অ্যাপশহর

চুক্তিভঙ্গ

অতঃপর আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষমতা বিন্যাসে কি পালাবদল?

EiSamay.Com 6 Jun 2017, 3:39 pm
অতঃপর আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষমতা বিন্যাসে কি পালাবদল? জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে দু’বছর আগে যে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, এবং বিশ্বের পরিবেশ রক্ষায় যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত, সেই চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় সেই সম্ভাবনা প্রবল৷ বলা অসঙ্গত হবে না, এই মর্মে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ঘোষণাটি করেছেন, সেটির মাধ্যমে বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী রাষ্ট্রটি তার দায় অস্বীকার করল৷ ২০১৫-তে প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ১৯০টিরও বেশি রাষ্ট্র৷ স্থির হয়েছিল, প্রত্যেকটি দেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে এবং চেষ্টা করবে যেন বিশ্বের গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না হয়৷ স্মর্তব্য, এই চুক্তি সম্পাদনে মার্কিন প্রশাসন অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার মধ্যে বিশেষত উল্লেখ্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার সক্রিয় উদ্যোগ৷ ট্রাম্প সেই ইতিহাসকে বাতিল করতে চান, ফলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুর্ভাগ্যজনক পশ্চাদ্গমন৷ এ ক্ষেত্রে অজুহাত, মার্কিন জীবন-জীবিকা রক্ষা৷ সেটি যে আদতে ধোপে টেকে না, সেই দেশের অভ্যন্তরে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা থেকেই তা স্পষ্ট৷
EiSamay.Com editorial on americas withdrawal from paris climate agreement
চুক্তিভঙ্গ


সিদ্ধান্তের সমর্থনে ট্রাম্প অন্যান্য যে যুক্তিগুলি পেশ করেছেন, সেগুলিও তথ্য দ্বারা সমর্থিত নয়৷ তিনি জানিয়েছেন যে এই চুক্তির ফলে ভারত ২০২০-র মধ্যে কয়লা উত্পাদন দ্বিগুণ করার অনুমোদন পেয়েছে এবং তার দরুণ যে ক্ষতি, সেটি মোকাবিলার জন্য বিদেশি সাহায্য পাচ্ছে৷ বাস্তব হল, সৌরশক্তির উত্পাদন ব্যয় ক্রমেই কমতে থাকায় ভারতে বিদ্যুত্-উত্স হিসেবে কয়লার ব্যবহার কমতির দিকে৷ তদুপরি, ২০৩০ সালের মধ্যে জীবাশ্মজাত নয় এমন জ্বালানির ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুত্ উত্পাদনের ক্ষমতা ৪০ শতাংশ করতে ভারত দায়বদ্ধ৷ বস্ত্তত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ ভারতের দশ গুণ৷ দূষণের ক্ষেত্রে যে দেশটির দায় সর্বাধিক, সে যখন ভারতকে সমালোচনা করে, তখন আপনি আচরি ধর্ম পরকে শেখানোর উপদেশবার্তাটি স্মরণে আসা অসঙ্গত নয়৷ সর্বোপরি, এই সিদ্ধান্তটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির নিরিখে অপূরণীয় ক্ষতি৷ অতঃপর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলি যখন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই৷ ট্রাম্প ‘আমেরিকা প্রথম’ স্লোগানটি প্রচার করতে গিয়ে হয়তো বিস্মৃত হয়েছেন যে আমেরিকাও বিশ্বেরই একটি অংশ৷ বিশ্ব না বাঁচলে আমেরিকাও বাঁচবে কি?

পরের খবর

Editorialসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল