এই সময়: কাউকে বেকায়দায় ফেলে দেওয়া খবর প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত হলে একটা সময়ে সেই সাংবাদিকের কাছে তাঁর সোর্স সম্পর্কে জানতে চাওয়া হতো। সাংবাদিকও অবলীলায় বলে দিতেন, তিনি সোর্স জানাতে আইনত বাধ্য নন। তবে সেটা প্রাক-পেগাসাস যুগের কথা। পেগাসাস যুগে সাংবাদিকদের কাছ থেকে ছলে-বলে-কৌশলে সোর্স জানারই দরকার নেই। ইজরায়েলি স্পাইওয়্যারই সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন, এমনকী হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পেতে সোর্স-এর হদিশ দিচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধ স্বর থামাতে এর চেয়ে ভালো অস্ত্র আর কী হতে পারে!
সোর্সের পরিচয় ফাঁস হওয়া মানে তো সাংবাদিকই বিপদে। নিউজ পোর্টাল 'দ্য ওয়্যার'-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজনের কথায়, 'অত্যাচার চলছে।...এটা অবিশ্বাস্য রকমের অনধিকারচর্চা।' ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, পেগাসাস দিয়ে বিশ্বের ১৮০ জন সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, সেই তালিকায় ভারতের ৪০ জন এবং তাঁদের অন্যতম বরদারাজন। তাঁর সহকর্মী পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল ২০১৮ সালে। মোদী সরকার অনলাইনে 'মিথ্যা তথ্য ছড়াতে' কী ভাবে 'পরিকল্পিত উপায়ে ফেসবুককে ব্যবহার' করছিল, তার উপর পরঞ্জয় তখন অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন।
ওই নিউজ পোর্টালেরই সাংবাদিক রোহিণী সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পুত্র জয় শাহর ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তদন্তমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন। পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে আড়ি পাতা হয়েছে তাঁর ফোনেও। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক সুশান্ত সিংয়ের ফোনে 'পেগাসাস সংক্রমণের' অস্তিত্ব মিলেছে। ২০১৮ সালের যে সময়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে দেশ জুড়ে আলোড়ন, সেই সময়ে সুশান্তর ফোনে আড়ি পাতা হয়। সুশান্ত পর পর তদন্তমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন রাফাল নিয়েই।
ভারতের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র, নিউজ চ্যানেল ও নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে আড়ি পাতার তথ্য এখন সামনে এসেছে। প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া দ্ব্যর্থহীন ভাবে এর নিন্দা করে বলেছে, 'এমন ঘটনা নজিরবিহীন।' পিসিআইয়ের টুইট- 'এই প্রথম বার দেশের গণতন্ত্রের সব ক'টি স্তম্ভের উপর চরবৃত্তি করা হলো।...সরকারকে পরিষ্কার ভাবে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে।'
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, সিএনএন, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স, আল জাজিরা, দ্য ইকনমিস্ট, ফিনানসিয়াল টাইম্স, রয়টার্স, ভয়েস অফ আমেরিকা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা এবং বহু ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিকও এই চরবৃত্তির শিকার হওয়া থেকে বাদ পড়েননি।
লন্ডনে বসবাসকারী মার্কিন অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিক ব্র্যাডলি হোপের মোবাইলে ২০১৮ সালে পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতা হয়। হোপ ও তাঁর সহকর্মী টম রাইট মালয়েশিয়ার ৪৫০ কোটি ডলার তছরুপের দুর্নীতি নিয়ে বই লিখছিলেন সেই সময়ে। সাংবাদিক জুটির অনুসন্ধানে বেরোয়, ওই টাকার একাংশ খরচ করা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উপ-প্রধানমন্ত্রী শেখ মনসুরের একটি বিলাসবহুল প্রমোদতরী কিনতে। এবং হোপ-রাইট যখন তাঁদের বইটি তৈরি করছেন, ঠিক সেই সময়ে ইজরায়েলি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা এনএসও-র খদ্দেরদের মধ্যে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকারও।
আন্তর্জাতিক সম্মান ও পুরস্কারপ্রাপ্ত অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিক, আজেরবাইজানের খাদিজা ইসমাইলোভা দেশের স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের দুর্নীতির বিরুদ্ধে টানা খবর করেছিলেন। তাঁর মোবাইল ফোনে পেগাসাস ঢোকানো হয়। তার পর খাদিজার উপর নেমে আসে চরম রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন। সাড়ে সাত বছর জেলে থাকতে হয় খাদিজাকে। তাঁর কথায়, 'আমার সোর্সদের জন্য আমি অপরাধবোধে ভুগছি। আমার ধারণা ছিল, এনক্রিপ্টেড মেসেজিংয়ের মাধ্যম নিরাপদ।'
