অ্যাপশহর

মনে হয় ব্যোমকেশ এমন একটা পুজোয় আসতে খুব ভালোবাসত

এই পুজো এল, চারি দিকে কত আলো ঝলমল, রাতের দিকটা যখন সব কিছু খানিকের জন্যে থেকে যায়, আর শুধু আলোগুলো একা একা জেগে থাকে, কেমন যেন মনে হয়, তারা’রা মর্ত্যে নেমে এসেছে, অপেক্ষা করছে

EiSamay.Com 21 Sep 2017, 10:58 am
এই পুজো এল, চারি দিকে কত আলো ঝলমল, রাতের দিকটা যখন সব কিছু খানিকের জন্যে থেকে যায়, আর শুধু আলোগুলো একা একা জেগে থাকে, কেমন যেন মনে হয়, তারা’রা মর্ত্যে নেমে এসেছে, অপেক্ষা করছে, কখন আবার জাগবে সবাই৷ জেগে উঠলেই, আবার সব কিছু এক সঙ্গে মোহময়ী ঢঙে দুলে উঠবে, পুজোর রং খোলসা হবে এ ধরাধামে৷ আমার জানেন, মনে হয়, যদি নিজে মনের মতো করে একটা পুজো সাজাতে পারতাম, বা বলি, ভাবতে পারতাম! যা অবশ্যই সবার, কিন্ত্ত বিশেষ ভাবে বাচ্চাদের আর বাচ্চা-বুড়োদের৷ মানে, এই পুজোয় ১২ বছর অবধি কুঁচো’রা মাত করে দেবে, ষাট পেরনো বাচ্চাদের সঙ্গে৷ হইহই, হুল্লোড়, যা প্রাণে চায় করবে, আর আমি আর আমার বয়সী যাঁরা, ধারে দাঁড়িয়ে স্রেফ দেখব, হাসিগুলো…ওদের মুখের আলোগুলোতেই তো আসল পুজো৷ তাই না!
EiSamay.Com interview of abir chatterjee
মনে হয় ব্যোমকেশ এমন একটা পুজোয় আসতে খুব ভালোবাসত



করব কোথায় জানেন? যে জায়গায় আমার সমস্ত নস্টালজিয়া আমায় টেনে নিয়ে গিয়ে ফেলে, সর্ব ক্ষণ, পুজোর সময় যেন বিশেষ করে৷ সল্টলেক৷ আমি AA ব্লকে থাকতাম, ফলে প্রত্যেক পুজোয় যেন আমি মানসভ্রমণে সেখানেই ফিরে ফিরে যাই৷ নিজের মতো করে, হাওয়া কেটে, ভিড় ঠেলে, সবার অজান্তেই, নিজের ফেলে আসা, বা লুকিয়ে আসা মুহূর্তগুলোকেই খুঁজে ফিরি, কখনও পাই, চোখে জল আসে, কখনও নাগাল পাই না, সে জল থমকে যায়৷ আরে আমার প্রথম কাশফুল দেখা তো এই সল্টলেকেই, এখন যেখানে সিটি সেন্টার…সেখানে…আমার অপু হওয়া…

আসলে কী জানেন, সল্টলেকের তখন কার পুজোগুলোয়, অদ্ভুত একটা মায়া থাত, একটা ইনোসেন্স৷ কেমন একটা উত্তর কলকাতার পাড়া ফিল, আবার একইসঙ্গে দক্ষিণের এক্সলুসিভিটিও৷ ফলে, সেখানেই আমার সাধের পুজো নিয়ে গিয়ে ফেলব আমি৷ আর অষ্টমী আর নবমী’র ম্যান্ডেটারি ভোগ৷ আহা! মুয়ায়ায়ায়াহ্! ছেড়ে থাকা যায়?


মনে হয় ব্যোমকেশ এমন একটা পুজোয় আসতে খুব ভালোবাসত, বা হয়তো ও, অজিতের সঙ্গে ওদের দেশের বাড়ির পুজোতে যেত, অফকোর্স সত্যবতীকে নিয়ে৷ নইলে আর রক্ষে আছে! চুপচাপ দেশের বাড়ির পুজোয় গিয়ে, ব্যোমকেশ নির্ঘাত্ বডি ফেলে দিত, খেত ঘুমোত, খেত ঘুমোত, সত্যবতী’র সঙ্গে নতুন করে চুটিয়ে বা প্রেমও করত, আমি নিশ্চিত, ও আর হ্যাঁ, অবশ্যই, ওখানে গিয়ে কোনও কেস নিয়ে ফেলত না৷ ওটা তো ফেলুদা’র একটেচিয়া!

তবে একটা কথা না এই সময়ে খুব মনে হয়৷ জানি এটার জন্যে হয়তো আমাকে প্যাঁদানো-ও হতে পারে, কিন্ত্ত এইটা আমি বলবই৷ আমরা বোধ হয় বেশ খানিকই হিপোক্রিট হয়ে পড়েছি, এই দেবীপক্ষে আমাদের এত্ত মাথাব্যথা, হেন করছি তেন করছি, আর জাস্ট চার-পাঁচ দিন নিটে গেলেই, ভিতরে বাইরে, তাঁদেরই হেনস্থা করে ছাড়ছি৷ আচ্ছা, এক মিনিট, তাঁদের সমান বা ইক্যুয়াল না ভেবে, সটান মাথায় তুলে দেবী করে তোলা, এটাও কিন্তু আসলে নারীদের হেনস্থাই করা হল৷ তো, এই পুজো দিয়ে শুরু হবে? নারীকে, ঠিক তাঁরা যেমন, তেমনটা ভাবা৷ তবেই হয়তো, প্রত্যেক কন্যাসন্তানের জন্যে, প্রতি মুহূর্তে চিন্তা হবে না আর৷
ভলো থাকবেন৷
পুজোর শুভকামনা৷

অনুলিখন: অনির্বাণ ভট্টাচার্য

পরের খবর

Durga pujaসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল