অ্যাপশহর

৫০ পয়সার গোলাপ ৫ টাকায়! চাষির হাত শূন্য করে লাভের গুড় শুধু দোকানির

Bangladesh news: প্রেম আর গোলাপ যেন একই সূত্রে বাঁধা। অথচ চাষ করতে গেলেই গোলাপের কাঁটাই যেন ফুটছে চাষীদের হাতে। যোগ্য দাম পাচ্ছেন তাঁরা। অথচ কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন দোকানিরা।

Lipi 25 Dec 2021, 11:13 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক : প্রেম আর গোলাপ যেন একই সূত্রে বাঁধা। ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপের যুগেও প্রেম নিবেদন করতে গেলে সেই গোলাপের ওপরেই ভরসা রাখেন প্রেমিক প্রেমিকরা। বিয়ের অনুষ্ঠান হোক কি কোনও উৎসব পালন, সব সময়েই বাড়তি গুরুত্ব থাকে গোলাপের।যত সুন্দর সুগন্ধি ফুলই হোক না কেন, গোলাপের চাহিদা সব সময়েই থাকে শীর্ষে। অথচ চাষ করতে গেলে সেই গোলাপের কাঁটাই যেন ফুটছে গোলাপ চাষীদের হাতে। গোলাপের যোগ্য দাম পাচ্ছেন না তাঁরা।
EiSamay.Com rOSE NEWS
প্রতীকী ছবি


ওপার বাংলাতেও এমনই ছবি ধরা পড়ল। সম্প্রতি পালিত হয়েছে ওপার বাংলার বিজয় দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস। এইসঙ্গে তো বিয়ের অনুষ্ঠান আছেই। সব ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়েছে ফুল। এসময় বিশেষ চাহিদা থাকে গোলাপের। ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় সেই প্রয়োজন মেটাতে বড় ভূমিকা নেয় সাভারের গ্রামের ফুল।

পোষ্যের জীবনের বিশেষ দিন! ৩০০ জনকে পাত পেড়ে খাওয়ালেন দিনমজুর দম্পতি

সাভার উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে, সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতেই গোলাপ চাষ হয়।

এবার বিজয় দিবসকে ঘিরেও সাভারের ফুলের বাজার জমে উঠেছিল। ১০০টি গোলাপের একটি বান্ডিল বিক্রি হয়েছে ১০০০-১৫০০ টাকায়। কিন্তু বাজারে এই দাম থাকলেও হাসি নেই গোলাপ চাষিদের মুখে। কারণ বাগান বা ক্ষেত থেকে সেই গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৫০ পয়সা দরে। দোকানে সেটাই ৫ টাকা। আর গোলাপের সাইজ বড় হলেই দাম ১০ টাকা।

সাভারের বিরুলিয়া গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘ করোনার কারণে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেবেছিলাম যে বিজয় দিবসের সময় ফুল বিক্রি করে সেই ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নেব। কিন্তু হল না। আমাদের কাছে কম দামে ফুল কিনে সেটাই বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। লাভ করেছেন দোকানিরা। আর আমাদের কপালে জুটেছে শুধুই হতাশা।’

‘মরলেও একসঙ্গে, বাঁচলেও একসঙ্গে’ ভেবেই স্ত্রীকে নিয়ে লঞ্চ থেকে ঝাঁপ আল আমিনের

একই কথা আরেক চাষি মনির হোসেনের। তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের খুব দুর্ভাগ্য। করোনার পরে আমরা যারা গোলাপ চাষ করি তারা কেউ কোনো সহযোগিতা পাইনি। অনেকেই স্ত্রীর গহনা , জমি-জমা বিক্রি করে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে জমিতে ফুল চাষ করেছেন। আমি ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছি। তবে বর্তমানে ফুল বিক্রি হয়ই না বলতে গেলে। যে টাকার ফুল বিক্রি করছি, তাতে ফুল কাটার টাকাও উঠে আসছে না। ৬০ হাজার টাকা খরচ করে পেয়েছি মাত্র ৪ হাজার টাকা।’ তিনি নিজেও লাভের আশায় স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে ফুল চাষ করেছিলেন।

তবে, এত ক্ষতির পরেও আশা ছাড়ছেন না অনেকেই। ফেব্রুয়ারি মাসেই ভ্যালেনটাইন ডে এবং ভাষা দিবস। সেই সময়ে ভালো গোলাপ বিক্রি হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। সেই সময়ে তারা ৮-১০ টাকায় গোলাপ বিক্রি করে কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন বলে আশায় আছেন।

এই সঙ্গেই অন্য সমস্যাও আছে। তরতাজা ফুলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় অনেকেই এখন ‘আর্টিফিসিয়াল ফুল’ দিয়ে অনুষ্ঠানের কাজ সারছেন । এই ফুল ব্যবহার করার পরে ফেলে দিতে হচ্ছে না, আবার ব্যবহার করাও যাচ্ছে।

পরের খবর