তবে পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতার সম্ভবত সব চেয়ে ভয়ঙ্কর পরিণাম হয়েছে মেক্সিকোর সাংবাদিক সিসিলিও পিনেদা বার্তোর। তাঁর ফোনে ওই স্পাইওয়্যার ঢোকানোর এক মাসের মধ্যে বন্দুকবাজ হামলাকারীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান বার্তো।
সোর্সের পরিচয় ফাঁস হওয়া মানে তো সাংবাদিকই বিপদে। নিউজ পোর্টাল 'দ্য ওয়্যার'-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজনের কথায়, 'অত্যাচার চলছে।...এটা অবিশ্বাস্য রকমের অনধিকারচর্চা।' ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, পেগাসাস দিয়ে বিশ্বের ১৮০ জন সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, সেই তালিকায় ভারতের ৪০ জন এবং তাঁদের অন্যতম বরদারাজন। তাঁর সহকর্মী পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল ২০১৮ সালে। মোদী সরকার অনলাইনে 'মিথ্যা তথ্য ছড়াতে' কী ভাবে 'পরিকল্পিত উপায়ে ফেসবুককে ব্যবহার' করছিল, তার উপর পরঞ্জয় তখন অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন।
ওই নিউজ পোর্টালেরই সাংবাদিক রোহিণী সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পুত্র জয় শাহর ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তদন্তমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন। পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে আড়ি পাতা হয়েছে তাঁর ফোনেও। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক সুশান্ত সিংয়ের ফোনে 'পেগাসাস সংক্রমণের' অস্তিত্ব মিলেছে। ২০১৮ সালের যে সময়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে দেশ জুড়ে আলোড়ন, সেই সময়ে সুশান্তর ফোনে আড়ি পাতা হয়। সুশান্ত পর পর তদন্তমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন রাফাল নিয়েই।
ভারতের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র, নিউজ চ্যানেল ও নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে আড়ি পাতার তথ্য এখন সামনে এসেছে। প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া দ্ব্যর্থহীন ভাবে এর নিন্দা করে বলেছে, 'এমন ঘটনা নজিরবিহীন।' পিসিআইয়ের টুইট- 'এই প্রথম বার দেশের গণতন্ত্রের সব ক'টি স্তম্ভের উপর চরবৃত্তি করা হলো।...সরকারকে পরিষ্কার ভাবে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে।'
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, সিএনএন, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স, আল জাজিরা, দ্য ইকনমিস্ট, ফিনানসিয়াল টাইম্স, রয়টার্স, ভয়েস অফ আমেরিকা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা এবং বহু ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিকও এই চরবৃত্তির শিকার হওয়া থেকে বাদ পড়েননি।
লন্ডনে বসবাসকারী মার্কিন অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিক ব্র্যাডলি হোপের মোবাইলে ২০১৮ সালে পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতা হয়। হোপ ও তাঁর সহকর্মী টম রাইট মালয়েশিয়ার ৪৫০ কোটি ডলার তছরুপের দুর্নীতি নিয়ে বই লিখছিলেন সেই সময়ে। সাংবাদিক জুটির অনুসন্ধানে বেরোয়, ওই টাকার একাংশ খরচ করা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উপ-প্রধানমন্ত্রী শেখ মনসুরের একটি বিলাসবহুল প্রমোদতরী কিনতে। এবং হোপ-রাইট যখন তাঁদের বইটি তৈরি করছেন, ঠিক সেই সময়ে ইজরায়েলি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা এনএসও-র খদ্দেরদের মধ্যে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকারও।
আন্তর্জাতিক সম্মান ও পুরস্কারপ্রাপ্ত অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিক, আজেরবাইজানের খাদিজা ইসমাইলোভা দেশের স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের দুর্নীতির বিরুদ্ধে টানা খবর করেছিলেন। তাঁর মোবাইল ফোনে পেগাসাস ঢোকানো হয়। তার পর খাদিজার উপর নেমে আসে চরম রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন। সাড়ে সাত বছর জেলে থাকতে হয় খাদিজাকে। তাঁর কথায়, 'আমার সোর্সদের জন্য আমি অপরাধবোধে ভুগছি। আমার ধারণা ছিল, এনক্রিপ্টেড মেসেজিংয়ের মাধ্যম নিরাপদ।'
তবে পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতার সম্ভবত সব চেয়ে ভয়ঙ্কর পরিণাম হয়েছে মেক্সিকোর সাংবাদিক সিসিলিও পিনেদা বার্তোর। তাঁর ফোনে ওই স্পাইওয়্যার ঢোকানোর এক মাসের মধ্যে বন্দুকবাজ হামলাকারীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান বার্তো।