অ্যাপশহর

নজরদারি

অর্থশাস্ত্রের যে ঘরানাই হোক না কেন, অন্যায্য লাভের প্রতিষেধক হিসেবে প্রত্যেকেরই একই প্রস্তাব৷ প্রতিযোগিতা৷

EiSamay.Com 26 Jun 2017, 2:54 pm
অর্থশাস্ত্রের যে ঘরানাই হোক না কেন, অন্যায্য লাভের প্রতিষেধক হিসেবে প্রত্যেকেরই একই প্রস্তাব৷ প্রতিযোগিতা৷ ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা যতই বাড়বে, বাজারের স্বাভাবিক নিয়মেই মাত্রাতিরিক্ত লাভের সম্ভাবনাও কমবে, তার সুফল ভোগ করবে উপভোক্তারা৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সহজ এই নিয়মটি নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রায়শই বিস্মৃত৷ যেমনটি প্রতীয়মান গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স, অর্থাত্‍ জিএসটি-র ক্ষেত্রে৷ আগামী ১ জুলাই সর্বার্থেই এক ঐতিহাসিক ক্ষণ যখন ভারতে এক নতুন কর-কাঠামো এবং সরলীকৃত কর পরিচালন ব্যবস্থা চালু হবে৷ সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক প্রশ্ন, পণ্য ও পরিষেবার মূল্য বাড়বে নাকি কমবে? যেহেতু বহু ক্ষেত্রে করের হার কমতে চলেছে, অতএব সেই সুবিধাটি উপভোক্তাদের প্রাপ্য৷ উপভোক্তারা সেটি পাবেন যদি বিক্রেতারা সেটি দেন৷ বিক্রেতারা কর-হ্রাসের সুবিধা উপভোক্তাদের হস্তান্তর করছেন, নাকি অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করছেন, সেটির দিকে নজর রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন৷ যার মূল বক্তব্য হল, অন্যায্য লাভের পরিণাম শাস্তি৷ আপাতদৃষ্টিতে উদ্দেশ্যটি সত্‍, তবে পদক্ষেপটির ফলে আখেরে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি৷
EiSamay.Com editorial on gst
নজরদারি


প্রখ্যাত ব্রিটিশ চিন্তাবিদ ডেভিড হিউম একদা প্রশ্ন তুলেছিলেন, পুলিশ না হয় সাধারণের উপর নজরদারি করবে, কিন্ত্ত পুলিশের উপর নজরদারি করবে কে? এই প্রশ্নেই নিহিত সর্বক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সমস্যাটি৷ আমলাতান্ত্রিক খবরদারি কোনও বিশল্যকরণী নয়৷ আজ থেকে প্রায় ছয় দশক আগে পশ্চিমবঙ্গেও অতিরিক্ত মুনাফা প্রতিরোধে একটি আইন পাশ হয়েছিল৷ কিন্ত্ত কাজের কাজ যে বিশেষ হয়নি সেটি সহজেই বোধগম্য৷ জিএসটি জমানার প্রারম্ভিক মুহূর্তে এহেন নির্দেশিকা জারিতে ভারতই প্রথম এমনও নয়৷ ইতিপূর্বেও অনুরূপ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল মালয়েশিয়ায়৷ ফলাফল আদৌ আশাপ্রদ নয়৷ মনে রাখা দরকার, একটি বৃহত্‍ অর্থনীতির উত্‍পাদন প্রক্রিয়া এমনিতেই অতীব জটিল, একুশ শতকের তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর ভুবনায়িত দুনিয়ায় তা জটিলতর৷ যে কোনও সরকারের পক্ষেই তার প্রতিটি স্তরে নজর রাখা দুঃসাধ্য৷ তদুপরি, নির্দেশিকার ভাষাটিও ধোঁয়াশাপূর্ণ৷ বলা হয়েছে, উপভোক্তাদের কাছে কর হ্রাসের ‘তুল্য’ সুবিধা হস্তান্তর করতে হবে৷ ‘তুল্য’ শব্দটির সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা না থাকার দরুণ নির্দেশিকার অপব্যাখ্যা এবং অপব্যবহারের সম্ভাবনা প্রবল৷ প্রশ্ন হল, তা হলে অন্যায্য মুনাফা রোধে কী করণীয়? শ্রেয়তর উপায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক আবহ সুনিশ্চিত করা, এবং একটি কার্যকরী নিয়ন্ত্রক সংস্থা৷

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল