অ্যাপশহর

মমতার টালির বাড়িতে পা ধনকুবের মিত্তলের

ইস্পাত টাইকুন লক্ষ্মী মিত্তলের নামের আগে ধনকুবের শব্দটি না -বসালে তাঁর পরিচয় যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়৷

EiSamay.Com 3 Dec 2017, 9:04 am
এই সময়: ইস্পাত টাইকুন লক্ষ্মী মিত্তলের নামের আগে ধনকুবের শব্দটি না -বসালে তাঁর পরিচয় যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়৷ লন্ডনের অভিজাত এলাকা কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেনে যে প্রাসাদোপম অট্টালিকায় তিনি বাস করেন , সেটি বিশ্বের সবথেকে দামি বসত বাড়ি৷ যার আনুমানিক দাম ৮৫০ কোটি টাকা৷ বাড়িটির ভিতরে রয়েছে ১২টি শোয়ার ঘর , ইন্ডোর সুইমিং পুল , টার্কিস বাথ৷ রয়েছে বিশাল কার পার্কিং, যেখানে এক সঙ্গে ২০টি গাড়ি রাখা যায়৷ সেই প্রাসাদের মালিক স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ঘাড় নুইয়ে প্রবেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টালির চালের বাড়িতে৷ কালীঘাটের হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের ঘুপচি ঘরে বসে কাটিয়ে দিলেন প্রায় ৪৫ মিনিট৷ মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ভবানীপুরে গাড়ি থেকে নেমে একটি নামী মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনলেন৷ উপহার হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিলেন একটি বাঁধাই করা ছবি৷ গাড়ির ডিকি থেকে নিজেই বের করে আনেন ছবি৷ মমতাও তাঁর হাতে বিশ্ব বাংলার উপহার তুলে দিলেন৷
EiSamay.Com lakshmi mittal to join bengal global business summit
মমতার টালির বাড়িতে পা ধনকুবের মিত্তলের


খাতায়কলমে এটা নিছকই সৌজন্য সাক্ষাত্ হলেও মমতার বাড়িতে শিল্পপতি মিত্তলের আগমনে আশার আলো সঞ্চার করেছে রাজ্যের শিল্পমহলে৷ অতীতে মমতার কালীঘাটের বাড়িতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে শাহরুখ খানের মতো অনেক সেলিব্রিটির পা পড়লেও মিত্তলের মতো এত বড় মাপের শিল্পপতি কোনওদিন আসেননি৷ সেদিক থেকে এটিকে ব্যতিক্রমী ঘটনা বলা যায়৷ এর ফলে বাংলার শিল্প-ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা৷

কিছুদিন আগেই লন্ডন সফরে গিয়ে মিত্তলের বাড়িতে গিয়েছিলেন মমতা৷ সেই সাক্ষাত্কারে মিত্তলকে রাজ্যে বিনিয়োগের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি আসন্ন বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আসার জন্যও তাঁকে আমন্ত্রণ জানান৷ তার প্রত্যুত্তরে মিত্তল জানিয়েছিলেন , তিনি বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিতে কলকাতায় আসবেন৷ তার আগেই এ দিন সটান মমতার বাড়িতে পৌঁছে গেলেন বিশ্বের সবথেকে বৃহত্তম ইস্পাত নির্মাণ সংস্থার মালিক৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে , একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিত্তল কয়েক দিনের জন্য কলকাতায় এসেছেন৷ ঝটিকা সফরের ফাঁকেই তিনি এদিন সময় বের করে মমতার সঙ্গে দেখা করতে আসেন৷ এ দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন , সেই সময় একটি দুধসাদা গাড়িতে মিত্তল সেখানে প্রবেশ করেন৷ মিত্তল এবং তাঁর স্ত্রী দু’জনেই বসেছিলেন গাড়ির পিছনের আসনে৷ ভিড় সামলে অনেক কষ্টে পুলিশ মিত্তলের গাড়িকে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়৷ মিত্তলকে স্বাগত জানাতে ঘরের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন মমতা৷ তিনিই পথ দেখিয়ে দু’জনকে ভিতরে নিয়ে যান৷

ঘরের ভিতরে দু’জনকে বসতে দেওয়া হয় কাঠের চেয়ারে৷ টানা প্রায় ৪৫ মিনিট দু’জনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা হয়৷ তারই ফাঁকে মিত্তল এবং তাঁর স্ত্রীকে চায়ের প্লেট বাড়িয়ে দেন মমতা৷ তৃন্তি ভরে চায়ে চুমুক দেন মিত্তল৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের কেউ কেউ ‘লক্ষ্মীদা ’ বলেও চিত্কার করে ওঠেন৷ তা শুনে হেসে ফেলেন মিত্তল৷ তবে একটি বারের জন্যও মিত্তল দম্পতি গাড়ির কাচ নামাননি৷ পুলিশ এসকর্ট করে তাঁর গাড়িটিকে যাওয়ার পথ করে দেয়৷ এর আগে ২০০০ সালের ৬ জুলাই ৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মমতার বাড়িতে পা রেখেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী৷ মিত্তলের মতোই বাজপেয়ীও এসেছিলেন বিকেল সাড়ে পাঁচটায়৷ সেই সময় মমতা ছিলেন রেলমন্ত্রী৷ বাজপেয়ী মমতার বাড়িতে ঢুকেই মা গায়ত্রী দেবীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন৷ গায়ত্রী দেবী প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন গোলাপ ফুল এবং সিল্কের উত্তরীয়৷ গায়ত্রী দেবীর বানানো আম -দই খেয়ে তারিফ করেছিলেন বাজপেয়ী৷

পরের খবর

Businessসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল