অ্যাপশহর

সাফল্য

প্রকাশ্যে সাফল্য নিয়ে আস্ফালন বিদেশনীতির নিয়ম নয়। তার লক্ষ্য পূরণের জন্য অর্থনীতি থেকে ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য পর্যন্ত যাবতীয় পন্থাই সুপরিকল্পিত ভাবে ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার ফল জনপরিসরে উচ্চকিত ভাবে প্রতিভাত হয় না। সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরটিকে নয়া দিল্লির এমনই একটি নিপুণ বিদেশনৈতিক উদ্যোগ বললে অত্যুক্তি হবে না।

EiSamay 22 Feb 2019, 1:28 pm
প্রকাশ্যে সাফল্য নিয়ে আস্ফালন বিদেশনীতির নিয়ম নয়। তার লক্ষ্য পূরণের জন্য অর্থনীতি থেকে ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য পর্যন্ত যাবতীয় পন্থাই সুপরিকল্পিত ভাবে ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার ফল জনপরিসরে উচ্চকিত ভাবে প্রতিভাত হয় না। সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরটিকে নয়া দিল্লির এমনই একটি নিপুণ বিদেশনৈতিক উদ্যোগ বললে অত্যুক্তি হবে না। এই সফরের তাৎপর্যটি সঠিক প্রেক্ষিতে বুঝতে হলে তাকে কাশ্মীরে পাকিস্তান আশ্রিত জৈশ-ই-মহম্মদের সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রেক্ষিতেই দেখা দরকার। আপাতত নয়াদিল্লির নীরব উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়েছে অবশ্যই, দীর্ঘমেয়াদেও তা কাঙ্খিত ফলদায়ী হয় কি না, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের সৌহার্দ্যের সম্পর্ক দীর্ঘকালীন। কাজেই নিরাপত্তা থেকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্র পর্যন্ত এই সফরটিকে যে সে সম্পর্ককে পরবর্তী ধাপে উন্নীত করতে ব্যবহার করবে দু’ দেশই, সেটিই স্বাভাবিক। ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের চুক্তি সেই প্রচেষ্টার সাফল্যের সূচক।
EiSamay.Com Narendra-Modi


কিন্তু কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলার নিরিখে এই মুহূর্তে নয়াদিল্লির সামনে সব থেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিল পাকিস্তানের নিকটতম সহযোগী দেশটিকে পাকিস্তান-আশ্রিত সন্ত্রাসবাদ নিবারণে ভারতের বৃহত্তর উদ্যোগে সামিল করা। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণে দেখা যাবে সে ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভাবে অগ্রসর হতে পেরেছে ভারত। লক্ষণীয়, পাকিস্তান সফর সেরেই ভারতে আসার মূল সূচি সহসা পরিবর্তন করে সৌদি যুবরাজ দেশে ফিরে গিয়ে তার পরে ভারতে আসেন মঙ্গলবার। স্পষ্টতই পাকিস্তান-আশ্রিত জৈশের সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে তাঁর সফরসূচিতে দু’টি দেশকে একই বন্ধনীতে রাখার বিষয়ে ভারতের যে আপত্তি, তার প্রতি সৌদি নেতৃত্বকে সংবেদনশীল করে তুলতে সফল ভারতীয় নেতৃত্ব। এর পাশাপাশি, দু’ দেশের যৌথ ঘোষণাপত্রে পাকিস্তানের নাম উল্লিখিত না থাকলেও তাতে সুস্পষ্ট ভাবে সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয়দানকারী যে কোনও দেশের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। পাকিস্তান-সৌদি আরবের ঐতিহাসিক সম্পর্কের নিরিখে সৌদি যুবরাজ সহসা পাকিস্তানের নিন্দায় প্রকাশ্যে সরব হবেন, এমনটা আশা করা বাস্তবানুগ নয়। কিন্তু অতঃপর লক্ষ রাখতে হবে, সৌদি আরব পাকিস্তানের উপর ভারতের প্রত্যাশানুযায়ী চাপ সৃষ্টি করতে উদ্যোগী হয় কি না। সেটিই হবে ভারতীয় বিদেশনীতির সাফল্যের প্রধান নির্ণায়ক।

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল