অ্যাপশহর

ATM Fraud: প্রযুক্তিগত কারিকুরি নয়, যান্ত্রিক গলদকে অস্ত্র করে হাতসাফাই নয়া গ্যাংয়ের

ATM Fraud: ভাঙচুর বা উন্নতমানের প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়নি। বরং গাফিলতির কথা জেনে ATM Machine লুঠ করে নেওয়া হয়েছে কোটি টাকা। কীভাবে? জানলে চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য। পড়ুন...

EiSamay.Com 31 May 2021, 9:00 pm

হাইলাইটস

  • ভাঙচুর নয়। করা হয়নি ক্লোনিংও।
  • কোনও অত্যাধুনিক ডিভাইসও কাজে লাগানো হয়নি।
  • স্রেফ ATM কার্ডকে হাতিয়ার করেই শহরের প্রায় ছ'টি ATM মেশিন থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে দু'কোটি টাকা।
EiSamay.Com ATM Spew Out Money
প্রতীকী ছবি
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ভাঙচুর নয়। করা হয়নি ক্লোনিংও। কোনও অত্যাধুনিক ডিভাইসও কাজে লাগানো হয়নি। স্রেফ ATM কার্ডকে হাতিয়ার করেই শহরের প্রায় ছ'টি ATM মেশিন থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে দু'কোটি টাকা। এমন কাণ্ড দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারাও।
কীভাবে কাজটি করল অপরাধীরা?

শহরের কোন ব্যাঙ্কের কোন ATM-এ প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে সেই বিষয়টা প্রথমে সেই তথ্য জোগাড় করে নিয়েছিল অভিযুক্তরা। তার মধ্যে কোন কোন ATM অরক্ষিত তাও ছকে নেওয়া হয়। এরপর ১০-১৫ মিনিটেই কেল্লা ফতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ মে প্রথমবার বেআইনি উপায়ে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ক্ষেত্রে সুযোগ বুঝে ATM-এর ভিতরে ঢোকে অপরাধীরা। যাতে কোনওভাবে বিষয়টি কারও নজরে না পড়ে, সেই ব্যাপারটা নিশ্চিত করে নেওয়া হয়। এরপরেই কাণ্ডটি ঘটানো হয়।

উল্লেখ্য, সব ATM মেশিনেই মাস্টার কি (Master Key) ইনসার্ট করার জায়গা থাকে। সেখানে ওই বিশেষ চাবি ঢোকানো হলেই, খুলে যায় মেশিন। প্রযুক্তিগত দিক থেকে একটু চৌখস হলেই, মাদারবোর্ড দেখে বোঝা যায় ATM এ কী কী ত্রুটি আছে। তা বুঝে নিয়ে মাদারবোর্ড অ্যাকসেস করেছে অপরাধীরা। সাধারণত কোনও ইউজার ATM কার্ড মেশিনে ইনসার্ট করার পর ব্যাঙ্ক সার্ভারের কাছে বিষয়টি জানানো হয়। অ্যাকাউন্টে টাকা থাকলে সার্ভারের কাছ থেকে তা উইথড্র করার অনুমতি মেলে। এই ক্ষেত্রেও প্রথমে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। খুব কম টাকাই রাখা হয়েছিল সেই অ্যাকাউন্টে, এমনটাই অনুমান তদন্তকারীদের। এই ক্ষেত্রে আগেই মাদারবোর্ড অ্যাকসেস করে ওই নেটওয়ার্কিং ডিসকানেক্ট করে দেওয়া হয়। ফলত টাকা তোলার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। পুলিশের দাবি, মাত্র ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই কাজটি করে উধাও হয়ে যায় অপরাধীরা।

কবে বিষয়টি নজরে আসে পুলিশের?

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ICICI ব্যাঙ্কের ATM মেশিনে কারচুপি করেই ওই কাজ করা হয়েছে। আজকাল ব্যাঙ্ক কোনও থার্ড পার্টি সংস্থাকে টাকা 'রিফিল' করার বরাত দেয়। সেক্ষেত্রে ATM মেশিনের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওই সংস্থার হয়। যখন টাকা ভর্তি করা হয়, তখন সংস্থার তরফ থেকে হিসাব করে নেওয়া হয়, কত টাকা কাস্টমাররা তুলেছেন, আর কত বাকি ছিল। এই ক্ষেত্রে ওই হিসাব করতে গিয়েই হিতাচি কোম্পানির নজরে আসে এই চুরির বিষয়টি। এরপরেই অভিযোগ জানানো হয় থানায়।

রয়েছে ফরিদাবাদ কানেকশন?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরিদাবাদে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তথ্য ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালে ফরিদাবাদের অরক্ষিত ATM টার্গেট করে এইভাবেই লুঠ করা হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। পুলিশের অনুমান, এই ক্ষেত্রে ওই গ্যাংয়ের যোগ থাকলেও থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা হয়েছে ফরিদাবাদ পুলিশের সঙ্গে। এই মামলায় ইতিমধ্যেই 'টেকনিক্যাল এভিডেন্স' পেয়েছেন গোয়েন্দারা।

কোন পদ্ধতিতে জালিয়াতি?


পুলিশের ধারণা, কাজটি করার জন্য ১০-২০ দিন শহরে ছিল অপরাধীরা। ছোট ছোট কিস্তিতে টাকা বের করে নেওয়া হয়। একবারে ৫০-৮০ বার কার্ড পাঞ্চ করে টাকা তোলা হয়েছে। মাদারবোর্ড আগে থেকে ট্যাম্পার করে নেওয়ার ফলে ব্যাঙ্কের নজর এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তবে কাজটি করার আগে ATM ভালো করে পর্যবেক্ষন করেছিল হাইটেক দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীদের অনুমান, এই ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কোনও কর্মী বা এই সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত কারও যোগসাযোগ থাকতে পারে।

শহরে সাইবার প্রতারণার নয়া জাল, টার্গেট ব্লু-টিক প্রত্যাশীরা
কোন কোন ATM থেকে টাকা লুঠ হল?

লালবাজার জানিয়েছে, গত ১২ মে থেকে ২২ মের মধ্যে শহরের ৭টি ATM থেকে টাকা বেমালুম গায়েব হয়ে যায়। নিউ মার্কেট, কাশীপুর, বেনিয়াপুকুর, বউবাজার যাদবপুর, ফুলবাগান এবং বেহালা অঞ্চলের ICICI ATM থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে টাকা। ওই এলাকার থানায় অভিযোগ দায়ের করে হিতাচি সংস্থা।

সাবধান! সাইবারেও এবার ‘হানি ট্র্যাপ’
জানা গিয়েছে, গত ১৪ মে নিউ মার্কেট ও বউ বাজার, ১৭ মে কাশীপুর এবং যাদবপুর, ১৯ তারিখ ফুলবাগান এবং বেনিয়াপুকুর থেকে বেআইনিভাবে টাকা তোলা হয়।

বহরে বেড়েছে ডার্ক ওয়েব! বদলেছে অপরাধের ধরনও
'সাধারণ মানুষের টাকা লুঠ হয়নি'

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলী ধর শর্মা এই প্রসঙ্গে বলেন, 'সাধারণ মানুষের কোনও টাকা লুঠ করা হয়নি। ব্যাঙ্কেরও কোনও ক্ষতি হয়নি। যে থার্ড পার্টি সংস্থা ওই ATM মেইন্টেন করে, একমাত্র তাদেরই ক্ষতি হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই অপরাধীদের আটক করব।'

পরের খবর

Crimeসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল