ক্ষেত্রে সরকারি ও নাগরিক সমাজের যৌথ প্রচেষ্টা অনেকাংশেই সফল হয়েছে হয়তো , যদিও সে পথে আরও বহু দূর অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন৷ একই ভাবে ব্যাপক ধোঁয়া নির্গমনকারী বাজি পোড়ানো থেকে বিরত থাকার বিষয়েও সকলকে সচেতন করতে একটি নতুন উদ্যোগ প্রয়োজন৷ বেজিংয়ের মূল শহরে ১৯৯৩ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত বাজি পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল৷ তেমন চরমপন্থা অবলম্বন না করেও অন্যান্য ব্যস্থা গ্রহণের কথা ভাবা যেতে পারে৷ তেলেঙ্গানার মতো রাজ্যে সরকার কম দূষণকারী বাজি তৈরির জন্য বাজি প্রস্ত্ততকারীদের উত্সাহিত করছে৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে একটি সর্বোচ্চ মাত্রা বেঁধে দেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করা যেতে পারে৷ সংক্ষেপে , সাম্প্রতিক এই পরিসংখ্যানের নিরিখে বাজি -জনিত দূষণ নিয়ন্ত্রণকে শব্দ দূষণের গন্ডি ছাড়িয়ে আরও কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাওয়ার বিষয়ে একটি জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন৷

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল