অ্যাপশহর

কয়েক হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ, বাংলায় ₹৩,৯০০ কোটি লগ্নি করবে হিরানন্দানি গোষ্ঠী

পশ্চিমবঙ্গে ফের বড় লগ্নি আসতে চলেছে। ফের এই রাজ্যে লগ্নি করবে হিরানন্দানি গোষ্ঠী। পূর্ব মেদিনীপুরের কুকরাহাটিতে একটি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস টার্মিনাল গড়ে তুলবে তারা। এই জন্য ৩,৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে এই শিল্প সংস্থাটি।

Ei Samay 23 Feb 2021, 4:00 pm
এই সময়: রাজ্যে ফের লগ্নি করতে চলেছে হিরানন্দানি গোষ্ঠী। পূর্ব মেদিনীপুরের কুকরাহাটিতে একটি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল গড়ে তোলার জন্য তারা ৩,৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এজন্য কুকরাহাটিতে একটি জেটি তৈরি করার জন্য সোমবার কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের (কেওপিটি) চেয়ারম্যান বিনীত কুমারের সঙ্গে একটি মউ স্বাক্ষর করেছেন হিরানন্দানি গোষ্ঠীর শাখা সংস্থা বেঙ্গল কনসেশন প্রাইভেট লিমিটেডের (বিসিপিএল) সিইও দর্শন হিরানন্দানি।
EiSamay.Com investment 1
প্রতীকী ছবি


প্রসঙ্গত, গত সোমবার হুগলির উত্তরপাড়ায় হিন্দমোটরের ১০০ একর জমিতে একটি লজিস্টিকস ও ডেটা সেন্টার পার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে হিরানন্দানি গোষ্ঠীর সঙ্গে সিকে বিড়লা গোষ্ঠীর হিন্দুস্তান মোটরস্-এর একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেখানে সব মিলিয়ে লগ্নি হবে প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যে ১৩,৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে দুটি পৃথক মউ স্বাক্ষর করল হিরানন্দানি গোষ্ঠী।

কুকরাহাটির এই এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পটির ঘোষণা দু'বছর আগে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)-এর মঞ্চ থেকে করেছিলেন হিরানন্দানি গোষ্ঠীর কর্ণধার নিরঞ্জন হিরানন্দানি।

এদিনের মউয়ের ব্যাপারে কেওপিটি চেয়ারম্যান বিনীত কুমার বলেছেন, 'বিসিপিএল কুকরাহাটিতে কেওপিটি-র আওতাধীন হুগলি নদী সংলগ্ন জমিতে একটি জেটি নির্মাণ করবে। পাশাপাশি, সেখানে তাদের পাইপলাইন পাতা, স্টোরেজ ট্যাঙ্ক নির্মাণ ইত্যাদি কাজের জন্য কেওপিটি-র অনুমোদন প্রয়োজন, যা দিতে আমরা মউ স্বাক্ষর করেছি। সমুদ্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের জাহাজ পাইলটিং করে কুকরাহাটিতে বিসিপিএল-এর জেটিতে পৌঁছে দেবে কেওপিটি।' আগামী ২ মার্চ মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিট, ২০২১-এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু'দিনের এই মেগা আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসাবে এদিন মউটি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে কেওপিটি-র তরফে জানানো হয়েছে।

বিসিপিএল কুকরাহাটিতে যে এলএনজি টার্মিনাল স্টোরেজ ও রি-গ্যাসিফিকেশন প্রকল্প গড়ে তুলবে তার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৫০ লক্ষ টন। এজন্য সংস্থাটি হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৩৮ একর জমি নিয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে প্রায় ১,০০০ নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। প্রকল্পটি গড়ে তোলার জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র ইতিমধ্যেই পেয়েছে বিসিপিএল এবং তারা ২০২৪ সালের জুলাইতে উৎপাদন চালু করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। প্রকল্পটির মোট আর্থিক মূল্য প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা।

বিসিপিএল শুধুমাত্র এলএনজি স্টোরেজ ও রি-গ্যাসিফিকেশন টার্মিনালই গড়ে তুলবে না, তারা দুটি পাইপলাইনও পাতবে। প্রথমটি কুকরাহাটি থেকে বাংলাদেশের ইটিন্ডা পর্যন্ত ১২৫ কিলোমিটার এবং দ্বিতীয় পাইপলাইনটি কানাইচাট্টা থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে।

দুটি পাইপলাইনই যেহেতু কলকাতার খুব কাছ থেকে যাবে, তাই বিসিপিএলের আনা প্রাকৃতিক গ্যাস বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানির পাইপলাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলির বাসিন্দাদের রান্নাঘর এবং কল-কারখানাতেও সরবরাহ হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। ফলে, দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা পূর্ব ভারতের অবস্থান অনেকটাই মজবুত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গে ২০টি সিএনজি স্টেশন গড়ে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে বিসিপিএলের।

উল্লেখ্য, হলদিয়াতে কেওপিটি-র জমিতে আরও একটি এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প গড়ে উঠছে। ভিএলএনজি নামে একটি বেসরকারি সংস্থা বছরে ১০ লক্ষ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ওই টার্মিনাল প্রকল্পটি গড়ে তুলতে তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বলে বিনীত কুমার জানিয়েছেন।

পরের খবর