অ্যাপশহর

ডিগবাজি খেয়ে বাতিল নোট জমায় বাধা তুলল আরবিআই

আবার ডিগবাজি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের৷ এই নিয়ে ৪৩ দিনে ৬০ বার !

EiSamay.Com 22 Dec 2016, 10:00 am
এই সময় : আবার ডিগবাজি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের৷ এই নিয়ে ৪৩ দিনে ৬০ বার ! বাতিল নোট ব্যাঙ্কে জমা করা নিয়ে সোমবার যে নয়া বিধি জারি করেছিল আরবিআই , তীব্র সমালোচনার মুখে বুধবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এল৷ সংশোধিত বিধিতে যা দাঁড়াল তাতে যে -সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গ্রাহকের সম্পূর্ণ কেওয়াইসি তথ্য রয়েছে , সেই অ্যাকাউন্টে গ্রাহক বাতিল নোট ৫০০০ টাকাই জমা করুন অথবা ৫০ ,০০০ টাকা , আমানতকারীকে কোনও প্রশ্ন করা হবে না৷ শুধু তাই নয় , কেওয়াইসি বিধি মানা হয়েছে এমন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাতিল নোটে ৫০০০ টাকার বেশি একাধিকবার জমা করা যাবে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে৷ ওই সময়সীমার পর অবশ্য ব্যাঙ্কে আর কেউ বাতিল নোট জমা করতে পারবেন না৷ যেখানে গ্রাহকের অসম্পূর্ণ কেওয়াইসি তথ্য দেওয়া রয়েছে বা সেই তথ্য দেওয়াই নেই --- এমন অ্যাকাউন্টে ৫০০০ টাকার বেশি বাতিল নোট জমা করতে গেলে অবশ্য ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে আমানতকারীকে
EiSamay.Com nks stop questioning cash depositors after fresh rbi directive
ডিগবাজি খেয়ে বাতিল নোট জমায় বাধা তুলল আরবিআই


তবে কি নিজেদের সিদ্ধান্তের অযৌক্তিকতা উপলব্ধি করতে পেরেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ? মুম্বাইয়ের মিন্ট রোডে এই সিদ্ধান্ত বদলের পিছনে অবশ্য দিল্লির নর্থব্লকের হাত দেখছেন ওয়াকিবহাল মহল৷ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বাতিল নোট জমা করা নিয়ে সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নতুন নির্দেশ জারি করার পর সেদিনই রাতে এবং পরের দিন অর্থাত্ মঙ্গলবারও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আশ্বাস দেন , যদি কেউ তাঁর হাতে থাকা সমস্ত বাতিল পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট একলন্তে ব্যাঙ্কে জমা দেন তবে তাঁকে কোনও জবাবদিহি করতে হবে না৷ কিন্ত্ত অর্থমন্ত্রীর মৌখিক বার্তায় কাজ হয়নি৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লিখিত নির্দেশ থাকায় ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা বাধ্য হয়ে বাতিল নোট জমা করতে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজারো প্রশ্নের জবাবদিহি চান৷ ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা বলেন , গ্রাহকদের প্রশ্ন না -করা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে সংশোধিত নির্দেশিকা না -আসা পর্যন্ত তাঁরা ওই কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য৷ সোমবার জারি করা নির্দেশ বুধবার সংশোধন করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ সেই সংশোধিত নির্দেশ হাতে আসার পর ব্যাঙ্কগুলিও এ দিন থেকে কেওয়াইসি তথ্য দেওয়া রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টগুলিতে গ্রাহকদের কোনও প্রশ্ন না করেই বাতিল নোট জমা করতে দিয়েছে৷

তবে , ব্যাঙ্ক খোলার বেশ খানিকক্ষণ পরে আরবিআইয়ের সংশোধিত নির্দেশ পৌঁছনোয় বেশ কয়েকটি শাখায় গ্রাহকদের অসন্তোষের মুখে পড়তে হয় ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের৷ কিন্ত্ত গ্রাহকদের এই হয়রানি পোয়াতে হল কেন ? ৮ নভেম্বর সন্ধে রাত আটটায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন দূরদর্শনে সমস্ত পুরোনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট অচল করার সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছিলেন , তখন তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি বার্তা এই বলে লেখা হয়েছিল , ‘পুরোনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট আর লেনদেনের জন্য বৈধ নয়৷ হাতে থাকা ওই টাকা নিয়ে এখন আপনি পাঁচটি জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন৷ ’ ওই পাঁচ তালিকার প্রথমটিতে ছিল , ‘১০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাঙ্ক অথবা পোস্ট অফিসে গিয়ে যত টাকাই হোক , জমা করতে পারেন৷ ’৯ নভেম্বর ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল৷ ১০ নভেম্বর ব্যাঙ্ক খোলার পর গ্রাহকদের হুড়োহুড়ি পড়ে যায়৷ বিশৃঙ্খলা ও অসন্তোষ এড়াতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন , ‘৩০ ডিসেম্বর অবধি আপনাদের হাতে সময় রয়েছে ব্যাঙ্কে বাতিল নোট জমা করার৷ অতএব , শুরুতেই সকলের একসঙ্গে ব্যাঙ্কে ভিড় করার দরকার নেই৷ ’

তার এক মাস পর গত সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার প্রথমে একটি গেজেট বিজ্ঞন্তি দিয়ে জানায় , ‘৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল নোটে ৫০০০ টাকা অবধি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে৷ তার বেশি টাকা জমা করতে হলে সেটা কী প্রক্রিয়ায় করা যাবে সেটা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানাবে৷ ’ওই দিনই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানায় , বাতিল নোটে ৫০০০ টাকার বেশি জমা করতে হলে ব্যাঙ্কের অন্তত দু’জন আধিকারিকের কাছে আমানতকারীকে জবাবদিহি দিতে হবে , কেন তিনি এতদিন ওই টাকা জমা দিতে পারেননি৷ আমানতকারীর ‘সন্তোষজনক ’ উত্তর রেকর্ড করার পরেই বাতিল নোটে তাঁর আমানতের সমপরিমাণ বৈধ নোটে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হবে৷ বাতিল নোট জমা করা নিয়ে সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই দ্বিচারিতার পরই অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে৷ আসরে নেমে অরুণ জেটলি আশ্বাস দেন , হাতে থাকা সব বাতিল নোট একলন্তে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করলে আমানতকারীকে কোনও প্রশ্ন করা হবে না৷ বুধবার নির্দেশ সংশোধন করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷

পরের খবর

Businessসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল