অ্যাপশহর

অল্পের জন্য বিপদ থেকে রক্ষা কিশোরীর

Covid 19 কালে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্বের ফাঁদে পা দিয়ে বাড়ি থেকে উধাও। Kolkata Police-এর তৎপরতায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা কিশোরীর।

Authored byঅন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় | Ei Samay 25 Sep 2021, 10:09 am

হাইলাইটস

  • চেতলা থানা এলাকার জনবহুল অঞ্চল থেকে বুধবার উধাও হয়ে গিয়েছিল একটি বছর পনেরোর মেয়ে।
  • শুক্রবার সকালে খোঁজ মিলেছে ক্লাস নাইনের ওই ছাত্রীর।
  • ফেসবুকে নাসিকের একটি ছেলের সঙ্গে আলাপ হয় কিশোরীর। বন্ধুত্ব এতটাই 'গভীর' হয় যে, মেয়েটি কাউকে কিছু না-জানিয়ে নাসিক যাওয়ার ট্রেনে চেপে বসে।
EiSamay.Com Trafficking
প্রতীকী ছবি
অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায়

চেতলা থানা এলাকার জনবহুল অঞ্চল থেকে বুধবার উধাও হয়ে গিয়েছিল একটি বছর পনেরোর মেয়ে। মায়ের কথা অনুযায়ী, সকালবেলা আঁকার স্কুলে যাবে বলে বেরিয়ে আর ফেরেনি। অনেক খুঁজেও না-পেয়ে পুলিশে এফআইআর করলেন তার মা। খবর গেল বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছেও। অবশেষে শুক্রবার সকালে খোঁজ মিলেছে ক্লাস নাইনের ওই ছাত্রীর।
কিন্তু মেয়েটি গিয়েছিল কোথায়?

পুলিশের রেডারে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন বলে, হাওড়া থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে যে ট্রেন দুপুরে ছেড়েছে, তাতে উঠেছে কিশোরী। চেতলা থানার একটি দল হাওড়া স্টেশনে গিয়ে দেখে, ওই ট্রেনের যাত্রী-তালিকায় নামই নেই মেয়েটির! কিন্তু টাওয়ার তো দেখাচ্ছে, সে মুম্বইয়ের পথেই চলেছে। অবশেষে পুলিশের অনুরোধে রেল বিলাসপুরে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেয়। কিন্তু মেয়েকে সেখানেও পাওয়া যায়নি। অবশেষে দেখা যায়, নাসিকের দু'টো স্টেশন আগে 'সিন্নার তালুক' বলে একটি জায়গায় ধরছে মেয়েটির টাওয়ার লোকেশন। এবং তার কল রেকর্ড দেখে জানা যায়, নাসিকের বাসিন্দা একটি ছেলের সঙ্গে সে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখত। কালবিলম্ব না-করে সেখানকার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে চেতলা পুলিশ। সেই থানার ওসি নিজে মেয়েটিকে খুঁজে বের করেন। সিডব্লিউসি-তে হাজির করানোর পর মেয়েটি আপাতত হোমে আছে। কলকাতা পুলিশের একটি দল তাকে আনতে রওনা হয়েছে। তবে সেই ছেলেটির কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।

কোথায় যাচ্ছিল এই পঞ্চদশী?

হাতুড়ে চিকিৎসককে আক্রমণ, গণধোলাইয়ে মৃত্যু অভিযুক্তের
পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে নাসিকের ছেলেটির সঙ্গে আলাপ হয় কিশোরীর। বন্ধুত্ব এতটাই 'গভীর' হয় যে, মেয়েটি কাউকে কিছু না-জানিয়ে নাসিক যাওয়ার ট্রেনে চেপে বসে! পুলিশ দেখছে, ছেলেটির প্রোফাইল ফেক কি না। সে মেয়েটিকে ডেকে পাঠিয়েছিল কি না। যদি ডেকে পাঠিয়ে থাকে, তা হলে সে বেপাত্তা কেন ও মেয়েটিকে কোন উদ্দেশ্যে ডেকেছিল।

এই ঘটনায় বিপদ দেখছেন শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, 'অনলাইনে পড়াশোনা করতে গিয়ে বাচ্চারা সহজেই ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে ঢুকতে পারছে। আর সেখানেই ফাঁদ পেতে রেখেছে পাচারকারী বা অন্য অপরাধীরা। নাবালিকারা না-বুঝেই টোপে পা দিচ্ছে।' পুলিশের আর একটু দেরি হলেই এই মেয়েটির ক্ষেত্রেও বিপদ হতে পারত, সে কথাই বলছিলেন সমাজকর্মী দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'ফেসবুকে অপরিচিতদের সঙ্গে নাবালিকারা বন্ধুত্ব করছে। তাদের মিষ্টি কথায় মোহাচ্ছন্ন করে ফেলছে অপরাধীরা। সেটা বুঝতে না-পেয়ে মেয়েরা ভয়ঙ্কর বিপদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে বহু মেয়ে পাচারও হয়ে গেছে।'

জমিজমার দালালি থেকে দিল্লির ত্রাস! ফিল্মি কায়দায় খুন গ্যাংস্টার গোগী
কী ভাবে সম্ভব এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা? অনন্যার কথায়, 'এই প্রবণতা আগেও ছিল। কিন্তু তা এই করোনা-কালে বহু গুণ বেড়েছে। বাচ্চাকে বিপদ সম্পর্কে বোঝাতে হবে। মা-বাবা-অভিভাবককে সজাগ থাকতেই হবে। তাঁর সন্তান কী করছে, কাকে বন্ধু পাতাচ্ছে, প্রয়োজনে হিস্ট্রি ঘেঁটে দেখতে হবে।'

পরের খবর

Crimeসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল