অ্যাপশহর

ভূত চতুর্দশীতে কেন যমের নামের প্রদীপ জ্বালানো হয়? রহস্য লুকিয়ে পুরাণে

কালীপুজোর আগের রাতে পালিত হয় ভূত চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশী। এই দিনে ঘরের বিভিন্ন কোণে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা রয়েছে। এই বছর ৩ নভেম্বর পড়েছে ভূত চতুর্দশী। জেনে নিন এই প্রথার পেছনে থাকা পৌরাণিক কাহিনি।

EiSamay.Com 2 Nov 2021, 4:28 pm
এই সময় অ্যাস্ট্রো ডেস্ক: ধনতেরসের পরের দিন পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। এটি আবার নরক চতুর্দশী বা রুপ চতুর্দশী নামেও পরিচিত। ধর্মীয় ধারণা অনুযায়ী ভূত চতুর্দশীর দিন যমের নামে দীপদানের প্রথা প্রচলিত রয়েছে। এদিন যমের নামে আটার চার মুখী প্রদীপ বানিয়ে বাড়ির প্রবেশ দ্বারে রাখা হয়। রাতে প্রদীপে তেল দিয়ে চারটি বাতি জ্বালানো হয়। এর পর নিয়ম মেনে পুজো করার পর প্রদীপ জ্বালিয়ে দক্ষিণ দিকে মুখ করে মৃত্যুনাং দণ্ডপাশাভ্যাং কালেন শ্যাময়া সহ। ত্রয়োদশ্যাং দীপদানাৎ সূর্যজঃ প্রীয়ন্তা মম্ মন্ত্র জপ করে যমের পুজো করা হয়।
EiSamay.Com pradeep
ভূত চতুর্দশীতে প্রদীপ জ্বালানো


নরক চতুর্দশীতে তিলের তেলে প্রদীপ জ্বালানো হয়। বাড়ির প্রবেশ দ্বারে সামান্য চাল বা ধান রেখে তার ওপর এই প্রদীপ রেখে দিতে হয়। তবে কেন এই প্রদীপ জ্বালানো হয়, নরক চতুর্দশীর সঙ্গে যমের কী সম্পর্ক, কেন যমের নামে প্রদীপ জ্বালানো হয়, তা জানার জন্য একটি পৌরাণিক কাহিনি সম্পর্কে জানা দরকার—

একদা যমরাজ নিজের দূতদের জিগ্যেস করেন যে, কোনও জীবের প্রাণ হরণের সময় তাঁদের কারও ওপর কী দয়া আসে না? প্রথমে সঙ্কোচ করলেও যমদূতরা পড়ে জানায় যে, না, তাঁদের কোনও দয়া হয় না। কিন্তু দ্বিতীয় বার জিগ্যেস করায় যমদূতরা একটি ঘটনা সম্পর্কে যমরাজকে জানান।

ধনতেরস থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো, জেনে নিন নভেম্বর মাসে উত্‍সবের দিনক্ষণ
তাঁরা একটি ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে জানান যে, হেম নামক রাজার স্ত্রী এক সুন্দর পুত্র জন্ম দেন। পুত্র সন্তানের জন্মের পর জ্যোতিষীরা নক্ষত্র গণনা করে জানান যে, বিবাহের চার দিন পর সেই বালকের মৃত্যু হবে।

এই ভবিষ্যদ্বাণী শোনার পর রাজা সেই বালককে যমুনা তীরের একটি গুফায় ব্রহ্মচারী হিসেবে লালন পালন করতে শুরু করেন। একদিন সেই যমুনা তীরে মহারাজা হংসের পুত্রী ঘোরাফেরা করছিলেন। রাজকুমার সেই রাজকুমারীকে দেখে মোহিত হয়ে যায় এবং তাঁরা গন্ধর্ব বিবাহ করে নেন।

দীপাবলিতে রাশি মেনে উপহার দিন বন্ধু-আত্মীয়দের, হবে ভাগ্যবৃদ্ধি!
জ্যোতিষ গণনা অনুযায়ী বিয়ের ৪ দিন পর রাজকুমারের মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যু দেখে কাঁদতে শুরু করে রাজকুমারী। যমদূতরা যমরাজকে বলেন, ‘মহারাজ সেই নববিবাহিতার বিলাপ শুনে আমাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। ওই রাজকুমারের প্রাণ হরণের সময় আমাদের চোখ থেকেও জল গড়িয়ে পড়ে। আমাদের কান্না থামছিল না।’ তখন এক যমদূত যমরাজকে জিগ্যেস করেন যে, ‘অকাল মৃত্যু থেকে বাঁচার কী কোনও উপায় নেই?’ এর পর তাঁদের একটি উপায় জানান যমরাজ। বলেন, অকাল মৃত্যু থেকে মুক্তি পাওযার জন্য নরক চতুর্দশীর দিনে নিয়ম মেনে পুজো ও দীপদান করা উচিত। নরক চতুর্দশীর দীপদান করলে অকাল মৃত্যুর ভয় থাকে না। এ কারণে নরক চতুর্দশীর দিনে যমের নামে দীপদানের প্রথা প্রচলিত আছে।

পরের খবর

Astrologyসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল
ট্রেন্ডিং