অ্যাপশহর

দ্বিমুখী

দোকলাম সঙ্কট কি অতীত? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর দেওয়া কঠিন৷ কারণ এই দু’দেশের মধ্যে উদ্ভূত এই সঙ্কটের একটি পক্ষ চিন এমনই একটি রাষ্ট্র, ভূ-রাজনীতিতে নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির যার এক বিপজ্জনক আগ্রাসী প্রক্রিয়া অন্য সমস্ত কিছুকেই ছাপিয়ে যায়৷

EiSamay.Com 12 Oct 2017, 12:17 pm
দোকলাম সঙ্কট কি অতীত? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর দেওয়া কঠিন৷ কারণ এই দু’দেশের মধ্যে উদ্ভূত এই সঙ্কটের একটি পক্ষ চিন এমনই একটি রাষ্ট্র, ভূ-রাজনীতিতে নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির যার এক বিপজ্জনক আগ্রাসী প্রক্রিয়া অন্য সমস্ত কিছুকেই ছাপিয়ে যায়৷ সম্প্রতি নাথু লা-তে গিয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন চিনা সেনাবাহিনীকে ‘নমস্তে’জানিয়ে ভারত-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে সৌহার্দ্যের বার্তা দিলেন তাতে অনেকেরই বহু কালের পুরনো ‘হিন্দি-চিনি ভাই ভাই’স্লোগানটি স্মরণে আসতে পারে৷ তাঁর বার্তার প্রতীকী গুরুত্ব অনস্বীকার্য৷ স্মর্তব্য, ভারত-চিন-ভুটান সীমান্তের একটি ছোট্ট অঞ্চলে রাস্তা তৈরি করার অতর্কিত চিনা উদ্যোগ ঘিরে ভারত ও চিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সঙ্কট যে ভাবে সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনা পর্যন্ত গড়িয়েছিল, দু’দেশের উদ্যোগেই অগস্ট মাসে তার অবসান ঘটে৷ তার ফলেই শিয়ামেন শহরে ব্রিক্স শীর্ষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগদান সম্ভব হয়৷ অতঃপর সীতারমনের সৌহার্দ্যের বার্তা থেকে এ কথাই স্পষ্ট হওয়া স্বাভাবিক যে, দু’দেশই এখন পারস্পরিক সুসম্পর্ককে দৃঢ় করার লক্ষে ভবিষ্যত্‍মুখী৷ প্রশ্ন হল, তা হলে দোকলাম সঙ্কটকে ‘অতীত’হিসেবে চিহ্নিত করায় দ্বিধা কোথায়? দ্বিধা এখানেই যে দোকলামের যে অঞ্চলকে কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে সংঘাত দেখা দিয়েছিল, সে অঞ্চলের অতি নিকটে চিনা সীমান্তে ফের ব্যাপক সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে চিন - এ খবরটি সংবাদমাধ্যমগুলিতে পরিবেশিত হয়েছে সম্প্রতি৷ কাজেই সীতারমনের সৌহার্দ্যের ইঙ্গিত চিনা সরকারি সংবাদমাধ্যমে যতোই প্রশংসিত হোক, তার পাশাপাশি চিন যে দোকলাম ঘিরে ভিন্ন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নিচ্ছে, এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া কঠিন৷
EiSamay.Com editorial on doklam standoff
দ্বিমুখী


আসলে সামরিক, বৈদেশিক ও বাণিজ্যিক পেশী সঞ্চালনের মাধ্যমে নিজস্ব রাষ্ট্রীয় স্বার্থসিদ্ধির জন্য দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে যাবতীয় স্থিতাবস্থাকে উল্লঙ্ঘন করাই চৈনিক ভূ-রাজনীতির মূল৷ উনিশ শতকীয় এই আগ্রাসনের বিশেষ ভাবে মোকাবিলা করতে হয় ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিকে৷ অতএব সীতারমনের পদক্ষেপ অনুসরণ করে নয়া দিল্লির যেমন উচিত চিনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ়তর করার প্রয়াস চালিয়ে যাওয়া, তেমনই দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে এই আগ্রাসী প্রতিবেশীর যে কোনও সামরিক পরিকল্পনা বানচাল করার মতো নিরন্তর সামরিক প্রস্ত্ততিও হওয়া উচিত নয়া দিল্লির চিন-নীতির অপরিহার্য অংশ৷ প্রথমটি সফল হবে এই আশা নিয়ে দ্বিতীয়টির জন্য সদাপ্রস্ত্তত থাকাতেই এ নীতির বিচক্ষণতা৷

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল