অ্যাপশহর

করোনা আবহে শক্তি আরাধনা, বোধনের গুরুত্ব কী জেনে নিন...

অন্যদিকে সূর্যের দক্ষিণায়ন দেবতাদের রাত। দক্ষিণায়ন অর্থ বিষুবরেখা থেকে সূর্যের ক্রমশ দক্ষিণে গমন। সূর্যের এই গমনকালের ব্যপ্তিও ছয় মাস। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে শুরু হয় দুর্গাপুজো, তাই একে দুর্গাষষ্ঠীও বলা হয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সবের শুভারম্ভ। কালিকাপুরাণ অনুসারে, রাবণবধে রামচন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য রাত্রিকালে দেবীর বোধন করেছিলেন ব্রহ্মা।

EiSamay.Com 16 Oct 2020, 10:05 pm
এই সময় অ্যাস্ট্রো ডেস্ক: শারদোৎসবে বাদ সাধল করোনাভাইরাস। করোনাকালে নির্বিঘ্নে শারোদোৎসবের আয়োজন এবার প্রশাসনের কাছেও মস্ত চ্যালেঞ্জ। সংক্রমণ এড়াতে সবরকম ব্যবস্থা নিলেও রাজ্যবাসীকেও সতর্ক থাকতে হবে বলে আবারও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
EiSamay.Com pujo
শক্তি আরাধনা


শাস্ত্রমতে মহাষষ্ঠীর দিনেই কৈলাস থেকে বাপের বাড়িতে আসেন মা। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে শুরু হয় দুর্গাপুজো, তাই একে দুর্গাষষ্ঠীও বলা হয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সবের শুভারম্ভ।

প্রাচীন শাস্ত্রমতে দুর্গাপুজো বসন্তকালে বিধেয়। কিন্তু রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করার পূর্বে ত্রেতাযুগে রামচন্দ্র দুর্গাপূজো করেছিলেন আশ্বিন মাসে, তখন ছিল সূর্যের দক্ষিণায়ণ। দেবতারা সব ঘুমিয়ে। তখন অকালবোধনের মাধ্যমে দেবতাদের জাগিয়ে পূজা নিবেদন করেন রামচন্দ্র। সেই থেকেই ষষ্ঠীর দিনে বোধনের রীতি চলে আসছে... প্রথমে কল্পারম্ভ, প্রক্রিয়াটি শুরু হয় সকাল বেলাতেই। সকল শাস্ত্রীয় রীতিনীতি মেনে পুজো যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়, সেজন্য এই আচার। ঘট ও জলপূর্ণ তাম্রপাত্র মণ্ডপের এককোনে স্থাপন করে দুর্গা ও চণ্ডীর পুজো করা হয়। এরপর দেবীর বোধন অর্থাৎ দেবীকে জাগরিত করা হয়। তারপরেই হয় অধিবাস এবং আমন্ত্রণ। বোধনের পর বিল্ব শাখায় দেবীকে আবাহন করা হয়। রীতি হল অশুভ শক্তিকে দূর করার জন্য ঘটের চারদিকে তীরকাঠিতে লাল সুতো বেষ্টন করা হয়, এরপর আমন্ত্রণ প্রক্রিয়া। এভাবেই মহাষষ্ঠীর আচার শেষ হয়।

মহাশক্তির মহাপূজার সূচনা হয় বোধনের মধ্যে দিয়ে৷ দেবীপক্ষের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে দেবীকে উদবোধিত করা হয়৷ কৃত্তিবাসী রামায়ণ-এর দুর্গাপূজার বিবরণের চাইতে পৌরাণিক দুর্গাপূজার বিবরণ কিছুটা আলাদা। কালিকাপুরাণ অনুসারে, রাবণবধে রামচন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য রাত্রিকালে দেবীর বোধন করেছিলেন ব্রহ্মা।

আরও পড়ুন: মোবাইল হাতেই 'লাইভ' পুজো, বাড়ি বসে অঞ্জলি! করোনা আবহে কেমন করে করবেন দেবী বন্দনা?

পুরাণ মতে, সূর্যের উত্তরায়ন হচ্ছে দেবতাদের দিন। উত্তরায়ন অর্থ বিষুবরেখা থেকে সূর্যের ক্রমশ উত্তরে গমন। সূর্যের এই গমনে সময় লাগে ছয়মাস। এই ছয় মাস দেবতাদের একদিনের সমান। দিনের বেলায় জাগ্রত থাকেন দেবতারা। তাই দিনেই দেবতাদের পূজা করা শাস্ত্রের বিধান।

অন্যদিকে সূর্যের দক্ষিণায়ন দেবতাদের রাত। দক্ষিণায়ন অর্থ বিষুবরেখা থেকে সূর্যের ক্রমশ দক্ষিণে গমন। সূর্যের এই গমনকালের ব্যপ্তিও ছয় মাস। দক্ষিণায়নের ছয় মাস দেবতাদের একরাতের সমান। স্বাভাবিকভাবেই এই সময় দেবতারা ঘুমান। সেকারণেই রাতে পূজার বিধান নেই শাস্ত্রে।

শরৎকাল দক্ষিণায়ণের সময়। দেবতাদের রাত্রিকাল। তাই শরৎকাল পূজার্চনার উপযুক্ত কাল নয় - 'অকাল'। অকালে দেবতার পূজা করতে হলে তাঁকে জাগরিত করতে হয়। জাগরনের এই প্রক্রিয়াটিই হল 'বোধন'।

এই অকালে শ্রীরামচন্দ্র অশুভ শক্তির প্রতীক রাবণ রাজাকে পরাজিত করতে শক্তি সঞ্চারে মায়ের পূজা করেছিলেন। তাই এই পূজাকে অকালবোধন আবার উক্ত সময়টি শরৎকাল বিধায় শারদীয়া পূজা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ঘুমন্ত দেবীকে জাগ্রত করার জন্য স্বয়ং ব্রহ্মাকে দেবীস্তুতি করতে হয়েছিল৷ হে দেবী রাবণবধের জন্য রামকে অনুগ্রহ করুন ও জাগ্রতা হোন৷ - ব্রহ্মার এই আবেদনে দেবী বিল্ববৃক্ষের এক বিল্বপত্রে কুমারী কন্যার রূপে আবির্ভূতা হন৷ দেবীর সেই আবির্ভাবকে স্মরণ করে আজও দেবীপূজার প্রাক্কালে তাঁকে জাগ্রত করা হয়৷ বিল্ববৃক্ষে তাঁকে উদবোধিত করার যে অনুষ্ঠান তাই বোধন৷ ষষ্ঠীতিথির সন্ধ্যায় প্রথমে দেবীর বোধন, পরে অধিবাস ও আমন্ত্রণ করা হয়৷ শৈলশিখর কৈলাস থেকে তিনি আসছেন৷ তাই তাঁকে যথাযথ আমন্ত্রণ করে এই দিনের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়৷

এই সময় ডিজিটালের লাইফস্টাইল সংক্রান্ত সব আপডেট এখন টেলিগ্রামে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন এখানে।

পরের খবর

Astrologyসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল
ট্রেন্ডিং