অ্যাপশহর

বিরতি

ডোকলাম সঙ্কটের ফলে ভারত-চিন সম্পর্কের আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার ঘটেছিল৷ অন্তত সাময়িক ভাবে তা ফের মেঘমুক্ত৷ বলা অসঙ্গত হবে না, এই মেঘমুক্তি ভারতীয় বিদেশনীতিরই জয়৷

EiSamay.Com 31 Aug 2017, 1:25 pm
ডোকলাম সঙ্কটের ফলে ভারত-চিন সম্পর্কের আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার ঘটেছিল৷ অন্তত সাময়িক ভাবে তা ফের মেঘমুক্ত৷ বলা অসঙ্গত হবে না, এই মেঘমুক্তি ভারতীয় বিদেশনীতিরই জয়৷ বিতর্কিত ডোকলাম অঞ্চলে ২০১২-র ভূটান-চিন-ভারত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শর্ত উপেক্ষা করে চিন যে ভাবে সহসা রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল তাতে উদ্বিগ্ন ভারত স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে ব্যাপক সেনা মোতায়ন করতে বাধ্য হয়৷ এর পরিণতিতে সরকারি সংবাদমাধ্যম ও সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে ক্রমাগত ভারতবিরোধী বিষোদ্গার করে চিন স্নায়ুযুদ্ধে যে সুবিধা পাওয়ার আশা করেছিল, নিঃশব্দ বিদেশনীতির জোরে ভারত সে আশা ব্যর্থ করেছে৷ অবশেষে ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে দুই পক্ষই এবং স্থগিত হয়েছে চিনা রাস্তা তৈরির উদ্যোগ৷ স্পষ্টতই গোটা পরিস্থিতিটির সঠিক এবং বাস্তবানুগ বিশ্লেষণে সফল কেন্দ্রীয় সরকারের সংশিষ্ট বিশেষজ্ঞরা৷ ঠিক কী শর্তে উভয় পক্ষের এই সেনা প্রত্যাহার সংগঠিত হল তা জনপরিসরে প্রকাশ করা হয়নি৷ সেটাই স্বাভাবিক৷ বিদেশনৈতিক দুনিয়ার একটি বড়ো অংশই পরিচালিত হয় জনদৃষ্টির বাইরে৷ কিন্ত্ত এ কথা অনুমান করা যেতে পারে যে, ভারতে চিনা পণ্যের যে বিপুল বাজার, ছোট একটি পার্বত্য অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বিতর্কের ফলে সে বাজার হারানোকে যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেননি চিনা নীতিনির্ধারকরা৷ তাঁরা ততটুকুই আদায় করে নিতে চেয়েছিলেন, সংবাদমাধ্যম ও বিদেশনৈতিক স্তরে উচ্চকিত হুমকির মাধ্যমে যতটুকু আদায় করা সম্ভব৷ ভারতের দৃঢ় মনোবলে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হতে চায়নি চিনা কর্তৃপক্ষ৷
EiSamay.Com indias political win at the end of doklam standoff
বিরতি


এতদ্সত্ত্বেও এই সাফল্যকে ঢক্কা নিনাদে জয় হিসেবে চিহ্নিত না করলেই বিচক্ষণতার পরিচয় দেবেন ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা৷ সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই চিনে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন আয়োজিত হতে চলেছে৷ অভ্যাগতদের অন্যতম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ ভারত-চিন সম্পর্ককে ভবিষ্যতে কী ভাবে ডোকলাম সঙ্কটের মতো অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি থেকে মুক্ত রাখা যায় আশা করা যায় ভারত এবং চিন উভয় পক্ষই তাঁর এই সফরের পূর্ণ সুযোগ নিয়ে সে বিষয়ে একটি পথরেখা নির্মাণের উদ্যোগ নেবে৷ স্মর্তব্য, একবিংশ শতকে বিশ্বক্ষমতার বিন্যাসে এশিয়ার পুনরুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে হলে এই দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ককে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি৷ তবে সে লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে চিনকে তার সদাগ্রাসী সামরিক ও বিদেশনীতি থেকে অবিলম্বে সরে আসতে হবে৷

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল